এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে ম্যানসিটিকে বিদায় করলো রিয়াল
Published: 20th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নকআউট প্লে-অফের দ্বিতীয় লেগে এমবাপ্পের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ৩-১ গোলে ম্যানসিটিকে হারালো রিয়াল মাদ্রিদ। দুই লেগে ৬-৩ গোলের অগ্রগামিতায় সিটিজেনদের বিদায় করে শেষ ষোলোতে ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ৩-২ গোলে প্রথম লেগ জিতে ফিরেছিল রিয়াল। ফেভারিট হিসেবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পেপ গার্দিওলার দলকে স্বাগত জানায় তারা। প্রথমার্ধেই এমবাপ্পের জোড়া গোলে ব্যবধানটা তিনে বাড়িয়ে নেয় স্বাগতিকরা। বিরতির পর ফরাসি ফরোয়ার্ড হ্যাটট্রিক পূরণ করেন।
মাত্র চার মিনিট যেতেই এমবাপ্পে গোলমুখ খোলেন। সিটির রক্ষণের ভুলে এগিয়ে যায় রিয়াল। ম্যানসিটি অধিনায়ক রুবেন দিয়াস হেডে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ফরাসি ফরোয়ার্ড বল পায়ে নিয়ে এডারসনের শরীরের ওপর দিয়ে জাল কাঁপান। ৩৩তম মিনিটে কাটব্যাকে খুব কাছ থেকে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। ম্যাচ ঘড়ির কাঁটা ঘণ্টা পার হতেই তৃতীয়বার জালে বল ঠেলে দেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড। ৬১তম মিনিটে বক্সের প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ের শটে জালে বল ঠেলে দেন তিনি।
রিয়ালের হয়ে ৩৮ ম্যাচে এমবাপ্পের গোল দাঁড়ালো ২৮টি। ক্লাব ও দেশের হয়ে সব মিলিয়ে তার গোল সংখ্যা ৩৫৯ এবং বানিয়েছেন ১৪২টি। সব প্রতিযোগিতা মিলে ৫০১ গোলে অবদান ফরাসি তারকার। সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ে ৫০০ গোলে অবদান রাখার মাইলফলকে পৌঁছালেন তিনি।
স্টপেজ টাইমে সান্ত্বনাসূচক গোল করেন নিকোলাস গঞ্জালেস। ওমর মারমৌশের ফ্রি কিক পোস্টে লেগে ফিরে এলে ফিরতি শটে এক গোল শোধ দেন তিনি।
শেষ ষোলোতে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বেয়ার লেভারকুসেন কিংবা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শুক্রবার হবে ড্র।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: এমব প প র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাক
লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান হবে আশা করা যায়। নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে যে ২০২৬ সালের রোজার আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।
সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যু সেই বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে।
কিন্তু ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার ব্যাপারে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে বিএনপির নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে।
এমনই একটি পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় লন্ডনে তাঁর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বৈঠকের ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়টি সামনে এলেও দুই পক্ষের আলোচনা কেবল এর মধ্যে সীমিত ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সংস্কারের ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দেন তঁারা।
বৈঠকের ফলাফলকে প্রায় সব দলই স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার ধরন নিয়ে আপত্তি জানালেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। আমরাও মনে করি, কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ যারা সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারকাজ দৃশ্যমান করার ওপর জোর দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। আবার অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়, সে জন্য জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচারও অপরিহার্য। কিন্তু এই দুটি বিষয়কে কোনোভাবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা সমীচীন হবে না।
যেসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে নির্বাচন ও সংবিধানের বিষয়টি জড়িত নয়, সেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করা যায়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তেমন বাধা আসার কথা নয়। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার অর্থ এই নয় যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে সরকার একা কাজটি করতে পারবে না।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘাতের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে না চললে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। আমরা আশা করি, দিন-তারিখের বিষয়ে সমঝোতার পর নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিতে মত ও পথের পার্থক্য থাকবে; তাই বলে একে অপরকে ‘শত্রুজ্ঞান’ করার পুরোনো সংস্কৃতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।