ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ ও তার ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের নামে থাকা ১৩০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে হারুনের নামে ১০০ বিঘা জমি ও তার ভাই শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি রয়েছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। তাদের ২১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। 

জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে হারুনের নামে ঢাকার উত্তরায় ৭ দশমিক ৪৫ কাঠা জমিতে ৩ কোটি টাকা মূল্যের একটি ইমারত রয়েছে। গুলশানে ১০ দশমিক ৩৬ শতক জমিতে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার আরেকটি ইমারত রয়েছে। এছাড়া সেমিপাকা একটি টিনশেড বাড়ি, খিলক্ষেতে এক তলা একটি দালান ও সেমিপাকা আরেকটি টিনের বাড়ি রয়েছে। হারুনের নামে উত্তরায় ১০ নম্বর সেক্টরে ৭ তালা ভবনে ২য় তালায় একটি ফ্ল্যাট ও জোয়ার সাহারায় ৬ তলা ভবনের ৬ তলায় আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই দুই ফ্ল্যাটসহ আশিয়ান সিটিতে হারুনের নামে ৫ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। একইসঙ্গে হারুনের ১০টি ও শাহরিয়ারের ১১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি শাহরিয়ারের তিনটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পূর্বাচলে অটোরিকশায় রেডিমিক্স ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

খালে ভাসমান যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপ-পরিচাৱক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন পৃথক দুটি আবেদনে স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

হারুনের আবেদনে বলা হয়, হারুন অর রশিদ ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, তার মালিকানাধীন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যা করতে পারলে এ মামলার বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় হতে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে স্থাবর সম্পত্তিসমূহ জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

শাহরিয়ারে আবেদনে বলা হয়, এ বি এম শাহরিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। হারুন অর রশীদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি প্রধানের পদসহ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাকে অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করায় মামলা হয়েছে।

তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, আসামি শাহরিয়ার তার মালিকানাধীন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যা করতে পারলে এ মামলার বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় হতে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

গত ১৭ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। 

ঢাকা/মামুন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্‌রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ