মহাকাশসংক্রান্ত নানা ধরনের গবেষণা করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস)। এই স্টেশনে নিয়মিত বিরতিতে মহাকাশচারীরা সফর করে বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা পরিচালনা করেন। মহাকাশে ভাসমান এই স্টেশনে জিনিয়া, সূর্যমুখী ও গমও চাষ করছেন নভোচারীরা। পৃথিবী থেকে পাঠানো খাবারের ওপর নির্ভরতা কমাতে মহাকাশে সবজি চাষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সঠিক ও কার্যকরভাবে সবজি ও ফসল চাষ ভবিষ্যৎ মহাকাশ অনুসন্ধানে সহায়তা করতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ওজনহীন পরিবেশে অনেক গাছ বেশ ভালোভাবে বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে মহাকাশচারীরা ভ্যাকুয়াম-প্যাকড ও ফ্রিজে-শুকনা খাবারের ওপর নির্ভর করেন। এসব খাবার সতেজ থাকে না। ২০১৬ সালে নাসার নভোচারী স্কট কেলি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে একটি প্রস্ফুটিত জিনিয়ার একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেই ফুলকে মহাকাশে জন্মানো প্রথম ফুল বলে অভিহিত করা হয়। পৃথিবীর বাইরে জটিল গাছপালা জন্মানোর ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বেশ আলোচিত হয় সেই পরীক্ষা। সেই জিনিয়া চারায় ছত্রাক সংক্রমণের কারণে সংক্রমিত হয়। নাসার বিজ্ঞানীরা সেই সময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে গাছটি পুনরুদ্ধার করেন।

আরও পড়ুনমহাকাশ স্টেশনে নভোচারীরা থাকেন কীভাবে১৬ আগস্ট ২০২৪

দীর্ঘমেয়াদি মিশনের জন্য মহাকাশে খাদ্য উৎপাদনের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। নাসার ভেজি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথমে লেটুস নিয়ে গবেষণা করা হয়। পরে জিনিয়া ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ও ফসলকে যুক্ত করা হয়। বায়ু ও পানির পুনর্ব্যবহার করে এসব সবজি ও ফসল মঙ্গলগ্রহ পর্যন্ত পাঠানো যেতে পারে। আর তাই নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গল গ্রহে অভিযান ও গভীর মহাকাশ ভ্রমণে নভোচারীদের জন্য মহাকাশে উদ্ভিদ জন্মানোর বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।

আরও পড়ুনমহাকাশ থেকে ফিরলে নভোচারীদের শরীরে যেসব প্রভাব পড়ে১৭ মার্চ ২০২৫

২০১২ সালে মহাকাশচারী ডন পেটিটের প্রথম সূর্যমুখী চাষ করেন। ১৯৯০ সালে রাশিয়ার মহাকাশচারীরা মীর মহাকাশ স্টেশনে প্রথমবারের মতো গম চাষ করেন। ১৯৮২ সালে স্যালিউট ৭ অভিযানে সোভিয়েত দল সফলভাবে অ্যারাবিডোপসিস নামের একটি ছোট ফুলের উদ্ভিদ চাষ করেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে মহাকাশে প্রস্ফুটিত ও বীজ উৎপাদনকারী প্রথম উদ্ভিদ হিসেবে স্বীকৃতি পায় সেই অভিযান।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ষ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’

মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ