খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস মোছার খাণ্ডবদাহন
Published: 25th, February 2025 GMT
গত ৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় হলসহ অন্তত ১৯টি স্থাপনার নতুন নামকরণ করা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জগদীশচন্দ্র বসু, কবি জীবনানন্দ দাশ, লালন সাঁই, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, জি সি দেব, ডা.
স্বীকার্য, সরকার বদলের সঙ্গে বাংলাদেশে স্থান ও স্থাপনার নামের বদল নতুন নয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে চট্টগ্রামে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দরের নামকরণ করে এম এ হান্নান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এম এ হান্নান ছিলেন চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিক এবং চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির একজন সংগঠক। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে এম এ হান্নানের বদলে বিমনবন্দরটির নাম দেয় হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এ ক্ষেত্রে অষ্টাদশ শতকের একজন ইসলামী ধর্মগুরুর নাম ব্যবহারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। তাই ২০০৮ সালে পুনরায় ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ওই বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের সাহস করেনি; বরং টার্গেট করে দেশের প্রধান বিমানবন্দরকে। ২০১০ সালে তারা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম বদল করে রাখে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি প্রতিপক্ষের কৌশল দিয়েই তাদের ঘায়েল করার চেষ্টা।
বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে স্থান বা স্থাপনার নাম বদল নিছক আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্য কোনো দলীয় বিষয় নয়। যেমন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম এখনও অনেকে বি.বাড়িয়া লেখেন। আপাতদৃষ্টিতে লেখার সুবিধার্থে মনে হলেও বি.বাড়িয়া লেখার পেছনে একটি সাম্প্রদায়িক চিন্তা ছিল– সেটি না বোঝার কারণ নেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাম রাখা হয়েছিল রহমানবাড়িয়া।
স্থানের নামের মুসলমানীকরণ সর্বাধিক হয়েছে এরশাদ আমলে। ওই সময় জয়দেবপুরের নাম বদল করে গাজীপুর এবং বিক্রমপুরের নাম মুন্সীগঞ্জ করা হয়। একই ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির ক্ষেত্রেও। ১৯৮৩ সালে স্বরূপকাঠি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ১৯৮৫ সালে হঠাৎ স্বরূপকাঠি উপজেলাকে নেছারাবাদ নামকরণ করা হয়। অনেকেই মনে করেন, শর্ষীনার পীরের উত্তরসূরিদের প্রভাবেই স্বরূপকাঠির নাম পরিবর্তন করে নেছারাবাদ রাখা হয়েছে। যদিও সাধারণ মানুষ এখনও জায়গাটিকে স্বরূপকাঠি বলেই চেনে।
ধারণা করা হয়েছিল, ২০২৪-এর আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা সূচিত হবে। পরস্পরকে দোষারোপ বা ঘায়েল করার রাজনীতি শেষ হবে। কিন্তু কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার শুধু পুরোনো ধারার রাজনীতি উৎসাহিতই করছে না; কোনো কোনো ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের চিহ্ন মোছার নামে বাঙালির ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটতে শুরু করেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা এর মোক্ষম দৃষ্টান্ত।
অস্বীকার করা যাবে না, আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরের শাসনামলে অনেকটা অপ্রাসঙ্গিকভাবেই শেখ হাসিনা পরিবারের বা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেকের নামেই দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছে; রাজধানী ঢাকা থেকে প্রত্যন্ত উপজেলা পর্যন্ত। বিষয়টি সাধারণ মানুষও ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। এমনকি আওয়ামী ঘরানার অনেকেই এটিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেননি। কিন্তু যেসব মনীষী তাদের কাজের মাধ্যমে যুগে যুগে বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ঋদ্ধ করেছেন, সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের নাম বাদ দেওয়া কেন? কোনো স্থাপনার নামকরণ নিছক শেখ হাসিনার আমলে হয়েছিল বলেই তা মুছে ফেলতে হবে– এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না।
বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর কোয়ান্টাম স্ট্যাটিস্টিকস সারাবিশ্বে আদৃত– কে না জানে! তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান। তিনি এমনই এক মনীষী, যাঁর নাম আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে একসঙ্গে উচ্চারিত হয়। সারাবিশ্বেই উচ্চতর বিজ্ঞানের ছাত্র মাত্রই বোসন কণার সঙ্গে পরিচিত, যা কিনা জগদ্বিখ্যাত এ দুই বিজ্ঞানীর নাম বহন করে চলেছে। এমন মানুষের নামে কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা থাকলে তা তো গোটা জাতির জন্যই গৌরবের বিষয়। কিন্তু শেখ হাসিনা মর্যাদা দিয়েছিলেন বলে তাঁকেও সরিয়ে দিতে হবে– এ কেমন কথা!
একই কথা খাটে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় কিংবা জীবনানন্দ দাশের ক্ষেত্রে। তারা তো আমাদের অহংকার। তাদের নাম বাদ দেওয়া হলো কোন যুক্তিতে? আর একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী জি সি দেব, ডা. আলীম চৌধুরী; তারা? তাহলে কি প্রকারান্তরে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর তদানীন্তন পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এবং তাদের দোসর আলবদর-আলশামসদের অপকর্মের চিহ্ন মুছে দেওয়ার প্রয়াস?
প্রশ্নগুলো আসছে এই কারণে যে, তাদের কেউ আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দোসর’ ছিলেন না; থাকার কোনো অবকাশও নেই। তারা প্রত্যেকেই বাঙালির ইতিহাসের একেকটি গৌরবদীপ্ত স্তম্ভ। তাহলে তাদের নাম মুছে ফেলা হলো কেন? একে সাধারণ কোনো সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক অভিলাষের প্রকাশ হিসেবে দেখলে ভুল হবে। অতীতে এমন যেসব পরিবর্তন হয়েছে, সেগুলো ছিল নিছক সাম্প্রদায়িক চেতনাজাত; কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হাতিয়ার। কিন্তু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টির শিকড় আরও অনেক গভীরে প্রোথিত বলেই প্রতীয়মান। এটি আসলে বাঙালি জাতিসত্তার অহংকারের চিহ্ন, সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার অপপ্রয়াস।
প্রশ্ন হলো, এ ক্ষেত্রে কি আমরা ইউক্রেন মডেলকেই অনুসরণ করতে যাচ্ছি? ইউক্রেনে ২০০৪ সালে ‘কমলা বিপ্লব’-এর পর সরকার দেশটির পুরোনো সব ঐতিহ্যস্মারক মুছে দিয়ে ইতিহাসের নতুন ‘বয়ান’ নির্মাণের পথে হাঁটা শুরু করে। কিন্তু এর ফল যে খুব সুখকর হয়নি, তা তো বর্তমানে দেশটির দিকে তাকালেই বোঝা যায়।
মহাভারতে খাণ্ডব নামে অরণ্য দগ্ধ করে তার সমুদয় প্রাণ উপহার দেওয়া হয়েছিল অগ্নিকে। পঞ্চপাণ্ডব এটা করেছিলেন অগ্নিকে সন্তুষ্ট করার জন্য। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাও এক প্রকার খাণ্ডবদাহন; বাঙালির ইতিহাসের খাণ্ডবদাহন। সময় থাকতেই বন্ধ করতে হবে ইতিহাসের এই খাণ্ডবদাহন।
মোশতাক আহমেদ: সাবেক জাতিসংঘ কর্মকর্তা ও কলাম লেখক
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত হয় ছ ল র র জন আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম
সন্তানের নাম দেওয়া একটি পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ দায়িত্ব। ইসলামে নামকরণ শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়, বরং এটি সন্তানের পরিচয়, যা চরিত্র ও ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
আধুনিক যুগে মুসলিম পরিবারগুলো সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রে এমন নাম খুঁজছে, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অথচ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, সংক্ষিপ্ত ও শ্রুতিমধুর।
ফলে ইসলামের আলোকে মুসলিম সন্তানের নামকরণের গুরুত্ব, আধুনিক নামের প্রবণতা এবং কীভাবে ইসলামি ও আধুনিকতার সমন্বয় ঘটানো যায়, তা নিয়ে আলোচনার দাবি রাখে।
ইসলামে নামকরণের গুরুত্বইসলামে সন্তানের নামকরণ একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের বেলায় পিতার দায়িত্ব হলো তাকে একটি সুন্দর নাম দেওয়া এবং তাকে ভালো শিক্ষা দেওয়া।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৯৪৯)
নাম শুধু একটি পরিচয় নয়, বরং এটি সন্তানের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ইসলামে নামের অর্থের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,১৯০)
এটি প্রমাণ করে যে নামের অর্থ সুন্দর, ইতিবাচক ও ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
আরও পড়ুনদস্তরখানের নামে সুরার নাম০৪ মার্চ ২০২৫রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন।আধুনিক নামকরণের প্রবণতাআধুনিক যুগে মুসলিম সমাজে নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নতুন প্রবণতা লক্ষ করা যায়। মা–বাবা এখন এমন নাম পছন্দ করেন, যা সংক্ষিপ্ত, উচ্চারণে সহজ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্য। যেমন ‘আয়ান’, ‘ইয়াসির’, ‘জায়ান’, ‘নুয়াইরা’, ‘আদিয়া’ ইত্যাদি নাম বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই নামগুলোর অর্থও ভালো, যেমন ‘আয়ান’ অর্থ ‘ঐশী উপহার’ এবং ‘নুয়াইরা’ অর্থ ‘আলো’ বা ‘দীপ্তি’।
আধুনিক নামের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো প্রায়ই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ। ‘রায়ান’, ‘ইমান’ বা ‘নূর’–এর মতো নাম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলা, আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষার শব্দের পাশাপাশি কিছু নাম স্থানীয় সংস্কৃতি থেকেও গৃহীত হচ্ছে, যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।
ইসলামি ও আধুনিক নামের সমন্বয়ইসলামি নাম বলতে শুধু আরবি নাম বোঝায় না। ইসলাম যেকোনো ভাষার নাম গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে, যতক্ষণ তা অর্থপূর্ণ ও ইতিবাচক। শায়েখ উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।’ (ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব, পৃষ্ঠা: ১২৫, দারুল ইফতা প্রকাশনী: ১৯৯৮)
আধুনিক নামকরণে এই নীতি মেনে চলা যায়। যেমন ‘তাহা’ (কোরআনের সুরার নাম), ‘ইলিয়াস’ (একজন নবীর নাম), ‘আমিনা’ (রাসুলের মায়ের নাম) ইত্যাদি নাম ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আধুনিক পরিবেশেও গ্রহণযোগ্য।
নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।শায়েখ সালেহ উসাইমিন (রহ.), ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারবএ ছাড়া ‘জায়নাব’, ‘ফাতিমা’, ‘আলি’, ‘ওমর’ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী নাম আজও জনপ্রিয় এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে।
আরও পড়ুনপাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করার নাম তওবা২৮ জানুয়ারি ২০২৫নামকরণে সতর্কতানামকরণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
প্রথমত, নামের অর্থ যেন ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। কোনো দেব-দেবীর নাম বা শিরকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাম ব্যবহার করা উচিত নয়।
দ্বিতীয়ত, জটিল বা উচ্চারণে কঠিন নাম এড়িয়ে চলা ভালো।
তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য গর্বের এবং সমাজে তার পরিচয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে।
অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘ডায়ানা’র মতো নাম অর্থের দিক থেকে সুন্দর হলেও ইসলামি পরিচয়ের সঙ্গে সব সময় মানানসই না–ও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মা–বাবাকে নামের অর্থ ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
মা–বাবার করণীয় অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।ইসলামে নামকরণের জন্য কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
প্রথমত, সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে নামকরণ করা সুন্নাহ। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৩২)
এই সময়ে আকিকা দেওয়ার রীতিও রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, নাম রাখার আগে পরিবারের সদস্য, আলেম বা বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য আত্মবিশ্বাসের উৎস হয়।
আধুনিক যুগে নামকরণের ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, বই ও অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ, অনেক সময় ভুল অর্থ বা অপ্রমাণিত তথ্য দেওয়া হতে পারে।
নাম শুধু একটি শব্দ নয়, এটি সন্তানের পরিচয়, চরিত্র ও সমাজে তার অবস্থানের প্রতিফলন। তাই মা–বাবার উচিত এমন নাম নির্বাচন করা, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও শ্রুতিমধুর।
আরও পড়ুন‘আল-ওয়াহিদ’ আল্লাহর অনন্য নাম২৩ জুন ২০২৫