পঞ্চগড়ে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিলের প্রতিবাদে লাল কাপড় বেঁধে প্র
Published: 19th, January 2025 GMT
পঞ্চগড়ে আটোয়ারী উপজেলার কিসমত রেলস্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিলের প্রতিবাদে এবং বিরতি বহাল রাখার দাবিতে লাল কাপড় বেঁধে রেললাইন অবরোধ করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ছয়টার দিকে পঞ্চগড় থেকে সান্তাহারগামী ‘দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস’ ট্রেন থামিয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
জানা গেছে, আটোয়ারী ও বোদা উপজেলার মানুষের জন্য ঢাকাসহ অন্যান্য গন্তব্যে যাওয়ার সুবিধাজনক রেলস্টেশন কিসমত। এ স্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি দীর্ঘদিন ধরে বিরতি দিয়ে আসছিল। সম্প্রতি এই স্টেশনে যাত্রাবিরতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এ স্টেশনে ট্রেনটির যাত্রাবিরতি বাতিল কার্যকরের কথা রয়েছে। এতেই ক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা। লাল কাপড় বেঁধে রেললাইন অবরোধ করেন তারা।
স্থানীয় আবু হাসান বাবু (২৫) নামে এক ব্যক্তি বলেন, “এ স্টেশন হয়ে ঢাকা ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী যাওয়া আসা করে। তাই দ্রুতযান এক্সপ্রেসটির যাত্রা বিরতি প্রত্যাহার নয়, নিয়মিত যেন চালু রাখা হয় সে দাবিতে এলাকাবাসী অবরোধ করেছে। অবরোধের খবর শুনে ইউএনও ও পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেন। তাদের দাবির কথা শুনেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলবেন এমন আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।”
কিসমত রেলস্টেশন মাস্টার বজলুর রহমান জানান, এ স্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটির দুই মিনিটের যাত্রাবিরতি ছিল। এটা বাতিল করায় স্থানীয়রা সকালে যাত্রাবিরতির দাবিতে অবরোধ করে। পরে ইউএনও মহোদয়সহ পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেয়। মূলত এ ট্রেনটির টিকিট খুবই কম বিক্রি হচ্ছে এ স্টেশনে।
আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, “সকালে কিসমত রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধের তথ্য জেনে সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি। তাদের যে বক্তব্য, তা প্রতিবাদ লিপি আকারে আমাকে দিতে বলেছি। এটা পেলে ডিসি স্যারের কাছে দিব। ডিসি স্যার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবেন। আসলে তাদের দাবি ছিল এ রেলস্টেশনে যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রাবিরতি যেন প্রত্যাহার না করা হয় এবং সার্বক্ষণিক যেন স্টেশনটি খোলা রাখা হয়।”
উল্লেখ্য, স্টেশনটিতে দ্রুতযান এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ মেইল, পঞ্চগড় কমিউটার, কাঞ্চন কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলাচল করছে। দুই উপজেলার একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন হওয়ার কারণে দুই উপজেলার মানুষের কাছে আগ্রহের এটি।
ঢাকা/নাঈম/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র র লওয় ক সমত
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।
এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।
মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।
পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।
তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।
পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’
জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।