সিলেট-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের নাম কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত শেরপুর সেতু। ক্ষতিগ্রস্ত এই সেতু মেরামতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এই সেতুতে দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলে ব্যাপক ঝুঁকি নিতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের। সেতুর ওপরের স্ল্যাব ভেঙে যাওয়ায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের (এন-২) কুশিয়ারা নদী অংশের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর এলাকায় একটি সেতু নির্মিত হয়। 
১৯৯০ সালে নির্মিত এই সেতুটির ডেকস্ল্যাব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক দিন ধরেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পরিবহন চালকদের। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়া সেতুর এক পাশে একেবারে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এতে করে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় ওই সেতু অংশে। 
সম্প্রতি জনদুর্ভোগ লাঘবে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত ডেকস্ল্যাব মেরামতের সিদ্ধান্ত নেয় মৌলভীবাজার সওজ। ২৮ ফেব্রুয়ারি সেতুর এই অংশের সংস্কারকাজ শুরু হবে। যার কারণে জাতীয় সড়কের মৌলভীবাজার অংশে যান চলাচল বন্ধ থাকবে অন্তত ১০ ঘণ্টা।
সওজের সংশ্লিষ্টরা জানান, সংস্কারকাজের কারণে যাত্রী সাধারণ ও পরিবহন শ্রমিকদের সাময়িক দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তবে বিভাগীয় হেড কোয়ার্টারের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত এই সেতুর সংস্কারকাজের কারণে বন্ধ থাকলেও সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে তিনটি বিকল্প রুটে যানবাহন চলাচল করবে।
স্থানীয়রা জানান, শেরপুর সেতুর এক পাশ ব্যবহার করে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে সড়কের এই অংশে। যার কারণে প্রতিদিনই সেতুর উভয় প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ওই সড়কে চলাচলকারীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কবি মহিদুর রহমান জানান, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে ঢাকার সাভারে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। বাসটি সাধারণত মৌলভীবাজার শহর থেকে সদর উপজেলার শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায় রাত সাড়ে ১০টায়। যানজটের কারণে সেটি সেদিন পৌঁছায় রাত সাড়ে ১২টায়। এতে করে অপেক্ষারত যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। এমন পরিস্থিতিতে সওজ ডেকস্ল্যাব মেরামতের উদ্যোগ নেয়।
ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মোহাম্মদ ফজলুল করিম স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাত ১১টা থেকে পরদিন ১ মার্চ (শনিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামত কাজ চলবে। এ সময় এ সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, সংস্কারকাজ চলাকালীন সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলো তিনটি বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে। মেরামত কাজ শেষে এই সড়কে যান চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক করা হবে।
বিকল্প সড়কগুলোর মধ্যে প্রথম রুটটি হলো ঢাকা-শায়েস্তাগঞ্জ-মিরপুর (বাহুবল)-শ্রীমঙ্গল- মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ হয়ে সিলেট। দ্বিতীয় রুট হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ-শেরপুর-মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ হয়ে সিলেট। অপর রুটে সুনামগঞ্জ জেলায় যাতায়াতকারী যানবাহনগুলো 
ঢাকা-শায়েস্তাগঞ্জ-সৈয়দপুর (নবীগঞ্জ), রানীগঞ্জ-জগন্নাথপুর হয়ে চলাচল করতে পারবে। 
২৩ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প পরিচালক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠিটির অনুলিপি সড়ক পরিবহন, সড়ক বিভাগ ও সেতু মন্ত্রণালয়, প্রধান প্রকৌশলী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরসহ ২৭টি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজার সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সদর উপজেলার শেরপুর সেতুতে সংস্কার কাজের জন্য নির্ধারিত দিনে ১০ ঘণ্টা সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রেখে সংস্কারকাজ পরিচালনার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সওজের এই কর্মকর্তা জানান, সেতুর  মেরামত কাজ চলাকালীন জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিকল্প তিনটি রুটে যান চলাচল অব্যাহত থাকবে। কাজ শেষ হলেই যথারীতি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও সংলগ্ন সেতুতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার লক্ষে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। জটিলতা না থাকলে নিয়মিত যান চলবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর বহন ব কল প এই স ত ম র মত

এছাড়াও পড়ুন:

চব্বিশ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়: ফুয়াদ

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার  আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘‘জুলাই, ২৪ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়। জুলাই থেকে শিখে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তাদের বাস্তবতা অওয়ামী লীগের মতো হবে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দীন মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন। 

আমার বাংলাদেশ পার্টির পটুয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক  প্রফেসর ড. এএসএম ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মেজর আব্দুল ওহাব মিনার ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসীর। আলোচনা শেষে উপস্থিত সবাই জুলাই আন্দোলনের প্রদর্শিত চিত্র ঘুরে দেখেন।

ইমরান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ