বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে জোর করে যেসব গুমের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো তদন্তের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় আসতে চাইছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স (ডব্লিউজিইআইডি)। এ জন্য তারা বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধও জানিয়েছে। তবে এক যুগ পর এবারই তারা প্রথম আসার সুযোগ পেয়েছে। আজ রোববার জাতিসংঘের গুম কমিটির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে।

বাংলাদেশ সফরকালে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব, গুমসংক্রান্ত কমিশনের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গুমের শিকার পরিবারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধিদলটি। এ ছাড়া তারা নীতিবিষয়ক আলোচনায়ও অংশ নেবে।

জানা গেছে, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলটি এবার মূলত তদন্ত করতে আসেনি। তাদের মূল উদ্দেশ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং তার ভিত্তিতে সুপারিশ করা।

গত এক যুগ ধরে গুম নিয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশে সফর করতে চাইছিল ডব্লিউজিইআইডি। তারা প্রথম ২০১৩ সালের ১২ মার্চ সফরের জন্য সরকারকে চিঠি দেয়। এরপর একাধিকবার বাংলাদেশ সফরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তখনকার সরকার তাতে কোনো সাড়া দেয়নি। ডব্লিউজিইআইডি বাংলাদেশ সফরে বিগত সরকারের কাছে সর্বশেষ অনুরোধ করেছিল ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল। তবে এবার অন্তর্বর্তী সরকার তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, চার দিনের সফরে আজ ঢাকা এসেছে ডব্লিউজিইআইডির দুই সদস্যের এক কারিগরি প্রতিনিধিদল। সদস্য দুজন হলেন ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ। ১৮ জুন তাঁরা ঢাকা ছাড়বেন।

আরও পড়ুনগুম করা হতো তিনটি ধাপে ৬ ঘণ্টা আগে

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব গ্রহণ করেই জাতিসংঘের গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জোর করে গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক ‘গুম প্রতিরোধ দিবস’–এর এক দিন আগে চুক্তিটি সই করে বাংলাদেশ। এর আগে বিশ্বের মোট ৭৫টি দেশ এ দলিলে সই করেছিল। আর ৭৬তম দেশ হিসেবে এটিতে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গুমবিরোধী সনদটি গৃহীত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের এই গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল। তবে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ সনদে যুক্ত হওয়া নিয়ে বরাবরই অনাগ্রহ দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। অর্থাৎ এটি তাদের অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ভারত শুধু এটি সই করেছে তবে অনুস্বাক্ষর করেনি।

আরও পড়ুনজাতিসংঘের তালিকায় গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জন৩০ আগস্ট ২০২২

ডব্লিউজিইআইডির সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনো ৭০টি গুমের ঘটনা নিষ্পত্তিহীন অবস্থায় রয়েছে। জাতিসংঘ থেকে মোট ৮৮ জনের গুমের বিষয়ে প্রকৃত অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৫ জন আটক অবস্থায় এবং ১০ জন মুক্ত অবস্থায় রয়েছে।

আরও পড়ুনগুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ২৭ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ মব র ধ সরক র অবস থ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম

বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বহুবার তোলপাড় করা বাবর আজম এবার অস্ট্রেলিয়ার জমজমাট বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল) পা রাখতে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন গুঞ্জনের পর অবশেষে এই পাকিস্তানি তারকাকে নিজেদের স্কোয়াডে টেনে নিয়েছে সিডনি সিক্সার্স। নতুন মৌসুমে (২০২৫) তাকে দেখা যাবে গোলাপি জার্সিতে।

এটাই বাবরের প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশে খেলার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। সিডনি সিক্সার্সের সঙ্গে তার এই চুক্তিটি হয়েছে প্রি-সাইনিং অপশনের মাধ্যমে, যেখানে প্রতিটি দল আন্তর্জাতিক ড্রাফট শুরুর আগেই একজন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে পারে। ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ড্রাফটের আগেই সিক্সার্স বাবরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করে।

দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাবরের মতো বিশ্বমানের অভিজ্ঞ একজন টপ অর্ডার ব্যাটারকে পাওয়ার অর্থই হলো দলে গভীরতা ও ভারসাম্য বাড়ানো। এই তারকার সঙ্গে একই দলে থাকছেন স্টিভ স্মিথ, শন অ্যাবটের মতো অভিজ্ঞ অজি খেলোয়াড়রা, যা দলের শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।

গত মৌসুমে একমাত্র সিডনি সিক্সার্সই ছিল এমন দল, যারা কোনো বিদেশি তারকাকে আগেভাগে দলে নেয়নি। এবার তারা সেই ঘাটতি পূরণ করল বাবরের মতো একজন ক্রিকেট সেনসেশনকে নিয়ে।

তবে বাবরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে তার জায়গা এখন অনিশ্চিত, ব্যাটেও অনুজ্জ্বল সময় কাটছে। তবু, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নতুন এই চ্যালেঞ্জ বাবরের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

চুক্তির পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাবর জানান, “এটা আমার জন্য দারুণ এক সুযোগ। বিগ ব্যাশ বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি লিগ এবং সিডনি সিক্সার্স একটি সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই দলে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। আমি চাই দলের জয়ে অবদান রাখতে, ভক্তদের ভালোবাসা কুড়াতে এবং এই অভিজ্ঞতা আমার পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে।”

অস্ট্রেলিয়ায় বাবরের প্রথম আগমনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানি ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। অনেকেই বলছেন, হয়তো এটাই সেই ‘নতুন শুরু’, যেটা বাবরের ক্যারিয়ার আবার উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবার ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
  • প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কতো টাকা পেলো দ. আফ্রিকা?
  • প্রবাসীর ভবন উদ্ধোধন করতে এলেন সৌদি নাগরিক
  • প্রথমবার বিগ ব্যাশে বাবর আজম