Samakal:
2025-09-18@07:08:59 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

Published: 13th, February 2025 GMT

টমেটো চাষির মাথায় লোকসানের বোঝা

গত মৌসুমে ১২ শতাংশ জমি থেকে ৬৬ মণ টমেটোর ফলন পেয়েছিলেন নবদ্বীপ মল্লিক। তাঁর উৎপাদন খরচ হয়েছিল ৭ হাজার টাকা। গড়ে ১৫ টাকা পর্যন্ত দর পেয়েছিলেন সেবার। পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে তাঁর মুনাফা হয়েছিল ৩৩ হাজার টাকা। একই পরিমাণ জমিতে চলতি মৌসুমে তাঁর খরচ হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। টমেটো উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০ মণ। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র ৭ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন নবদ্বীপ।
এই চাষির বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামে। কৃষিতে অবদানের জন্য অতীতে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন নবদ্বীপ। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে খরচ ওঠানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা উপজেলার প্রায় সব চাষির। 
ডুমুরিয়ায় এক কেজি টমেটো বিক্রি করে মাত্র তিন টাকা পাচ্ছেন চাষিরা। অথচ একজন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয় দিনে ৮০০ টাকারও বেশি। ছয় মণ টমেটো বিক্রি করেও সেই মজুরি পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ তো আছেই। এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ক্ষেতেই টমেটো নষ্ট হচ্ছে। বাজারেও ক্রেতা নেই। ফলে টমেটোর স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। উপজেলার বেশির ভাগ কৃষকের মাথায় এখন লোকসানের বোঝা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি গ্রামে টমেটো চাষ হয়েছে। চিংড়ি ঘেরের বেড়িবাঁধের অবশিষ্ট জায়গায়ই টমেটোর চাষ হয় ব্যাপকভাবে। অল্প খরচে বেশি লাভ হতো বলে চাষিরা কয়েক মৌসুম ধরে আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন। উপজেলাজুড়ে চলতি মৌসুমে ৪০০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৩ টন টমেটো উৎপাদনের আশা করেছেন কর্মকর্তারা। 
অথচ গত মৌসুমে একই জমিতে ২১ টন টমেটো উৎপাদন হয়েছিল। এবার উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ২ টন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর বাজারে বাইরে থেকে বিপুল পরিমাণ পাইকারি ব্যবসায়ী এসেছিলেন। ফলে কৃষকরা টমেটোর দাম ভালোই পান। এ মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। বাজারে এবার পাইকার অনেক কম। যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম মিলছে না। 
খর্নিয়া গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, বাজারে এখন টমেটোর কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন টাকা। একজন শ্রমিকের জন্য দিনে মজুরি গুনতে হয় ৮০০ টাকা। 
এ ছাড়া পরিবহন খরচ তো আছেই। বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। সব মিলিয়ে তাঁর মতো চাষিদের টমোটো এখন ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।
ডুমুরিয়া পাইকারি বাজারের ‘আল্লার দান সবজি বিক্রয় কেন্দ্রে’র মালিক আব্দুল কাদের শেখ বলেন, বাজারে ফড়িয়া বা ক্রেতা নেই। টমেটো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় পচন ধরেছে। বাধ্য হয়ে তাদের এসব টমেটো ফেলে দিতে হবে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইনছাদ ইবনে-আমিন বলেন, টমেটো পাকা শুরু হওয়ার পর দুই-তিন দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। এর পর পচন শুরু হয়। 
ডুমুরিয়ায় টমেটো সংরক্ষণের মতো কোনো হিমাগার 
নেই। ফলে উৎপাদিত টমেটো নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উৎপ দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ