পরাগায়নে সহায়তা করবে রোবট পোকামাকড়
Published: 12th, February 2025 GMT
জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি নানা কারণে বিশ্বজুড়ে পোকামাকড়ের সংখ্যা কমছে। পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক ফসল ও ফুলের পরাগায়নেও সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে প্রকৃতিতে ধীরে ধীরে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ সমস্যার সমাধান করতে আকারে ছোট রোবট পোকামাকড় তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একদল বিজ্ঞানী।
এমআইটির বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আকারে ছোট রোবট পোকামাকড়ের ডানা মৌমাছির অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। ওজন এক গ্রামের কম হওয়ায় বাস্তবের পোকামাকড়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একই গতিতে পথ পাড়ি দিতে পারে রোবট পোকামাকড়। বিভিন্ন ফুল ও ফসলের দ্রুত পরাগায়নের জন্য এসব রোবট পোকামাকড় ব্যবহার করা হবে। এর ফলে ফসল বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করেই দ্রুত ফসলের ফলন বাড়ানো যাবে।
আরও পড়ুনরোবট চিত্রশিল্পীর আঁকা ছবি উঠছে নিলামে, দাম কত২৭ অক্টোবর ২০২৪পরাগবাহক হিসেবে রোবটের ব্যবহার নতুন কোনো ধারণা নয়। আগে যেসব রোবট ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো আসলে তেমন টেকসই ছিল না। আর তাই এবার যান্ত্রিক পরাগায়নের সীমাবদ্ধতার সমাধান করে নতুন নকশাও প্রণয়ন করেছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নাল অব সায়েন্স রোবোটিকসের এক গবেষণাপত্রে এসব রোবটের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পোকামাকড়ের রোবট ১০০০ সেকেন্ড বা ১৬ মিনিটের বেশি সময় উড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সোজা বা খালি স্থানের পাশাপাশি জটিল পথেও উড়তে পারে এসব রোবট। প্রতি সেকেন্ডে ৩০ সেন্টিমিটার গতিতে উড়ার ক্ষমতা থাকায় দ্রুত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে রোবট পোকামাকড়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।