নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর একটি গার্মেন্টের ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের লোকজন মহড়া দিয়েছে। এতে বিসিক শিল্পনগরীর গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

তবে দুই গ্রুপের মধ্যে মুখোমুখি কিংবা কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই। তারা আলাদা ভাবে মহড়া দিয়েছে।  মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীতে এ ঘটনা ঘটে। 

প্রত্যক্ষ্যদর্শী ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত ফকিরা এ্যাপারেলসের ঝুট সেক্টর একাধিক গ্রুপ দৌড়ঝাঁপ করলেও এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা যৌথ ভাবে ঝুট নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড এসএম মাহমুদুল হক আলমগীরের উপর দায়িত্ব ভার আসে। 

আলমগীরের নামে ডিউ কেটে ঝুট নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে লাভের অংশের টাকা বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বন্টন করে দেয়। মঙ্গলবার ফকিরা গামেন্টের ঝুট নামার সংবাদে ৬/৭ মাস পর হঠাৎ করে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ এর নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকার বিএনপির লোকজন সকাল বেলা বিসিক শিল্পনগরীতে জড়ো হয়।

পরে তারা বিসিক শিল্পনগরীতে মহড়া দিয়ে জানান দেয় তারা ফকিরার ঝুট তারা নামাবে। তাদের আগমনের সংবাদে এড: আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিসিক শিল্পনগরীতে জড়ো হয়। দুই গ্রুপের লোকজন আলাদা ভাবে মহড়া দেয়। বিএনপির দুই গ্রুপের মহড়ায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। 

বিসিক শিল্পনগরীতে ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই গ্রুপের মহড়ার সংবাদে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় সেনাবাহিনীর ও ফতুল্লা থানা পুলিশ টিম। সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ বলেন, বিসিক শিল্পনগরীটা আমাদের এলাকায় অবস্থিত। আমাদের এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা অবহেলিত ও বঞ্চিত। ফকিরা গামেন্ট একটি বিশাল ফ্যাক্টরী। 

এই কারখানার ঝুট আমাদের এলাকার বিএনপির নেতাকর্মী নিবে, এটা আমাদের পাপ্য। বাহিরের লোক এসে ঝুট নিয়ে যাবে এটা আমরা মেনে নিবো না। যার কারনে আমাদের এলাকার বিএনপির সবাইকে নিয়ে বিসিকে অবস্থান নিয়েছি। 

এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড আলমগীর বলেন, বিসিক শিল্পনগরীটি এনায়েতনগর ইউনিয়নে অবস্থিত। আমাদের ইউনিয়নের সকল নেতাকর্মী নিয়ে কারখানার মালিকের কাছ থেকে বৈধ ভাবে ক্রয় করে অন্য ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেই। আর লাভের টাকা রাসেল মাহমুদ সহ সকল নেতাকর্মীদের মাঝে বন্টন করা হয়। কাউকে বঞ্চিত করা হয় না। 

গত কয়েকদিন আগেও রাসেল মাহমুদ স্বাক্ষর এক লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আর আমরা যার কাছে ঝুট বিক্রি করি যুবদল নেতা রতনের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে রাসেল মাহমুদ। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় রাসেল তার লোকবল নিয়ে বিসিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

রাসেল দলের নাম ভেঙে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টসের ঝুট ও নিটিং এর ওয়েস্টিজ মাল নামায়। বিসিক শিল্পনগরীতে কেউ যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার চেষ্টা করে তা কিছুতেই মেনে নিবো না। 

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উভয় গ্রুপের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব স ক শ ল পনগর ত ব এনপ র ন ত ব এনপ র দ ন ত কর ম আলমগ র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম যদি মানুষের প্রয়োজনে না আসে, শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে না পারে, শিশুদের জন্য নিরাপদ জীবন গড়ে দিতে না পারে, তাহলে সে সংস্কার কোনো কাজে আসবে না।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ মাঠে ‘গণতান্ত্রিক পদযাত্রায় শিশু’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

আমরা বিএনপি পরিবার আর মায়ের ডাক যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে গুমের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া শিশুদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার শিশুদের (গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্তান) পুনর্বাসনের জন্য একটি স্পেশাল সেল গঠন করবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, কাজটি হয়নি। আশা করব, দেরিতে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার তাদের জন্য কিছু করবে।’

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘একটি কমিশন করা হয়েছে। এই কমিশন এখন পর্যন্ত একটা রিপোর্ট নাকি করেছে। কিন্তু তাদের এই যে খোঁজ করা, এ বিষয়ে খুব বেশি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।’

গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে এলে ‘ভারাক্রান্ত হন’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ পরিবারগুলো যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, আমরা কিন্তু সেই ত্যাগ অনেকেই করতে পারিনি। যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে শিশুদের বলতে শুনি যে আমি আমার বাবাকে দেখতে চাই, বাবার হাত ধরে স্কুলে যেতে চাই, ঈদের মাঠে নামাজ পড়তে যেতে চাই, তখন আমি আমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’

গুমের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া শিশুদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ মাঠে, ২৯ জুলাই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাদের কাছে এসে সমস্যার কথা বলছে মানুষ: মির্জা ফখরুল
  • চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে
  • মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল