ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একটি সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। 
গতকাল সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধামরাইয়ের ডাউটিয়া এলাকার প্রতীক সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে বসায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, কারখানাটিতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দীর্ঘদিন ধরে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা বেতন দিয়ে আসছে। হাজিরা বোনাসও দেয় না। কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতন করা হয়।
শ্রমিকরা তাদের ন্যূনতম বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা, হাজিরা বোনাস, কারখানার এজিএম আকরাম হোসেনসহ তিন কর্মকর্তার পদত্যাগ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ ৯ দফা দাবিতে সোমবার দুপুর ২টার দিকে কারখানা-সংলগ্ন ডাউটিয়া এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় সড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
শ্রমিক বিলকিস আক্তার বলেন, ‘আমাগো ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা বেতন দেয়। এই টাকা দিয়া ঘর ভাড়া, খাবার, বাচ্চার লেখাপড়া কোনো কিছুই ঠিকমতো করতে পারি না। কষ্ট কইরা চলতাছি। আমাদের বেতন বাড়াইতে হবে।’
বেতন বাড়াতে শ্রমিকরা একাধিকবার কারখানার মহাব্যবস্থাপককে অনুরোধ করলেও কাজ না হওয়ায় রাস্তায় নেমেছেন জানিয়ে শ্রমিক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য সবার জন্যই বাড়ছে। তাহলে ওদের বেতন বাড়ছে, আমাদের বাড়াবে না কেন? বেতন সবার জন্য সমান হতে হবে।’ 
সেনাবাহিনী ও পুলিশ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে বসায়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা চলে যান।
প্রতীক সিরামিক কারখানার এজিএম আকরাম হোসেনের ভাষ্য, জুন মাস থেকে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি ও হাজিরা বোনাসের দাবি পূরণ করা হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।

আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।

রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।

কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।

সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।

আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ