পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্তে পাসপোর্ট ছাড়াই ভারত থেকে আসার সময় বাংলাদেশের এক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ৪৪৩ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাবপিলার এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

গ্রেপ্তার সুমন রায় (২৬) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট উত্তর ঠাকুরগাঁও এলাকার অরুণ রায়ের ছেলে। সুমন রায়ের কাছ থেকে ভারতের ৫ হাজার ১৬০ রুপি, একটি মুঠোফোন সেট ও ভারতের সিমকার্ড পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

ওই ঘটনায় পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন তেঁতুলিয়া বিওপির হাবিলদার জালাল আহাম্মেদ বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় অবৈধ অনুপ্রবেশের (পাসপোর্ট আইনে) অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল রাতে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার দুপুরে তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ৪৪৩ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাবপিলার–সংলগ্ন পুরোনো বাজার এলাকা দিয়ে ওই তরুণ ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছিলেন। এ সময় বিজিবির তেঁতুলিয়া বিওপির টহলরত সদস্যরা ওই এলাকায় প্রায় ১০ গজ বাংলাদেশের ভেতর থেকে ওই যুবককে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন।

বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক জানান, তিনি গত বছরের ২০ নভেম্বর পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মীর্জাপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি আবারও অবৈধ পথে দেশে ফিরছিলেন।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত কবির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্তে আটক তরুণকে গতকাল থানায় হস্তান্তরের পর রাতেই তাঁর বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা করেছে বিজিবি। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ