মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য থামাবে কে
Published: 1st, August 2025 GMT
মাদারীপুর জেলা থেকে মানব পাচারের ঘটনা থামছেই না। সাম্প্রতিক ঘটনায় দুবাই হয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করে ১৪ তরুণ পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ। স্বজনদের অভিযোগ, দালালের প্রলোভনে পড়ে মুক্তিপণ দেওয়ার পরও তাঁদের কোনো খোঁজ মিলছে না। এই অনিশ্চয়তা পরিবারগুলোকে এক চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এখন প্রশ্ন, এসব তরুণের পরিণতি কি আমরা জানতে পারব? মানব পাচারকারীদের রুখবে কে?
ইউরোপে গেলে সচ্ছলতা আসবে—এমন ভ্রান্ত ধারণায় প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে অসংখ্য তরুণ অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এই অবৈধ যাত্রার পরিণতি প্রায়ই হয় মর্মান্তিক। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যানুসারে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত মাদারীপুর জেলার ৪৫ জন তরুণ লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে অন্তত ৩৫০ জন তরুণ নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরতে পেরেছেন, কিন্তু তিন শতাধিক এখনো নিখোঁজ। সর্বশেষ নিখোঁজ ১৪ জন তরুণ গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে দেশ ছাড়েন। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে তাঁদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সদস্যরা এই তরুণদের ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। এরপর লিবিয়ায় তাঁদের বন্দী করে আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করেন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জমিজমা বিক্রি করে, এমনকি চড়া সুদে ঋণ নিয়ে দালালের হাতে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে দিয়েছে। এরপরও সন্তানদের খোঁজ পায়নি তারা। মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরাও ধরাছোঁয়ার বাইরে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান জানান, রাজৈরে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়া, নিখোঁজ বা মৃত্যু নতুন কিছু নয়। পুলিশ দালালদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে। কিন্তু এই অবৈধ যাত্রা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এখনো থানার ৪০০ থেকে ৫০০ তরুণ ও যুবক লিবিয়ায় বন্দী। এই সমস্যা নির্মূল করতে না পারলে আরও অনেক তরুণ এমন ভয়াবহ পরিণতির শিকার হবেন।
মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ইতালি যাওয়ার এমন ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এসব জেলা থেকে মানব পাচার বন্ধে আলাদাভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিত। দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা তো নিতেই হবে, সেই সঙ্গে তরুণদের বেকারত্ব নিরসনে ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। অবৈধ পথে কেউ যাতে বিদেশ গমন না করেন, সে ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। মানব পাচারের কারণে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তরুণদের সম্ভাবনাময় জীবন করুণ পরিণতি বরণ করছে। যেভাবেই হোক মানব পাচার রোধ করতেই হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম নব প চ র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।
সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী