ওভালে চলমান টেস্টে ফিল্ডিং করতে গিয়েই বড় এক ধাক্কা খেলেন ইংল্যান্ড দল। পঞ্চম ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনেই কাঁধে আঘাত পান অভিজ্ঞ পেসার ক্রিস ওকস। সেই চোটে আর মাঠেই ফেরা হলো না তার। এখন পুরো ভারত সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি।

ম্যাচের ৫৭তম ওভারে করুণ নায়ারের একটি শট ঠেকাতে গিয়ে মিড অফ থেকে দৌড়ে সীমানার ধারে ডাইভ দেন ওকস। বাউন্ডারি বাঁচালেও রক্ষা পাননি তিনি নিজে। ডাইভ দেওয়ার সময় বাঁ কাঁধে আঘাত লাগে। মাঠেই ফিজিওর প্রাথমিক সহায়তার পর বাঁ হাত সোয়েটারে জড়িয়ে মাঠ ছাড়েন। এরপরই করানো হয় স্ক্যান। স্ক্যান রিপোর্ট এখনও প্রকাশ পায়নি, তবে বিবিসি জানিয়েছে, তিনি পুরো ওভাল টেস্ট এবং সিরিজের বাকি অংশে থাকছেন না।

ওকসের এই ছিটকে যাওয়া আগেই আঁচ করেছিলেন পেসার গাস অ্যাটকিনস। ম্যাচের আগে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওর অবস্থা দেখে খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না। সে যদি আবার মাঠে নামে, তাহলে সেটা অবাক করার মতোই হবে।’’

আরো পড়ুন:

ওভালের প্রথম দিনে টালমাটাল ভারত

ওভালে টস হেরে ব্যাট করছে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন

এর আগে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে কাঁধের চোটে ছিটকে যান ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসও। তার জায়গায় পঞ্চম টেস্টে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওলি পোপ। এবার সেই ইনজুরি তালিকায় যুক্ত হলো ওকসের নামও। তবুও মাঠের পারফরম্যান্সে আপাতত এগিয়ে রয়েছে ইংল্যান্ড। ওভালে প্রথম দিনে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ২০৪ রান। তবে বৃষ্টির কারণে খেলা অনেকটা সময় বন্ধ থাকে।

চলতি সিরিজে ১১টি উইকেট শিকার করে ওকস ছিলেন ইংল্যান্ড বোলিং ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার না থাকা নিঃসন্দেহে দলের জন্য বড় ধাক্কা।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর

সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।

রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।

সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।

তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’

এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ