‘দ্য রিমান্ড’ সেন্সরে আটকে থাকা দুঃখজনক’
Published: 17th, February 2025 GMT
ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে জুলাই ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দ্য রিমান্ড’ সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডে আটকে রাখা দুঃখজনক, অবিলম্বে সিনেমাটির ছাড়পত্র প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন ‘স্বাধীন শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা’ শীর্ষক আলোচনা সভার বক্তারা।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ফ্যাসিজমমুক্ত বাংলাদেশে ‘স্বাধীন শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি চব্বিশের জুলাই গনবিস্ফোরণ-গণঅভ্যূত্থানে ছাত্রজনতার অকৃত্রিম বীরত্ব ও ত্যাগের ইতিবৃত্তের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রেডপোস্ট ক্রিয়েশনের ব্যানারে নির্মিয়মান ‘দ্য রিমান্ড-টু’ এর কাহিনি চিত্রনাট্য চূড়ান্ত করার নিমিত্তে অংশ বিশেষ-প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রযোজক অ্যাডভোকেট বেলায়েত বেলাল। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের দানবীয় আক্রমণ ও নির্মম হিংস্রতা এবং রক্তাক্ত রাজপথে ছাত্রজনতার বীরত্ব, ত্যাগ, সংগ্রাম— লড়াইয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন। ঘটনাবহুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরঙ্গে গণআন্দোলন-গণবিস্ফোরণ ও গণঅভ্যুত্থানে অসীম সাহসী ছাত্রজনতার, বীর বাঙালির বীরত্বের ধারাবাহিক ইতিহাস ‘দ্য রিমান্ড’ চলচ্চিত্রে ফুটে উঠেছে। ক্ষমতা ভোগকারী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী, বিদেশে টাকা পাচারকারী, দাম্ভিক রাঘব বোয়ালদের— রিমান্ডের জবানবন্দি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
অশ্লীল সিনেমা বন্ধে মান্নার অগ্রণী ভূমিকা ছিল: মিশা সওদাগর
সেই নির্মাতাকে বিয়ে করছেন মেহজাবীন চৌধুরী!
‘দ্য রিমান্ড’ সিনেমার ছাড়পত্র প্রদানের দাবি জানিয়ে বেলায়েত বেলাল বলন, “দ্য রিমান্ড’ ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। রাষ্ট্রবিরোধী গল্প, বক্তব্য, সংলাপ, থিম কিছু থাকলে সাত দিনের মধ্যেই তো চিঠি দেওয়া আইনের বিধান ছিল। কোনো চিঠিপত্র দেয়া হয় নাই, আলোচনা বা সংলাপ করেন নাই। অজ্ঞাত কারণে এখনো সনদপত্র ইস্যু করেন নাই। অবিলম্বে সনদপত্র ইস্যু করা হোক।”
এদিকে, প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে বিজ্ঞ আইনজীবী লিগ্যাল নোটিশও পাঠিয়েছেন। কিন্তু জবাব পাওয়া যায়নি বলেও জানান এই প্রযোজক।
অ্যাডভোকেট কে এম জাবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, এনটিভির পরিচালক নুরুদ্দীন আহমেদ, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সাংবাদিক এরফানুল হক নাহিদ, কামরুল হাসান দর্পণ, সাদিক আল আরমান, নায়ক মারুফ আকিব ও আবির পারভেজ প্রমুখ।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ছ ত রজনত র চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক