এমবাপের জোড়া গোলে টেবিলের চূড়ায় রিয়াল
Published: 20th, January 2025 GMT
কে বলবে এটা সে রিয়াল মাদ্রিদ যারা কিনা দিন কয়েক আগে চরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সালোনার কাছে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল সুপার কোপার ফাইনালে? সপ্তাহ ঘুরতেই লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে মাদ্রিদের অভিজাতরা। রোববার (১৯ জানুয়ারি, ২০২৫) লা লিগার ম্যাচে লাস পালমাসকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। জোড়া গোল করেছেন ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে।
এই সপ্তাহে স্প্যানিশ লিগ জয়ের রেসে পয়েন্ট হারিয়েছিল বার্সালোনা এবং আতলেতিকো মাদ্রিদ। সেই সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল। এই জয়ে ২০ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠল রিয়াল। সমান ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর তৃতীয় স্থানে থাকা বার্সালোনার সংগ্রহ ৩৯ পয়েন্ট।
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লিখা, ‘মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’ কবিতাটা রিয়াল ফুটবলাররা শুনার কথা না। তবে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রোববার রাতে তারা তেমন কিছুই করে দেখিয়েছে! ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে সেটা বুঝা যাবে না।
আরো পড়ুন:
ইয়ামালই এই মুহূর্তে সেরা তবে মেসির পরে
আবার লা লিগায় ফিরলেন হামেস রদ্রিগেজ
এদিন লস পালমাস টিভিতে ম্যাচ ‘সম্প্রচার যুগের’ সবচেয়ে দ্রুততম গোলটি পায়। খেলা শুরুর ২৭ সেকেন্ডের মাঝে পর্তুগিজ তরুণ স্ট্রাইকার ফাবিও সিলভা অতিথী দলকে এগিয়ে নেন। মজার বিষয় হচ্ছে খেলা শুরু পর এই গোলটা হওয়ার আগ পর্যন্ত একবারের জন্যও বলে স্পর্ষ করতে পারেনি রিয়ালের ফুটবলাররা!
তবে এটুকুই অর্জন ছিল পালমাসের। বাকি গল্পটা রিয়াল লিখেছে আপন মহিমায়। পেনাল্টি থেকে রিয়ালকে ম্যাচের ১৮ মিনিটে সমতায় ফেরান এমবাপে। এরপর ম্যাচের ৩৩ মিনিটে রিয়ালকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ব্রাহিম ডিয়াজ। ঠিক ৩ মিনিট পরই রদ্রিগোর ক্রস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এমবাপে। এতে রিয়াল এগিয়ে যায় ৩-১ ব্যবধানে। বিরতির আগে আরেকবার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান এই ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী তারকা। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি। হ্যাটট্রিকও পাওয়া হয়নি এমবাপের।
ম্যাচের ৫৭ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে রিয়ালের শেষ গোলটি করেন রদ্রিগো। এতে ম্যাচের ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১। খেলার ৬৪ মিনিটে লুকাস ভাসকেসকে বাজে ট্যাকল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন পালমাসের বদলি খেলোয়াড় বেনিতো রামিরেজ। সফরকারীরা ম্যাচের বাকি সময় ১০ জন নিয়ে খেললেও আর গোল করতে পারেনি রিয়াল।
তবে রিয়ালের আরও দুইবার বল জালে জড়ালেও অফ সাইডে সেটা বাতিল হয়ে যায়। লা লিগার ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে এক ম্যাচে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার রিয়ালের তিনটি গোল ভিএআরে বাতিল হলো। এর আগে ২০২২ সালে এলচের বিপক্ষে ম্যাচেও ভিএআরে রিয়ালের তিনটি গোল বাতিল হয়।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প য ন শ ফ টবল ক ল য় ন এমব প প ব যবধ ন এমব প
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।