তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতির আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ডিটিজি আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। রাজধানীর পূর্বাচলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ ও হংকংয়ের ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে চার দিনব্যাপী ডিটিজি আয়োজন করেছে। এবারের প্রদর্শনীতে চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপানসহ ৩৩ দেশের ১ হাজার ১০০ ব্র্যান্ডের ১ হাজার ৬০০ স্টল রয়েছে।

বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো.

হাফিজুর রহমান, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসের ওভারসিজ পরিচালক আকাই লিন বক্তব্য দেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি শামীম ইসলাম ও পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। বিটিএমএর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন খরচ কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌরশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পর অগ্রাধিকারমূলক বাজার–সুবিধা হয়তো আর থাকবে না। তখন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাই যেকোনোভাবে বিভিন্ন খরচ কমাতে হবে।

বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বস্ত্র খাতে ইতিমধ্যে প্রায় ২২ বিলিয়ন বা ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। যার কারণে রপ্তানিমুখী নিট পোশাকের শতভাগ কাপড় সরবরাহের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। সরকার যদি আগামী ১০ বছরের জন্য গ্যাসের দাম ও ব্যাংকের সুদের হার সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে পারে, তাহলে আমরা আরও বিনিয়োগ করতে পারব। আমরা বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে চাই না।

প্রদর্শনীতে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতি, কাপড়, ফিলামেন্ট, রাসায়নিক, ডাইং প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম প্রদর্শন করা হচ্ছে। এবারের প্রদর্শনীতে ফ্যাশন শোও থাকবে। এ ছাড়া চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ