হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি
Published: 20th, February 2025 GMT
সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নাগরিকেরা। তাঁরা বলেন, বাঁধের কাজ নিয়ে শুরু থেকেই নানা অভিযোগ আছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন, প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে অনিয়মের কারণেই কাজে বিলম্ব ও গাফিলতি হয়। তদারকিতেও রয়েছে দুর্বলতা।
আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জে নাগরিকদের সামাজিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’ আয়োজিত হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পরিকল্পনা, প্রতিবন্ধকতা ও ধীরগতি নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। পৌর শহরের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে।
সদস্যসচিব সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, লেখক ও সমাজকর্মী মুনমুন চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক, টিআইবির সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য সুখেন্দু সেন ও সঞ্চিতা চৌধুরী, আইনজীবী হেলিনা আক্তার, জনউদ্যোগের সদস্য সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আহমদ নূর ও মোশারফ হোসেন, উন্নয়নকর্মী শাহ কামাল, সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।
সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দেন বলেন, ‘আমরা ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি চাই। কিন্তু এটির অভাব রয়েছে। এটি নিয়ে প্রতিবছর কথা হয়। সময়মতো কাজ শুরু এবং শেষ করতে না পারাও অনিয়মের মধ্যে পড়ে। এই কাজে যত বেশি স্থানীয় কৃষকদের সম্পৃক্ত করা যাবে, ততই কাজে অনিয়ম কম হবে।’
হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের জেলা সভাপতি ইয়াকুব বখত বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে কথা বলছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল হচ্ছে না। মাঠে মাঠে ঘুরে, স্থানীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে পরামর্শ দিলে সেগুলোর বাস্তবায়ন হয় না। কাজের সময় আর মাত্র আট দিন আছে। অথচ অনেক জায়গায় কাজ চলছে টিমেতালে। এতে ফসল ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক সাতটি উপজেলা ঘুরে কাজ দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সেই পুরোনো ধারায় কাজ চলছে। সামনে কৃষকের নাম থাকলেও পেছনে রয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অনেক স্থানে মাটি ফেলা হয়নি। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে ৮২ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এগুলো অবাস্তব কথা। এখন পর্যন্ত ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ কাজ হয়েছে। এবারও সময়মতো কাজ শেষ হবে না। কাজের তদারকিতে দুর্বলতা রয়েছে। তদারকি বাড়াতে হবে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সুনামগঞ্জে এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬টি প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৮৭ কোটি টাকা। তবে এখনো দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পাওয়ায় কাজে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজন পড়েছেন বেকায়দায়।
সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সংক্রাস্ত জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ প রকল প স গঠন র কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।