বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’

আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ইসল ম র কল য ণ ফ লতল

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির ২৮তম দিনে জামালপুরে ১১ জন শহীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, পদযাত্রা ও পথসভা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। 

সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্য নেতারা। সেখানে থেকে হরিজন পল্লীতে যান তারা। পরে শহরের তমাল মোড় থেকে ফৌজদারি মোড় পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ নেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জামালপুরের সাত উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। ফৌজদারি মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির নেতারা। 

পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “অনেকে বলছে, আমরা নাকি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছি, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। গণঅভ্যুত্থান না হলে আপনারা নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না। কোটা আন্দোলন থেকে যদি সরকার পতনের দিকে আন্দোলন না নিয়ে যেতাম, তাহলে শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচনের জন্য আরো চার বছর অপেক্ষা করতে হতো।”

আরো পড়ুন:

বিকেলে এনসিপির পদযাত্রা-সমাবেশ, প্রস্তুত ময়মনসিংহ

ফেনীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে পদযাত্রা 

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের শক্তি এখনো রাজপথে আছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় সর্ম্পূণভাবে সংগঠিত ছিলাম না। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। ফলে, আমরা অনেক কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি অন্তর্বতী সরকারকে ও এই সময়ের রাজনীতিকে গণঅভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত করতে। আমাদের চেষ্টা এখনো জারি আছে।”

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জাতীয় সংসদকে দুই ভাগ করে ভোটের অনুপাতে উচ্চ কক্ষ নির্ধারণ করতে হবে, যাতে জবাবদিহিমূলক ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা যায়। সেই উচ্চ কক্ষের বিষয়ে ঐক্যমত না হওয়ায় জুলাই সনদ আটকে আছে। জুলাই সনদের মাধ্যমে সর্বদলীয়ভাবে ৫ আগস্ট উদযাপন করা হবে।”

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে ঐক্যমত কমিশন। সেখানে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশ নিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের পরে সামনে যে নির্বাচন আসছে, সেই নির্বাচনে মৌলিক সংস্কার শেষে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই। কারণ, বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান এই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের অন্যতম দাবি। সংস্কারের মাধ্যমে পুরনো আইনগুলো পরিবর্তন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে আর কখনোই নির্বাচন কমিশনে দলীয়করণ না হয়, পুলিশে দলীয়করণ না হয়, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করণ না হয়। আমরা সবখানে নিরপেক্ষতা চাই। ইতোমধ্যে পুলিশ কমিশনে সবাই একমত হয়েছে। এজন্য ধন্যবাদ জানাই।”

পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব লুৎফর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মশিউর রহমান শুভ, জাতীয় যুবশক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর রহমান বকুলসহ অনেকে।

এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ উপলক্ষে জামালপুরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পথসভা শেষে ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা।

ঢাকা/শোভন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভবিষ্যতে কেউ স্বৈরাচার হলে পরিণতি শেখ হাসিনার মতো হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • শেখ হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তাঁর অপরাধ কমবে না: নাহিদ ইসলাম
  • ৩ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ 
  • এনসিপির নেতারা টাঙ্গাইলে, মাওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত
  • আলোচিত ষোড়শী আইনার পারিশ্রমিক কত?
  • কিশোরগঞ্জে এনসিপির সভায় যুবলীগ নেতার বক্তব্য, একদিন পর বহিষ্কার
  • গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
  • কিশোরগঞ্জে এনসিপির পথসভায় যোগ দেওয়ায় তিন নেতাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার