ফতুল্লায় ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের মহড়া, উত্তেজনা
Published: 18th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর একটি গার্মেন্টের ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের লোকজন মহড়া দিয়েছে। এতে বিসিক শিল্পনগরীর গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
তবে দুই গ্রুপের মধ্যে মুখোমুখি কিংবা কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই। তারা আলাদা ভাবে মহড়া দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত ফকিরা এ্যাপারেলসের ঝুট সেক্টর একাধিক গ্রুপ দৌড়ঝাঁপ করলেও এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা যৌথ ভাবে ঝুট নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড এসএম মাহমুদুল হক আলমগীরের উপর দায়িত্ব ভার আসে।
আলমগীরের নামে ডিউ কেটে ঝুট নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে লাভের অংশের টাকা বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বন্টন করে দেয়। মঙ্গলবার ফকিরা গামেন্টের ঝুট নামার সংবাদে ৬/৭ মাস পর হঠাৎ করে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ এর নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকার বিএনপির লোকজন সকাল বেলা বিসিক শিল্পনগরীতে জড়ো হয়।
পরে তারা বিসিক শিল্পনগরীতে মহড়া দিয়ে জানান দেয় তারা ফকিরার ঝুট তারা নামাবে। তাদের আগমনের সংবাদে এড: আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিসিক শিল্পনগরীতে জড়ো হয়। দুই গ্রুপের লোকজন আলাদা ভাবে মহড়া দেয়। বিএনপির দুই গ্রুপের মহড়ায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
বিসিক শিল্পনগরীতে ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই গ্রুপের মহড়ার সংবাদে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় সেনাবাহিনীর ও ফতুল্লা থানা পুলিশ টিম। সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ বলেন, বিসিক শিল্পনগরীটা আমাদের এলাকায় অবস্থিত। আমাদের এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা অবহেলিত ও বঞ্চিত। ফকিরা গামেন্ট একটি বিশাল ফ্যাক্টরী।
এই কারখানার ঝুট আমাদের এলাকার বিএনপির নেতাকর্মী নিবে, এটা আমাদের পাপ্য। বাহিরের লোক এসে ঝুট নিয়ে যাবে এটা আমরা মেনে নিবো না। যার কারনে আমাদের এলাকার বিএনপির সবাইকে নিয়ে বিসিকে অবস্থান নিয়েছি।
এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড আলমগীর বলেন, বিসিক শিল্পনগরীটি এনায়েতনগর ইউনিয়নে অবস্থিত। আমাদের ইউনিয়নের সকল নেতাকর্মী নিয়ে কারখানার মালিকের কাছ থেকে বৈধ ভাবে ক্রয় করে অন্য ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেই। আর লাভের টাকা রাসেল মাহমুদ সহ সকল নেতাকর্মীদের মাঝে বন্টন করা হয়। কাউকে বঞ্চিত করা হয় না।
গত কয়েকদিন আগেও রাসেল মাহমুদ স্বাক্ষর এক লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আর আমরা যার কাছে ঝুট বিক্রি করি যুবদল নেতা রতনের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে রাসেল মাহমুদ। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় রাসেল তার লোকবল নিয়ে বিসিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।
রাসেল দলের নাম ভেঙে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টসের ঝুট ও নিটিং এর ওয়েস্টিজ মাল নামায়। বিসিক শিল্পনগরীতে কেউ যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার চেষ্টা করে তা কিছুতেই মেনে নিবো না।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উভয় গ্রুপের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব স ক শ ল পনগর ত ব এনপ র ন ত ব এনপ র দ ন ত কর ম আলমগ র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।