সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নাগরিকেরা। তাঁরা বলেন, বাঁধের কাজ নিয়ে শুরু থেকেই নানা অভিযোগ আছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন, প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে অনিয়মের কারণেই কাজে বিলম্ব ও গাফিলতি হয়। তদারকিতেও রয়েছে দুর্বলতা।

আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জে নাগরিকদের সামাজিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’ আয়োজিত হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা, প্রতিবন্ধকতা ও ধীরগতি নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। পৌর শহরের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে।

সদস্যসচিব সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, লেখক ও সমাজকর্মী মুনমুন চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক, টিআইবির সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য সুখেন্দু সেন ও সঞ্চিতা চৌধুরী, আইনজীবী হেলিনা আক্তার, জনউদ্যোগের সদস্য সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আহমদ নূর ও মোশারফ হোসেন, উন্নয়নকর্মী শাহ কামাল, সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দেন বলেন, ‘আমরা ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি চাই। কিন্তু এটির অভাব রয়েছে। এটি নিয়ে প্রতিবছর কথা হয়। সময়মতো কাজ শুরু এবং শেষ করতে না পারাও অনিয়মের মধ্যে পড়ে। এই কাজে যত বেশি স্থানীয় কৃষকদের সম্পৃক্ত করা যাবে, ততই কাজে অনিয়ম কম হবে।’
হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের জেলা সভাপতি ইয়াকুব বখত বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে কথা বলছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল হচ্ছে না। মাঠে মাঠে ঘুরে, স্থানীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে পরামর্শ দিলে সেগুলোর বাস্তবায়ন হয় না। কাজের সময় আর মাত্র আট দিন আছে। অথচ অনেক জায়গায় কাজ চলছে টিমেতালে। এতে ফসল ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সুনামগঞ্জে এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬টি প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক সাতটি উপজেলা ঘুরে কাজ দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সেই পুরোনো ধারায় কাজ চলছে। সামনে কৃষকের নাম থাকলেও পেছনে রয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অনেক স্থানে মাটি ফেলা হয়নি। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে ৮২ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এগুলো অবাস্তব কথা। এখন পর্যন্ত ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ কাজ হয়েছে। এবারও সময়মতো কাজ শেষ হবে না। কাজের তদারকিতে দুর্বলতা রয়েছে। তদারকি বাড়াতে হবে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সুনামগঞ্জে এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬টি প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৮৭ কোটি টাকা। তবে এখনো দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পাওয়ায় কাজে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজন পড়েছেন বেকায়দায়।

সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সংক্রাস্ত জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ প রকল প স গঠন র কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

সিমন্সের চোখে মিরাজের অসুস্থতা ‘মধুর সমস্যা’

গলের মেঘলা আকাশ আর টানা বৃষ্টির মাঝে বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রস্তুতি শুরু হলো রোববার। শুরুর দিনেই একটি দুশ্চিন্তা—অসুস্থতার কারণে অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের চোখে এটি আবার ‘মধুর সমস্যা’।

বাংলাদেশ কোচের মতে, মিরাজের সমস্যা সুযোগ করে দেবে অন্য কারও। তবে মিরাজও যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেটিও জানিয়েছেন সিমন্স। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন মিরাজের সর্বশেষ অবস্থা, ‘গত দুই দিনে সে অনেকটাই ভালো আছে। আমরা দেখব সন্ধ্যায় ওষুধের পর সে কেমন থাকে। আশা করি, কাল অনুশীলন করতে পারবে এবং খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’

সিমন্স যোগ করেছেন, ‘এটা (মিরাজের অসুস্থতা) নিশ্চয়ই চিন্তার। তবে একজনের সমস্যা অন্যজনের জন্য সুযোগ এনে দেয়। দলের সবাই চায় মিরাজ সুস্থ হয়ে উঠুক, কিন্তু তারা এ–ও জানে, যদি মিরাজ না-ও খেলতে পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা সমস্যা, তবে সমস্যাটা মধুর।’

মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবেমেহেদী হাসান মিরাজ

এদিন অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও কথা বলেন সিমন্স। ২০১৩ সালে গলে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন না কোচ। তাহলে কী চাওয়া সিমন্সের? বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চাই সে যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’

সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্বে হঠাৎ পরিবর্তন এনে নাজমুল হোসেনের বদলে মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। সিমন্স মনে করেন, টেস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নাজমুলের ওপর পড়বে না, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’

বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ