পঞ্চম বারের মতো দিনাজপুরের হিলিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। পিঠার নানান স্বাদ নিতে এ উৎসবে ছিলো সব বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীড়। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পিঠার সাথে পরিচয় করাতেই এমন আয়োজন করেছেন আয়োজকরা।
শীত কিংবা গ্রীষ্ম মানেই বাঙ্গালির ঘরে ঘরে মুখরোচক পিঠাপুলির আয়োজন হয়ে থাকে। তবে কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের অনেক ঐতিহ্য। বাঙালির ঐতিহ্য নানান পিঠাপুলির সাথে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুলে ধরতেই পঞ্চম বারের মতো দিনাজপুরের হিলির ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলের আয়োজনে স্কুল চত্বরে ফিতা কেটে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই পিঠা উৎসবে ছিলো নানান বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীড়, স্টলগুলোতে তারা নিচ্ছেন পিঠাপুলির স্বাদ।
বিদ্যালয়ে মাঠে প্রতিটি স্টলে ধান সেমাই, ভাপা, পুলি, দুধ পুলি, পাটিসাপটা, ঝিনুক পুলি, জামাই সোহাগী, গোলাপ, কানমুচুরি, পুডিং, পায়রা, তেল পিঠা, দুধ চিতাই, মুঠা পিঠা, ক্ষীর, রসগোল্লা, কেক, গোলাপ ফুল, তেলেভাজা রসপিঠা, রোল পিঠা, লাভ পিঠা, শিম ফুল পিঠা, ডালবড়া, নারিকেল পিঠা, নকশি পিঠা, নয়নতারা পিঠাসহ প্রায় শতাধিক পিঠার পসরা। পিঠা উৎসব মাঠে ৯টি স্টলে ১০০ প্রকারের পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা। এমন আয়োজনে খুশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরা।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “পিঠা উৎসব আয়োজনের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। প্রতি বছর দুই দিনব্যাপী এই মেলা হয়ে থাকে। তবে এক সপ্তাহ ধরে আয়োজন হলে ভাল হতো।”
রাজিব, সোহাগ, লাকি আক্তারসহ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, “৫ বছর ধরে আমরা এই পিঠা উৎসব মেলায় আসি। এখানে বিভিন্ন আইটেম পিঠা পাওয়া যায়। পিঠা আমাদের খেতে খুবি ভাল লাগে। বাড়িতে হয়তো শীতকালে পিঠাপুলি তৈরি হয়, তবে মাত্র কয়েক রকম। কিন্ত এই মেলায় শতাধিক রকমের পিঠা উঠেছে। এক-এক পিঠার স্বাদ এক-এক রকমের।”
হিলির ডাঙ্গাপাড়া মডেল স্কুলের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সমাজ থেকে পিঠা হারিয়ে যাচ্ছে। পিঠা কি এবং কতো ধরনের পিঠা আছে তা অনেকে জানেই না। এখানে ৯টি স্টলে ১০০ আইটেমের পিঠা তৈরি করা হয়েছে। স্কুলের ছেলে-মেয়েরা এবং স্থানীয় অভিভাবকরা এই পিঠার সাথে পরিচিত হচ্ছে এবং এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারছেন। পঞ্চম বারের মতো এই আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি, আগামীতে আরো বড় আয়োজন করা হবে। এতে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া পিঠার ঐতিহ্য ও স্বাদ ফিরে আসবে।”
ঢাকা/মোসলেম/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শিশুসাহিত্যিক অমিত কুমার কুণ্ডুর শিশুতোষ ছড়ার বই ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বইটির প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।
শিক্ষাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দন্ত্যস রওশন, লোকসংস্কৃতিবিদ তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক সঙ্গীতা ইমাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
নদী স্মৃতিনির্ভর সংকলন গ্রন্থ ‘আমার নদী’ প্রকাশিত
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
প্রধান অতিথির আলোচনায় রফিকুর রশীদ বলেন, “১২৪টি ফলের ওপর লেখা এই বইয়ের ছড়াগুলো কেবল পাঠকের রসাস্বাদনই করাবে না, শিশু শিক্ষামূলক এই ছড়াগুলো রসোত্তীর্ণও বটে।”
তিনি দেশের প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন,“প্রকাশকদের বেশি বেশি এরকম প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা উচিত।”
বইটির ব্যতিক্রমী আকৃতির দিকে ইঙ্গিত করে দন্ত্যস রওশন বলেন, “পাঠক তৈরির প্রয়াসেই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এমন ক্ষুদ্রাকৃতির ও নতুন নতুন সাইজের বইয়ের ধারণা বাজারে আনছে। এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, “শিক্ষার দুটো দিক রয়েছ।একটি হলো ট্রাডিশনাল, যা আমরা পড়েছি, আপনারাও পড়েন। আরেকটি হলো জাঁ জ্যাক রুশোর পদ্ধতি। তিনি বলেছে, প্রকৃতির সঙ্গে শেখা।রবীন্দ্রনাথ যা বিশ্বভারতীর মাধ্যমে করিয়ে দেখিয়েছেন।অমিত কুমার কুণ্ডুর ছড়ার বইটি সে রকমই।এর মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করবে শিশুরা ও ওরা শিখবে। এরকম বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকে ধন্যবাদ। আমাদের প্রকাশকদের এ ধরনের বই বেশি বেশি করতে হবে।”
কাঁচামিঠে ফলের ছড়া বইটির পাতায় পাতায় দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফলের পরিচয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নান্দনিক অলংকরণে ছন্দে-ছড়ায় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি থেকে ছড়া আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।
অনুষ্ঠান শেষে ছিল মৌসুমী ফল দিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা।
ঢাকা/এসবি