পণ্যের ন্যায্য দাম না পেলে উৎপাদনে আগ্রহ হারাবেন কৃষক। কৃষিপণ্যের যৌক্তিক দাম নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। কৃষকের ব্যবসায়িক দক্ষতা তৈরি করতে হবে, যেন তারা বুঝতে পারেন কোন ফসল কতটা চাষ করতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের (খানি) খাদ্য ও পুষ্টি অধিকারবিষয়ক প্রচারাভিযান প্রকল্পের বার্ষিক পরিকল্পনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।

খানি সেক্রেটারিয়েট সংগঠন পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের (প্রান) আয়োজনে সভায় খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার উপায়, সুযোগ ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া মহামারি-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটসহ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে কীভাবে খাদ্য ও নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

খানির সহসভাপতি রেজাউল করিম সিদ্দিকী বলেন, বাজারে যখন কোনো কিছুর দাম বেড়ে যায় আমরা সবাই উদগ্রীব হই। দাম কমে যখন কৃষককে তার উৎপাদিত ফসল ফেলে দিতে হয়, তখন আমরা আর কিছু বলি না।

তিনি আরও বলেন, বাজার বলতে আমরা শুধু ঢাকাকে বুঝি। প্রান্তিক কৃষকরাও তাদের ফসল নিয়ে ঢাকামুখী হতে চায়। স্থানীয় চাহিদা অনুসারে বাজার তৈরি নিয়ে ভাবতে হবে।

এনজিও ফোরাম অন এডিবির প্রধান নির্বাহী রায়ান হাসান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি আমাদের মূল কাজের ক্ষেত্র হওয়া উচিত। রাজনৈতিক অর্থনীতির ফোকাস থেকে সরবরাহ চেইন স্পষ্টভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি।

খানির সেক্রেটারিয়েট ও প্রানের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ বলেন, আমাদের মাথায় এখনও খোরপোশের কৃষি রয়ে গেছে। নতুন পদ্ধতিগুলো গ্রহণ করতে চাচ্ছি না। অনেক জায়গায় কন্ট্রাক্ট ফার্মিং আসছে। এটা করপোরেট ফার্মিংয়ের প্রথম ধাপ।

লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইনের (লিড) প্রধান অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক খসড়া তৈরি করছি। এখানে ‘রাষ্ট্র খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারে’র পরিবর্তে, ‘রাষ্ট্র খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে বাধ্য থাকিবে’ ব্যবহার করা হবে। এতে খাদ্যে ভেজালের সঙ্গে জড়িত ও বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের প্রধান মোহন কুমার মণ্ডল, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চের প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী, বিন্দু নারী উন্নয়ন সংস্থার প্রধান জান্নাতুল মাওয়া, কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রীর সভাপতি মো.

আলাউদ্দিন শিকদার প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

রবিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ৩টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি

বগুড়ায় বৃদ্ধাকে খুন করে ডাকাতি: গ্রেপ্তার ৪, টাকা উদ্ধার

ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, “রাত ১টার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। সে সময় বিষয়টি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টার দিকে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুট করতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।” 

তিনি বলেন, “ডাকতরা নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যায়।”

প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, “জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে দুইজন। পরে ডাকাত দলের আরো ২২-২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, “আমার তিন ছেলে দেশের বাহিরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।”

ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, “আমরা ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম খুলে আমরা আটকে থাকা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়।”

রবিবার (৩ নভেম্বর) গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “সকাল ৬টার দিকে দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ