আইলে টমেটো ক্ষেতে ব্রোকলি, লাভবান ফারুক আহমেদ
Published: 18th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে ৬০ শতক পরিমাণ ক্ষেতে ব্রোকলি চাষ করে লাভবান ফারুক আহমেদ। এ ক্ষেতের আইলে রোপণ করা হয়েছে টমেটো গাছ। দেখতে চমৎকার। তেমনি ফলনও হয়েছে ভালো।
চুনারুঘাট উপজেলার গোপালপুর গ্রামে ফারুক আহমেদের এক সাথে ব্রোকলি ও টমেটো চাষ মুগ্ধতা কুড়াচ্ছে মানুষের।
তিনি নভেম্বর মাসের শেষে ব্রোকলি ও টমেটোর চারা রোপণ করেন। প্রায় ৬০ দিনের মধ্যে এতে পূর্ণ ব্রোকলি হয়। গাছে গাছে ধরেছে টমেটোও। প্রতি কেজি ব্রোকলি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।
এসব চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এখানে বিক্রি থেকে তিনি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা পাওয়ার আশা করছেন। ক্রেতারা ক্ষেতে এসে ব্রোকলি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে বাজারে নিয়েও বিক্রি করেন।
ব্রোকলির সাথে আইলে টমেটোর ভালো ফলন পেয়ে আনন্দিত ফারুক আহমেদ। তিনি চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের মুড়ারবন্দ ব্লকে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হিসেবে কর্মরত। অফিসের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি নিজ বাড়ির আশপাশে জমিতে শ্রমিক নিয়ে চাষাবাদে মগ্ন থাকেন। ফসল চাষে কৃষকদের দেন নানা পরামর্শ। এভাবে বেশ ব্যস্ততায় তার জীবন কাটছে।
ফারুক আহমেদ জানান, এই মৌসুমে তিন ধাপে তিনি ব্রোকলির চারা রোপণ করেন। এ পর্যন্ত তার উৎপাদিত ব্রোকলি বিক্রি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা এসেছে। আরো ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রোকলি ও টমেটো চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচে ৭২ শতক জমিতে উন্নত জাতের টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষ করেন। এসব সবজি বিক্রি থেকেও ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আসবে।
প্রায় ১৫ বছর যাবৎ তিনি গোপালপুরে হাইব্রিড জাতের ব্রোকলি চাষ করছেন। তার জমিতে এর চাষ দেখে স্থানীয় চাষিরা উৎসাহিত হয়েছেন। তারাও নিজেদের জমিতে এর চাষে এগিয়ে এসেছেন।
তার থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ নিয়ে ব্রোকলি চাষ করেছেন গোপালপুরের কয়েকজন কৃষক। তারাও ব্রোকলি বিক্রি করে লাভবান। তারা (কৃষকরা) জানান, অচেনা থাকা এই সবজিটি এখন এখানের ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছে। দেখতে যেমন সুন্দন, তেমনি খেতেও স্বাদ।
ফারুক আহমেদ বলেন, “ফুলকপির মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রংয়ের শীতকালীন এই ফসলটি হবিগঞ্জের কোথাও দেখতে পাওয়া যেত না। এখন এটি এখানে বেশ পরিচিত সবজি। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।”
ক্রেতারা জানান, সড়কের পাশে ক্ষেত হওয়ায় গাড়ি নিয়ে এসে ব্রোকলি ও টমেটো ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া সহজ। আর ফারুক আহমেদের এই ব্রোকলি ও টমেটো বিষমুক্ত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান জানান, ফারুক আহমেদের সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় একই সঙ্গে ব্রোকলি ও টমেটো চাষাবাদ করার সদিচ্ছা জানিয়েছেন অনেক কৃষক। বিশেষ করে ব্রোকলিতে ভিটামিন সি রয়েছে। এ সবজিটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ, বয়স ঠেকায় ও ত্বক সুন্দর রাখে।
ঢাকা/মামুন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ র ক আহম দ চ ষ কর ব র কল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি।