মাদক–অস্ত্র ঠেকাতে কক্সবাজার রেলস্টেশনে ডগ স্কোয়াড
Published: 1st, August 2025 GMT
উদ্বোধনের এক বছর আট মাস পরও কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে যাত্রীসেবার জন্য নির্ধারিত অন্তত এক ডজন সুবিধা চালু হয়নি। এতে যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের ঝুঁকি। যাত্রী ও লাগেজ তল্লাশির জন্য এখন ভরসা করা হচ্ছে র্যাবের ডগ স্কোয়াডের ওপর।
কক্সবাজার শহরতলির চান্দেরপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ১০১ কিলোমিটার দীর্ঘ দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের সঙ্গে এই রেলস্টেশনও উদ্বোধন করা হয়। ছয়তলাবিশিষ্ট শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২৩৬ কোটি টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, র্যাব–১৫–এর সদস্যরা দুটি প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করে যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশি করছেন। ট্রেনের বগিতেও তল্লাশি চালানো হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৮০০–এর বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
র্যাব–১৫–এর সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও সহকারী পুলিশ সুপার আ ম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলস্টেশনে এখনো লাগেজ স্ক্যান করার যন্ত্র স্থাপন হয়নি। বিভিন্ন সময়ে তথ্য আসে, কক্সবাজার থেকে রেলপথে ইয়াবা ও অস্ত্র পাচার হচ্ছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ডগ স্কোয়াড নিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি অভিযানে মাদক বা অস্ত্র উদ্ধার না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের খবর পেয়ে পাচারকারীরা আগেভাগে সতর্ক হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ডগ স্কোয়াডের তল্লাশি অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজার রেলস্টেশনে র্যাবের দল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে সুরের মূর্ছনায় মাতালেন নকীব-তাহসান
বাংলা সংগীতের দুই প্রজন্মের জনপ্রিয় দুই শিল্পী নকীব খান ও তাহসান খান এক মঞ্চে উঠে মুগ্ধ করলেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আয়োজন করা এই বিশেষ কনসার্টে উদ্যাপিত হয় সংগীতজগতের দুটি মাইলফলক—নকীব খানের সংগীতজীবনের সুবর্ণজয়ন্তী এবং তাহসান খানের রজতজয়ন্তী। গত শনিবার লিভারপুল ক্যাথলিক ক্লাবের (এলসিসি) থিয়েটারে জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ অনুষ্ঠান, যার শিরোনাম ছিল ‘জেনারেশনস অব মেলোডিজ’।
সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হওয়া কনসার্টে সিডনিতে বসবাসরত কয়েক শ সংগীতপ্রেমী অংশ নেন। শুরু থেকেই একের পর এক জনপ্রিয় গান পরিবেশন করে দর্শক-শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন দুই শিল্পী।
নকীব খান ‘মুখরিত জীবনের চলার বাঁকে’, ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’সহ আরও অনেক গান গেয়ে শ্রোতাদের ফিরিয়ে নেন সোনালি অতীতে। মঞ্চে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সংগীত তারকা তাহসান খান পরিবেশন করেন তাঁর আলোচিত গান ‘আলো আলো’, ‘বিন্দু তুমি’, ‘মাঝে মাঝে’সহ আরও কয়েকটি গান। তাহসানের তারুণ্যদীপ্ত পরিবেশনা শ্রোতাদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে। পুরো অডিটরিয়ামে তখন তৈরি হয় মেলোডির অনন্য মেলবন্ধন—একদিকে নকীবের নস্টালজিক সুর, অন্যদিকে তাহসানের আধুনিক আবেগময় গান।
অনুষ্ঠান শেষে দর্শকেরা জানালেন তাঁদের মুগ্ধতার কথা। প্রবাসী আবাসন নির্মাতা তালাত মাহমুদ বলেন, ‘নকীব খানের গান শুনে বড় হয়েছি। আজ তাঁকে সরাসরি মঞ্চে দেখে মনে হলো, এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা।’ কেক এন বেকের কর্ণধার মাসুম খান বলেন, ‘তাহসানের গান আমার সব সময়ের প্রিয়। আজকের কনসার্ট ছিল স্বপ্নের মতো।’ ‘আমাদের কথা’র সম্পাদক পূরবী পারমিতা বোস বলেন, ‘পরিবারের সবাই মিলে এমন একটি সুন্দর সন্ধ্যা কাটানো সত্যিই অসাধারণ। নকীব খান ও তাহসান—দুজনই তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন।’
এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইকনিক ট্রেড অস্ট্রেলিয়া। সহযোগী হিসেবে ছিল ক্রেজি টিকেটস ও ধূমকেতু ব্যান্ড।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে আইকনিক ট্রেড অস্ট্রেলিয়ার কর্ণধার মোশারফ রেহান বলেন, ‘সিডনিবাসীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা ছাড়া এমন একটি সফল আয়োজন সম্ভব হতো না। নকীব ও তাহসানের মতো শিল্পীদের এক মঞ্চে পাওয়া আমাদের জন্যও ছিল বড় প্রাপ্তি।’
সব মিলিয়ে সিডনিতে অনুষ্ঠিত এই কনসার্ট হয়ে উঠেছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে স্মরণীয় এক সংগীতযাত্রা। যেখানে মিশেছে দুই প্রজন্মের সংগীতধারা, নস্টালজিয়া আর আধুনিকতার অনবদ্য সুর।