নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই সময় পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

তবে এই হামলা-ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নোয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক মো.

আরিফুল ইসলাম। আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, চৌমুহনীর ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা। এর সঙ্গে ছাত্রদের কোনো সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল আজ দিনের বেলায়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ রাত আটটার দিকে শতাধিক কিশোর-তরুণ ও যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা সাবেক সেনাপ্রধানের ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান এবং ড্রয়িংরুমের সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন।

প্রায় একই সময় একই ব্যক্তিরা পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন ওরফে ফয়সলের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মাথায় হেলমেট ও মাস্ক ছিল। তবে হামলা-ভাঙচুরের সময় উভয় বাড়িতে কেউ ছিলেন না।

খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ও নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাননি। এ ঘটনার পর রাতে চৌমুহনী পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে তাঁর ছোট ভাই জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল ভবনে একদল লোক সন্ধ্যার পর হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন। তাঁরা এ সময় নিচতলার সোফায় আগুন ধরিয়ে দেন এবং কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এ ছাড়া একই সময় সাবেক পৌর মেয়র ফয়সলের বাড়িতেও কিছুটা হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে হামলাকালে বাড়ি দুটিতে বাসিন্দাদের কেউ ছিলেন না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রসভ র

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিনল্যান্ড দখলের পরিকল্পনা গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: পুতিন

গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার পরিকল্পনা দেশটি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে বলে মনে করছে রাশিয়া। মস্কোর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন সংঘাতের সময় আর্কটিক অঞ্চলকে পশ্চিমারা ব্যবহার করতে পারে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডেনমার্কের স্বশাসিত দ্বীপটির দখল নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষ্য, ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার’ জন্য এই দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া প্রয়োজন ওয়াশিংটনের।

রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর মুরমানস্কে আর্কটিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘(গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে) আমেরিকার নতুন প্রশাসনের বক্তব্যকে ফাঁকা বুলি মনে করা হবে বড় ধরনের ভুল। এটা ওই ধরনের কথা নয়।’

পুতিন আরও বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে আমেরিকার গুরুত্বসহকারে নেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কথা বলছি। এসব পরিকল্পনার দীর্ঘ দিনের ঐতিহাসিক যোগসূত্রতা রয়েছে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, যদিও গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা প্রশ্নে রাশিয়া সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, মস্কোর উদ্বেগের বিষয় হলো ন্যাটো জোটের দেশগুলো সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্রে পৃথিবীর একেবারে উত্তরের অংশকে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে ক্রমশ এগোচ্ছে।

ডেনমার্কের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইছে গ্রিনল্যান্ড। স্বশাসিত দ্বীপটিতে আগে থেকেই মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অব্যাহত হুমকির মধ্যেই শুক্রবার দেশটি সফর করার কথা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের। তাঁর এই সফরের সমালোচনা করে আসছেন গ্রিনল্যান্ডের নেতারা।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে ট্রাম্প কেন এত মরিয়া২৫ মার্চ ২০২৫

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝামাঝি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া নিজেদের স্বার্থ নিয়ে তৎপর হচ্ছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেখানকার সমুদ্রপথগুলোও উন্মুক্ত হচ্ছে।

গ্রিনল্যান্ড দখল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে ডেনমার্ক। দেশটি বলেছে, গ্রিনল্যান্ডের মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।

আরও পড়ুনট্রাম্প প্রথম নন, ৭৯ বছর আগেও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র২৭ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ