জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি নানা কারণে বিশ্বজুড়ে পোকামাকড়ের সংখ্যা কমছে। পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক ফসল ও ফুলের পরাগায়নেও সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে প্রকৃতিতে ধীরে ধীরে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ সমস্যার সমাধান করতে আকারে ছোট রোবট পোকামাকড় তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী।

এমআইটির বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আকারে ছোট রোবট পোকামাকড়ের ডানা মৌমাছির অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। ওজন এক গ্রামের কম হওয়ায় বাস্তবের পোকামাকড়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একই গতিতে পথ পাড়ি দিতে পারে রোবট পোকামাকড়। বিভিন্ন ফুল ও ফসলের দ্রুত পরাগায়নের জন্য এসব রোবট পোকামাকড় ব্যবহার করা হবে। এর ফলে ফসল বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করেই দ্রুত ফসলের ফলন বাড়ানো যাবে।

আরও পড়ুনরোবট চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবি উঠছে নিলামে, দাম কত২৭ অক্টোবর ২০২৪

পরাগবাহক হিসেবে রোবটের ব্যবহার নতুন কোনো ধারণা নয়। আগে যেসব রোবট ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো আসলে তেমন টেকসই ছিল না। আর তাই এবার যান্ত্রিক পরাগায়নের সীমাবদ্ধতার সমাধান করে নতুন নকশাও প্রণয়ন করেছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নাল অব সায়েন্স রোবোটিকসের এক গবেষণাপত্রে এসব রোবটের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পোকামাকড়ের রোবট ১০০০ সেকেন্ড বা ১৬ মিনিটের বেশি সময় উড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সোজা বা খালি স্থানের পাশাপাশি জটিল পথেও উড়তে পারে এসব রোবট। প্রতি সেকেন্ডে ৩০ সেন্টিমিটার গতিতে উড়ার ক্ষমতা থাকায় দ্রুত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে রোবট পোকামাকড়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ডায়াবেটিক রোগীদের আঙুলে সুচ ঢুকিয়ে রক্ত পরীক্ষার দিন শেষ হচ্ছে

রক্তের শর্করা মাপার জন্য ডায়াবেটিক রোগীদের অনেকেই নিয়মিত আঙুলে সুচ ঢুকিয়ে রক্ত পরীক্ষা করেন। বিষয়টি কষ্টকর হলেও ডায়াবেটিসের প্রকোপ এবং এর জটিলতা মোকাবিলায় রক্তের শর্করা পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) বিজ্ঞানীরা আলোর তরঙ্গ কাজে লাগিয়ে রক্তের শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন। সেন্সরযুক্ত যন্ত্রটির ওপর হাত রাখলেই রক্তের শর্করার মাত্রা জানা যাবে। ফলে আঙুলে সুচ ঢুকিয়ে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে না ডায়াবেটিক রোগীদের। নতুন এই যন্ত্রের তথ্য অ্যানালিটিক্যাল কেমিস্ট্রি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

নতুন যন্ত্রটির বিষয়ে এমআইটির বিজ্ঞানী জেওন উওং ক্যাং জানান, কেউই চায় না প্রতিদিন একাধিকবার নিজের আঙুলে সুচ ফোটাতে। এটি বেশ অস্বস্তির বিষয়। অনেকেই চিকিৎসকের সুপারিশের চেয়ে কম ঘন ঘন পরীক্ষা করেন, এতে গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে। নতুন আলোভিত্তিক বিকল্প সমাধান ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের গবেষণার ফসল। ২০১০ সালে এমআইটির লেজার বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের প্রকৌশলীরা প্রথম দেখান, রামান স্পেকট্রোস্কোপি ব্যবহার করে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করা যেতে পারে। এই কৌশলে বিভিন্ন অণু কীভাবে আলোকে বিচ্ছুরিত করে তার ভিত্তিতে শনাক্ত করা হয়। ত্বকের ওপর কাছাকাছি-ইনফ্রারেড ও দৃশ্যমান আলো ফেলে রামান সংকেত বিশ্লেষণ করা হয়। ফলে তরলে গ্লুকোজ শনাক্ত করা যায়।

২০২০ সালে এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে অন্য একটি কোণ থেকে আসা কাছাকাছি-ইনফ্রারেড আলোর সঙ্গে রহমান আলোকে একত্র করার মাধ্যমে  গ্লুকোজ সংকেতকে আলাদা করার পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়। এই পদ্ধতি অন্যান্য ত্বকের অণুর সংকেত ফিল্টার করতে সাহায্য করে। ফলে গ্লুকোজের তথ্য স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।

আগে সংকেত ধারণের যন্ত্রটি আকারে প্রায় প্রিন্টারের সমান ছিল। দীর্ঘ গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা এখন যন্ত্রটির আকার কমিয়ে এনেছেন, যা প্রায় জুতার বাক্সের সমান। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী আরিয়ানা ব্রেসি বলেন, আমরা এখন মাত্র তিনটি সংকেতের ব্যান্ডের ওপর মনোযোগ দিচ্ছি। যন্ত্রটির মাধ্যমে তথ্য জানতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময় প্রয়োজন।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডায়াবেটিক রোগীদের আঙুলে সুচ ঢুকিয়ে রক্ত পরীক্ষার দিন শেষ হচ্ছে