মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কাউয়াদীঘি হাওরের অবস্থান। চলতি মৌসুমে এই হাওরে বোরো ধানের আবাদ করেছেন চাষিরা। তবে তাদের চাষ করা ধান লালচে হতে বসেছিল। মাঘ মাসে হঠাৎ একদিনের বৃষ্টিতে হওরের জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে ফসলের ক্ষতি করে এমন সব পোকামাকড়ও চলে গেছে। ফলে বোরো ফসলে সবুজের ঝিলিক লেগেছে। দিগন্ত জুড়ে সবুজ ধানের মাঠ নতুন সজীবতা নিয়ে জেগে উঠেছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য, কাউয়াদীঘি হাওরের ৪৩৯৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা পুরোটাই অর্জিত হয়েছে। আশীর্বাদের বৃষ্টিতে ধানের ফলন ভালো হবে এমনটাই আশা তাদের।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) হাওর পাড়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সদ্য লাগানো কচি ধান লালচে হয়ে যাচ্ছিল। তারা হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। দুইদিন আগের বৃষ্টি মহোষধের মতো কাজ করছে। মাঘের বৃষ্টি তাদের আবাদ করা ফসলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এক দিনের সেই বৃষ্টিতে বদলে গেছে হওরের রূপ। হাওরের দিগন্ত জোড়া মাঠে এখন সবুজের সজীবতা নিয়ে জেগে উঠেছে।

আরো পড়ুন:

হাওরের উড়ালসড়ক নির্মাণ বেগবান করার দাবিতে সর্বদলীয় মানববন্ধন

হাওর নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান আছে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

হাওর পাড়ের রক্তা গ্রামের বোরো চাষি তাজিম আলী বলেন, “এবার আমি ৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করি। আমরা অনেক কষ্ট করে ধান আবাদ করি। রোগ বালাই দেখা দিলে নিরাশ হয়ে যাই। মাঘের এই বৃষ্টি ধানের জন্য খুবই উপকারী।”

হাওরের মাঝেরবান্দ নামক স্থানে কথা হয় আমিরপুর গ্রামের বর্গাচাষি বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমি ৭ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। কচি ধানের ডগা লালচে হতে যাচ্ছিল। দুইদিন আগের বৃষ্টি মহোষধের মতো কাজ করছে। মাঘের এই বৃষ্টিতে ক্ষতিকর সব পোকামাকড় চলে গেছে।”

ইসলামপুর গ্রামের শাহবুদ্দিন মিয়া বলেন, “১০ বিঘা জমিতে ৯২, ২৯, ২৮, ইরি জাতের ধান রোপণ করেছি। বৃষ্টির কারণে এখন হাওরে সবুজের ঝিলিক লেগেছে।”

রাজনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল হক বলেন, “বৃষ্টি এ অঞ্চলের জন্য খুবই উপকারী। কৃষকরা ধানে যে সার প্রয়োগ করেন তা লুপ্ত থাকে। বৃষ্টির পরশে জমির অতিরিক্ত উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে ধানের রং বদলে গেছে। চলতি মৌসুমে হাওর কাউয়াদীঘিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩৯৮ হেক্টর। এর পুরোটাই আবাদ হয়েছে।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল সব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে নোড়ার আঘাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় মসলা বাটার নোড়া (শিল) দিয়ে আঘাত করে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। আজ বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খোয়াজনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক।

নিহত গৃহবধূর নাম কুলসুমা বেগম (৪০)। তিনি খোয়াজনগর গ্রামের আজিজুল হকের স্ত্রী। দুজনের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোরে পারিবারিক নানা বিষয়ে কুলসুমার সঙ্গে তাঁর স্বামীর ঝগড়া হয়। এ সময় স্বামী আজিজুল কুলসুমাকে কয়েক দফা মারধর করেন। একপর্যায়ে মসলা বাটার একটি নোড়া দিয়ে কুলসুমার মাথায় আঘাত করা হয়। এ সময় কুলসুমা অচেতন হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শরীফ হোসেন বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে বাগ্‌বিতণ্ডা মধ্যে স্বামীর নোড়ার আঘাতে কুলসুমার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর স্বামী পলাতক। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে। নিহত কুলসুমার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে নোড়ার আঘাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক