কলকাতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল
Published: 3rd, March 2025 GMT
গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি পর্যালোচনা ও বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৮৬তম বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (৩ মার্চ) ভারতীয় সময় সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ প্রতিনিধি দলটি কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপরেই সড়কপথে তারা যান হাওড়া রেল স্টেশন। হাওড়া থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরে তারা যাবেন মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি ভারতের নদী কমিশনের সদস্যরাও যৌথভাবে ফারাক্কা পরিদর্শন করবেন। পরে ফিরে এসে অংশ নেবেন বৈঠকে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসিবি) সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। তার নেতৃত্বে আছেন জেআরসিবি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিদরী জাহান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুজ্জামান, জেআরসিবি সদস্য (কারিগরি কমিটি) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (সিলেট) অতিরিক্ত মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (কুমিল্লা) অতিরিক্ত মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ঢাকা) হাইড্রো ইনফরমেটিক্স এবং ফ্লাড ফোরকাস্টিং বিভাগের সুপারিন্টেডেন্ট প্রকৌশলী ড.
আরো পড়ুন:
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন: ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের দল
মণিপুর নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বড় সিদ্ধান্ত
কলকাতায় আয়োজিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের হয়ে অংশ নেবেন বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া-১ অনুবিভাগের পরিচালক মো. মনোয়ার মোকাররম, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) তুষিতা চাকমা, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) আফজল মেহদাত আদনান প্রমুখ।
এদিন বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, এই সফরে তিস্তা জরিপ হবে না। এমনকি বৈঠকেও তিস্তা বিষয়ক কোনো আলাপও হবে না। এর জন্য একটা টেকনিক্যাল টিম আছে, তারা আলোচনা করবে।
মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, এই পরিদর্শন ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ এই সফরে কোনো বড় ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে না। মূলত কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত গঙ্গার চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবছর আমরা এই সফর করে থাকি।
গঙ্গার পানি বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ গঙ্গার পানির ওপর নির্ভরশীল। মূলত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এই পানির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
জানা গেছে, পাঁচ দিনের এই সফরে আগামী ৪ মার্চ ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর সন্নিহিত এলাকা পরিদর্শন করবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। ফারাক্কায় গঙ্গা নদীতে পানির স্তর, পানির প্রবাহ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখবেন তারা। ৫ মার্চ ফারাক্কা থেকে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা কলকাতায় ফিরবেন। এরপর ৬ এবং ৭ তারিখ ভারতের রিভার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে কলকাতার একটি পাঁচতারকা হোটেলে বৈঠক হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছরের। ২০২৬ সালে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
বাংলাদেশের সাথে গঙ্গা কিংবা তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কলক ত য জ আরস সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সাংলাং থেকে বেডং, সমুদ্র আমাদের সাথী
এলার্ম বেজে উঠলো ভোর ৪টায়। শুভ সকাল। আমি আর আকিক এক রুমে, মুনতাসীর ভাই আর চঞ্চল অন্য রুমে। সবাই জেগে উঠেছে একসাথে। ৫টায় বেরিয়ে পড়বে। কথা আর কাজে মিল রাখা চাই, মুনতাসীরের এক কথা। রেডি হয়ে সাইকেলে সব কিছু তুলে দিয়ে গ্লাভস পড়তে পড়তে ৫টা বেজে গেলো। রাতে সাইকেল পরিষ্কার করে ঠিকঠাক গুছিয়ে রেখেছিলাম যেন সকালে দেরি না হয়। মুনতাসীর ভাই রাতে পাউডার দুধের সাথে ওটস ভিজিয়ে রেখে দেয় বক্সে, এর সাথে খেজুর বাদাম মিশানো হয়। এরপর সুবিধাজনক জায়গায় বিরতি নিয়ে খেয়ে নেয়।
আমাদের গোছানো তখনো শেষ হয় নাই। মুনতাসীর ভাই রওনা দিয়ে দিয়েছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই প্যাডেল চালানো শুরু না করলে রোদের তাপ বাড়তে থাকবে, পরে চালাতে আমাদেরই কষ্ট হবে। প্রতিদিনই তাই আমরা চেষ্টা করেছি খুব ভোর বেলা বেড়িয়ে পড়তে। লং রাইডে প্রথম কয়েকটা দিন একটু অ্যাডজাস্টমেন্টে চলে যায়। এরপর থেকে শরীরে সয়ে যায়। ভোরের আলো ফোটার আগেই সাইকেল প্যাডেল চাপতে পারলে সূর্যের আলো ফোটার আগেই অনেকটা দূর পৌঁছে যাওয়া যায়।
আগেরদিন ম্যাপে দেখছিলাম দুইটা রাস্তা ধরে বেডং-এর পথে যেতে পারি। একটা পথ সমুদ্রের পাড় ধরে চলে গেছে, আরেকটা পথ ‘আলোর সেতার’র রাস্তা ধরেছে। গতকাল থেকেই আমরা আলোর সেতার ধরে চলেছি। কিন্তু এ জায়গা আর আসে না। সাংলাং থেকে চালিয়ে আসার কিছু দূর পরে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে একটা রাস্তা খুঁজে পেলাম। যেমন মাখন রাস্তা তেমন আবহাওয়া। মালয়েশিয়াকে ট্রপিকাল দেশগুলার মধ্যে অন্যতম বলা যায়। দিনের বেলায় থাকে বেশ গরম, রাতে ঝুম বৃষ্টি নেমে যায়। দিনেও বৃষ্টির কোনো ঠিক নেই। হুটহাট চলে আসে। একটা সাইড রোড ধরে বেশ কিছু দূর গিয়ে থামলাম। পানির বোতলগুলো ভরে নিতে হবে।
আমরা থামতেই রাস্তার পাশে এক বাড়ি থেকে কিছু ছেলে আমাদের দেখতে ছুটে এলো। তাদের মনে অনেক কৌতূহল আমাদের নিয়ে। পানির কথা বলতেই তারা আমাদের বোতলগুলো নিয়ে গেলো বাড়ির ভেতর। নতুন কোন দেশে গেলে তাদের ভাষা আয়ত্ত করতে পারলে সুবিধে হয়। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বা ভাবের আদান প্রদান করা যায়। একটু করে মালয় ভাষা শিখে নিলাম। ‘তারিকামাসি’ মানে ধন্যবাদ। ‘সালামাত দাতাং’ বা ‘সামা সামা’ মানে স্বাগতম। ‘কাকা’ মানে বোন আর ‘এবাং’ মানে ভাই। মালায়েশিয়া যেহেতু মুসলিম অধ্যুষিত দেশ তাই সালাম দিয়ে কথা শুরু করা যায়। ইংলিশ মোটামুটি বুঝে দোকানপাটে, তবে হোটেল বা বড় সুপারশপে অনেক বাংলাদেশি ভাইয়েরা কাজ করে। সুতরাং একবার বাঙালি পেয়ে গেলে কথাই নাই।
দুপুরের তপ্ত রোদে আমাদের গতি কিছুটা কমে এলো। আজকে দ্বিতীয় দিনেই একটু বেশি হয়ে গেলো মনে হচ্ছে। গতকালের মত ঘটনা। আমরা গুগলে যেখানে হোম স্টে দেখছি, আদতে সেখানে ঘর থাকলেও কথা বলার মতো মানুষ নাই। হয়ত নিজেদের ঘর ছেড়ে তারা অন্য শহরে বাস করে। সিজনে এইসব ঘর ভাড়া দেয়। মালায়েশিয়াতে এত বিরাণ ভূমি আছে জানাও ছিল না। একেকটা শহর থেকে অন্য শহরের দূরত্ব অনেক। থাকার জায়গা খুঁজতে খুঁজতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। হোটেল আকাসিয়াতে এসে ঠেকলাম। জায়গার নাম বেডং, কেডাহ জেলার মধ্যে পড়েছে। আমরা ৪ জন ছিলাম, দুই বেডের দুইটা রুম নিলাম। এখানে খাবারের ব্যবস্থা নেই। হোটেল থেকে দেড় কিলোমিটার হাঁটা দূরত্ব। হোটেলের ভেতরে সাইকেল সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এখন আর সাইকেলে চড়ার মতো অবস্থাও নেই তাই হেঁটেই রওনা হলাম।
হোটেলে ‘কোয়েটাও’ সুপ পেলাম, মুনতাসীর ভাইয়ের পছন্দের ফ্রেন্স ফ্রাই পাওয়া গেলো এবং নাসি গোরেং আয়াম। তৃপ্তি নিয়ে খেলাম সবাই। আকিক আমাদের সাথে দুইদিন আরাম আয়েশে চালালো। এখন তার নিজের গতিতে চালানো শুরু করতে হবে। ঠিক সময়ে কুয়ালালামপুরে ফ্লাইট না ধরতে পারলে আবার গচ্চা দিতে হবে। ‘জহুর বাহ্রু’ থেকে আবার তাকে কেএল ফেরত আসতে হবে। ক্লান্তিকর শরীর নরম বিছানা পাওয়া মাত্র মিউট হয়ে গেলো সুন্দর একটা ভোর দেখার অপেক্ষায়।
ভোরের এলার্ম সেট করা ছিলো ৪.৩০। সব গুছিয়ে রওনা দিতে ৫টা ৫০ বেজে গেলো। এখানে ভোরের আলো ফোটে প্রায় ৭টা বাজে। সুতরাং এখন অন্ধকারই বলা চলে। রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের কমতি নেই, তবে সব জায়গায় এক নয়। অন্ধকার পথ চলতে সাইকেলের সামনে পেছনে লাইট জ্বালিয়ে নিয়েছি। সেই আলো পথও দেখাবে আবার অন্য বড় গাড়ি থেকে আমাদের নিরাপদ রাখবে। কম আলোতে রাস্তার আশেপাশে যেহেতু দেখার মতো কিছু নাই তাই সাইকেলের গতি ভালই ছিল। হঠাৎ করে রাস্তার পাশে বিশাল বড় এক অজগর দেখলাম গুটি মেরে শুয়ে আছে। একঝলক দেখেই আঁতকে উঠেছিলাম। মৃত ভেবেছিলাম প্রথমে। বাকিরাও দেখলো, তবে সাপটা জীবিত ছিলো। গরমের কারণে কিংবা দুর্ঘটনায় এমন পড়ে রয়েছে। ভোরের দিকে আবহাওয়া স্নিগ্ধ থাকে। শুরুর দিকে গায়ে পাতলা জ্যাকেট চাপিয়ে চালানো শুরু করি, পরে গা গরম হলে খুলে রাখি।
গতকাল যেহেতু একটু লম্বা রাইড দিয়ে দিয়েছি আজকে তাই বেশি দূর আর যাবো না ঠিক হলো। তবে থাকার জায়গা নিয়ে প্রতিদিন আর প্যারা নেওয়া যাবে না। এখন থেকে ডেস্টিনেশন ঠিক করে আগে সেখানে হোটেলের নাম দিয়ে পিন পয়েন্ট করে নিলাম। ‘লরং তাম্বুন পেরমাই’ এই জায়গায় আমরা যদি পৌঁছাই তাহলে প্রায় ৬০ কিলোমিটার চালানো হবে। এই জায়গায় ম্যাপে গ্যালাক্সি হোটেল দেখা যাচ্ছে। এখানেই আজকের দিনে আমাদের গন্তব্য ঠিক করা হলো।
মুনতাসীর আর চঞ্চল অনেক দেশে এ পর্যন্ত সাইকেল চালিয়েছে। একেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা। প্রতিদিনই এসব বিচিত্র গল্প থেকে টুকরো স্মৃতি হাতরে গল্পের আসরে চলে আসে। যখন কোথাও বিশ্রামে বসি গল্পের শুরু বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, ভিয়েতনাম হয়ে আমেরিকা কানাডা মাদাগাস্কারে শেষ হয়। এর মধ্যে নেপালে আমি তাদের সাথে সাতদিন সাইকেল চালিয়েছিলাম। সেই স্মৃতিও আমার কাছে এখনো তাজা। দু’চাকায় দুনিয়া দেখার নেশায় রামনাথ বিশ্বাস, বিমল দে কোথায় কোথায় ছুটে চলেছেন। কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা তাদের। এমন পাগলামি করে লম্বা ট্রিপে বের হলেই কেবল বিচিত্র অভিজ্ঞতাগুলো সঞ্চয় করা যায়। আর একটা নতুন দেশকে ভালোভাবে কাছ থেকে দেখা তার মানুষজনের সাথে মেশার মোক্ষম সুযোগ কেবল দুচাকায় ঘুরলেই দেখা মেলে।
এখানে নিয়মকানুন লোকে ঠিকঠাক মানে। আমাদের দেশে লাইনে দাঁড়ানো বা সিগনালে দাঁড়ানোকে লোকে অবহেলা করে। ভোর ৪টায় বের হয়ে রাস্তায় মাত্র আমরা সাইকেল আরোহী তিনজন আর একটা দুইটা ট্রাক, পথের মাঝে লাল বাতি জ্বলে উঠলো সবাই দাঁড়িয়ে গেলো। অন্য প্রান্তে গাড়ির কোন পাত্তা নাই তাতে কি! রুল ইজ রুল, কেউ থাকুন বা না থাকুক নিয়ম মানতে হবে। এটা কিন্তু তাদের সব সময়কার অভ্যাস। আমাদের দেশে কেউ তোয়াক্কাই করবে না, কোন গাড়িঘোড়া নেই, আমি সিগনালে বসে থেকে কি করবো! সাইকেলকে এ দেশে বাহনই মনে করে। তাই প্রতিবারই হাত উঠালে বা সাইন দেখালে গাড়িগুলো আমাদের জায়গা করে দিয়েছে। বাংলাদেশে সাইকেলকে কেউ পাত্তা দেয় না, তাই কেউ সাইড দিতে চায় না।
অন্ধকার থেকে আলোর রোশনাই চোখে-মুখে পড়লো। রাস্তার চারপাশের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে গেলাম। সকালের নাস্তার জন্য আমাদের থামতে হবে। যেখানে পরোটা ডিম পাওয়া যাবে। নতুন জায়গা তাই রাস্তা দেখতে কিছু দূর পরপর থামতে হচ্ছে। ম্যাপ দেখে নিচ্ছে মুনতাসীর ভাই। আমি অভাগা ফোন হারা অনুসরণ আমার ধারা। চঞ্চলের কাছে সিম নাই তাই সেও বেশি দূরে যেতে পারবে না। নাস্তার বিরতি নিলাম। এরপর ভিন্ন একটা রস্তা ধরে আমরা ভুল করে অনেক দূরে চলে এলাম। আবার উল্টো এসে যে প্রধান হাইওয়েতে উঠলাম তাতে বড় একটা সাইন বোর্ড ছিল আর তাতে একটা চিহ্ন ছিলো যেখানে সাইকেলের ছবির উপরে ক্রস দেওয়া।
আমরা বেশ অনেকখানি এগিয়ে যাবার পরে পেছন থেকে পুলিশের গাড়ি এসে আমাদের পথ রোধ করলো। পুলিশ নেমে তাদের আইপ্যাড দিয়ে আগে আমাদের ছবি তুলল। এরপর আমাদের ব্যাপারে কিছু জানতে চাইল। আমরা আসলে সাইনবোর্ডটা দেখি নাই। কারণ আমি আর চঞ্চল সামনে ছিলাম, মুনতাসীর ভাই ছিল কিছুটা পেছনে। তিনি নাকি দেখেছিলেন এই সাইন কিন্তু আমাদের ডাক দেবার মতো উপায় না পেয়ে নিজেই চালানো শুরু করে দিয়েছে। সুতরাং দেখিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। আমরা ইতিমধ্যে কাজ সেরে ফেলেছি। পুলিশের কাছে এ যাত্রায় ক্ষমা চেয়ে আমরা অন্য পথে চালানো শুরু করলাম। পরে বিকালে আকিকের সাথে কথা বলে জানলাম, সে এই পথ দিয়েই অনেক দূর চলে গেছে আজকে। একা বলে পুলিশের নজরে পড়েনি। তবে পুলিশ জানালো এই রাস্তায় এত গাড়ি আর মোটরবাইক চলে তাই দুর্ঘটনা হয় প্রতিনিয়ত। আগের দিনও নাকি মোটরবাইকে একজন মারা গেছেন। আমাদের বিকল্প পথ ধরতে হলো। (চলবে)