ইলন মাস্কের ডোজ ট্র্যাকার: কমাতে হবে ২ ট্রিলিয়ন ডলার
Published: 16th, February 2025 GMT
সরকারি খরচ কমানো নিয়ে একটা মজার গল্প বলি। ৩০ বছর সরকারি চাকরি করেছি। আর এই দীর্ঘ সময়ে অনেক কিছুই দেখেছি। আমাদের অফিসে এমন অনেক সহকর্মী ছিলেন, যাঁরা সারা দিন চিন্তা করতেন কীভাবে সরকারের বাড়তি খরচ কমানো যায়।
সেনাবাহিনীতে তো এটা ছিল রোজকার রুটিন কাজ। পরে যখন সেনাবাহিনী থেকে বেরিয়ে বেসরকারি অফিসে কাজ করার সুযোগ পেলাম, সেখানেও দেখলাম খরচের একটা নিজস্ব ট্র্যাকার আছে। এটা ছিল একটা অসাধারণ সিস্টেম, যেখানে প্রতিটি বিভাগের সব রকম খরচ, সেভিং আর ভবিষ্যৎ প্ল্যান একসঙ্গে দেখা যেত।
এখন ইলন মাস্কের ডোজ ট্র্যাকার দেখে আমি সত্যিই অবাক হয়েছি। এটা একটি ডিজিটাল ট্র্যাকার, যার নাম ‘ডোজ ক্লক’। ইলন মাস্কের নেতৃত্বে চলা ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি (ডোজ) নামের সংস্থা কত টাকা বাঁচাতে পারছে, সেটি এই ট্র্যাকার দেখায়।
এ লেখা যখন লিখছি তখনকার হিসাব অনুযায়ী, তখন পর্যন্ত ৪৬ বিলিয়ন ডলার বাঁচানো গেছে। ডোজের কাজ শেষ করতে এখনো ৫০৫ দিন বাকি। এই কাজে প্রত্যেক ট্যাক্সপেয়ার এখন পর্যন্ত ৩০৪ ডলার বাঁচিয়েছেন। পাশাপাশি, লক্ষ্যের ২.
এই ডোজ ক্লকটা আসলে একটা কমিউনিটি মিম প্রজেক্ট—মানে সরকারি সংস্থার সঙ্গে এর সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এর কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডোজ ক্লকের ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায়, সরকারের নতুন নিয়মকানুন চালু হওয়ার পর ট্যাক্সপেয়াররা কত টাকা বাঁচাতে পারবেন, সেটা এখানে হিসাব করা হয়।
আমার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সরকারি খরচ কমানো সব সময়ই একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। কিন্তু এখন ডিজিটাল যুগে এই ডোজ ক্লকের মতো টুল থাকায় এই কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন যে কেউ রিয়েল টাইমে দেখতে পারছে কীভাবে সরকারি খরচ কমছে, কোথায় কমছে, আর এর ফলে ট্যাক্সপেয়াররা কীভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এটা একটা বড় অর্জন।শুধু তাই নয়, ডোজ কতগুলো নতুন উদ্যোগ নিয়েছে, মোট কত টাকা বাঁচানো গেছে, আর ট্যাক্সপেয়াররা কত টাকা বাঁচাতে পারবেন—এই সব তথ্যও এখানে পাওয়া যায়।
একটা সহজ উদাহরণ দিই। ধরুন, আপনি একজন ট্যাক্সপেয়ার। আপনি জানতে চান, সরকারের নতুন নিয়মের কারণে আপনার কত টাকা বাঁচবে। এই ট্র্যাকারে গিয়ে আপনি সেটা সহজেই দেখতে পাবেন।
এ ছাড়া ২০২৬ সালের ৪ জুলাই পর্যন্ত কত দিন বাকি আছে সেটাও দেখা যায়। নিউজউইকের খবর অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাঁচানোর টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
সরকারি খরচ কমানো ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের একটা বড় লক্ষ্য। সে কারণেই প্রেসিডেন্টের এক্সিকিউটিভ অর্ডার দিয়ে ডোজ তৈরি করা হয়েছে। এর দায়িত্বে আছেন ইলন মাস্ক। এই সংস্থার মূল কাজই হলো সরকারি খরচ কমানোর উপায় বের করা।
তবে মনে রাখবেন, এই ডোজ ক্লক সরকারি কোনো জিনিস নয়। এটি শুধু সরকারি খরচের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার জন্য তৈরি করা একটা কমিউনিটি প্রজেক্ট।
আমার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সরকারি খরচ কমানো সব সময়ই একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। কিন্তু এখন ডিজিটাল যুগে এই ডোজ ক্লকের মতো টুল থাকায় এই কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন যে কেউ রিয়েল টাইমে দেখতে পারছে কীভাবে সরকারি খরচ কমছে, কোথায় কমছে, আর এর ফলে ট্যাক্সপেয়াররা কীভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এটা একটা বড় অর্জন।
আমাদের দেশে এটাও হবে একদিন। এই আশা করি।
রকিবুল হাসান টেলিকম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক লেখক
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক কত ট ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা সেতুর ইলেট্রনিক টোল সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলো নগদ
পদ্মা সেতুতে ইলেকট্রনিক টোল সংগ্রহে (ইটিসি) যুক্ত হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’। আধুনিক এই ব্যবস্থার ফলে যানবাহনগুলোর আর লাইনে দাঁড়িয়ে টোল দেয়ার প্রয়োজন হবে না, বরং স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পরিশোধ করা যাবে নগদের মাধ্যমে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নগদের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় আরএফআইডি প্রযুক্তির মাধ্যমে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। এর ফলে টোল প্লাজায় থামা ছাড়াই টোল পরিশোধ করা সম্ভব হবে, যা সময় বাঁচাবে এবং যানজট ও ভোগান্তি কমাবে।
রাজধানীর সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সেতু অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন, নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহসহ দুইপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
চুক্তিতে সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে স্বাক্ষর করেন পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার নুরুল হক এবং নগদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ স্ট্রাটেজি অফিসার মো. মুয়িয তাসনিম ত্বকী।
অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব বলেন, জনগণকে ঝামেলাহীন সেবা দিতে আমরা পদ্মা সেতুর টোল আদায় ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক পেমেন্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই এই ব্যবস্থা চালু করে সাধারণ যাত্রীদের উপকারে আনা আমাদের লক্ষ্য।
নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, আমরা প্রযুক্তিকে ডিজিটাল পেমেন্টের উপযোগী করে তুলছি। সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া হবে আরও আধুনিক ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।
নগদের চিফ স্ট্রাটেজি অফিসার মো. মুয়িয তাসনিম ত্বকী বলেন, এই চুক্তি দেশের ডিজিটাল পেমেন্ট বাস্তবায়নে একটি মাইলফলক। তবে বিআরটিএ-এর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এই উদ্যোগ পুরোপুরি সফল হবে না।
ডাক বিভাগের পরিচালিত নগদ বর্তমানে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বচ্ছতা, সহজসেবা ও গ্রাহকের আস্থার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে সেবাটি।
ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ