জামিনে এসেই হামলার নেতৃত্বে আসামিরা
Published: 22nd, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে হামলা, পাল্টাপাল্টি মামলার পর এক পক্ষের আসামিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশকে জানিয়েছিলেন। কোনো সহায়তাই পাননি।
এলাকাবাসী ও কুমারখালী থানা সূত্র জানায়, কসবা গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মন্টু কাজীর লোকজনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে আদালত প্রামাণিকের লোকজনের। কাজীপাড়ার লোকজন চাষাবাদের পাশাপাশি পদ্মা নদীতে মাছও ধরেন। নদীতে তাদের বেশকিছু ডিঙি নৌকা থাকে। ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রামাণিকের পক্ষের সালাম নামের এক ব্যক্তি কাজীর পক্ষের পাঁচটি নৌকার তলা ছিদ্র করছিলেন। এ সময় কাজীর লোকজন তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। যদিও কিছুক্ষণ পর সালামকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, সালামকে আটকের জের ধরে কিছুক্ষণ পরই প্রামাণিকের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে কাজীপাড়ায় আসেন। এ সময় উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই কাজীর পক্ষের আমজাদ আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দেন। পুলিশ সেটি নথিভুক্ত করে। একই রাতে প্রামাণিক পক্ষের আসলাম বাদী হয়ে থানায় আরেকটি এজাহার দেন। সেটিতে ত্রুটি রয়েছে জানিয়ে নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। বিষয়টি সংশোধন করে এই পক্ষের স্বপন মণ্ডলের স্ত্রী ইতি খাতুন ১৮ ফেব্রুয়ারি এজাহার দেন। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। এ মামলার সব আসামি বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পান।
প্রামাণিকের পক্ষের লোকজন জানিয়েছেন, ওই আসামিরা শুক্রবার রাতে তাদের বাড়িঘরে হামলা করেন। বাড়িতে পুরুষের সংখ্যা কম থাকায় তারা প্রতিরোধ করতে পারেননি। গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, পুরো কসবা গ্রাম সুনশান। নারী ও শিশু থাকলেও কোনো পুরুষ নেই। গোয়ালঘর থাকলেও ভেতরে গরু-ছাগল-মহিষ দেখা যায়নি। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে ভাঙচুরের ক্ষত। এসব বাড়ি থেকে আসবাব, নলকূপ, বাসনকোসন আগের রাতে লুট হয়েছে বলে তাদের দাবি।
প্রামাণিকের পক্ষের স্বপন মণ্ডলের মেয়ে বর্ষা খাতুন বলেন, ‘পুলিশ কাজীর লোকের মামলা আগে নিয়েছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে আমরা পালিয়ে গেলে ওরা (কাজীর পক্ষ) ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে। গবাদিপশু, আসবাব, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, লুটপাট করেছে।’ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ওদের কাছ থেকে ঘুষ খেয়েছে। যে কারণে তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না। এই পক্ষের মামলা দেরিতে নিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করিয়েছে পুলিশ।
বর্ষার মা ও এই পক্ষের মামলার বাদী ইতি খাতুনের ভাষ্য, ‘আসামিরা জামিন নিয়ে এসেছে। শুক্রবার তারাই আমার বাড়িতে আরেক দফায় ভাঙচুর-লুটপাট করেছে। সাবমার্সিবল পাম্প, থালাবাসন পর্যন্ত নিয়ে গেছে কাজীপাড়ার লোকজন। এতে নেতৃত্ব দেয় জাতু কাজী, মিনার কাজী, পারভীন। পুলিশকে (হামলার বিষয়টি) জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।’ তিনি ন্যায্য বিচার দাবি করেন।
কাজীর পক্ষের আমজাদ আলীর করা মামলার আসামি শহিদুল ইসলাম। তাঁর স্ত্রী রেনুকা খাতুনকে শনিবার সকালে বাড়িতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষের আশরাফ, মিরাজুল, ওসমানসহ ১০-১৫ এসে আমার ঘরবাড়ি ভাঙেছে। গোয়ালঘর থেকে দুইটা মহিষ ও পাঁচটা গরু নিয়ে গেছে। মাঠে থাকা শ্যালোইঞ্জিন নিয়ে গেছে। রসুনক্ষেত নষ্ট করেছে। আমি উপযুক্ত বিচার চাই।’
ভাঙচুর ও লুটপাটের সব অভিযোগ অস্বীকার করেন কাজীর পক্ষের রমজান কাজী। তিনি বলেন, প্রামাণিকের লোকজন তাদের নৌকা ছিদ্র করে দেয়। ওরাই তাদের কুপিয়েছে। এখন ফাঁসানোর জন্য নিজেরাই মালপত্র সরিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চান।
পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমারখালী থানার এসআই আবু সায়েম। তিনি বলেন, দুই পক্ষের মামলায় জ্ঞাত-অজ্ঞাত মিলিয়ে ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কাজীর পক্ষের ২১ জন আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরেছেন। প্রামাণিকের পক্ষের দুইজন কারাগারে আছেন। অন্যরা পলাতক। নতুন করে ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়টি তিনি জানেন না।
কুমারখালী থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট