দেশ ভেদে ইফতারের সংস্কৃতিতে রয়েছে নিজস্বতা। তবে কম বেশ সব দেশেই ভাজাপোড়া খাওয়ার চল রয়েছে। এ ছাড়া ইফতারে বিশেষ গুরুত্ব পায় ফল ও শরবত। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের ইফতার আয়োজন সম্পর্কে।
পাকিস্তান: বিশ্বের সবেচেয়ে বেশি মুসলিম বাস করে পাকিস্তানে। দেশটির ২৪ কোটি মানুষ মুসলিম। এই দেশে ইফতার আয়োজনে পানি এবং খেজুর থাকে। আরও থাকে মাংস ও রুটির মতো সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো। এ ছাড়া পাকিস্তানিরা ইফতারে নানা ধরনের কাবাব, তান্দুরি, কাটলেট, টিক্কা খেয়ে থাকে। ভাজাপোড়া খাবারের মধ্যে থাকে রোল, নিমকি, মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি করা এক ধরনের বিশেষ সমুচা, চপ ও পাকোড়া। ফলের তালিকায় থাকে নানারকম শরবত, ফল বা ফলের সালাদ, ছোলা-বুট, ফালুদা, জিলাপি। কিছু সংখ্যক মানুষ ইফতারে বিরিয়ানিও খেয়ে থাকেন। দেশটিতে ইফতারে বিশেষ কদর পায় রুহ আফজা।
ইন্দোনেশিয়া: ২৩ কোটি মানুষ মুসলিমের দেশ ইন্দোনেশিয়াতে ইফতারে থাকে বিভিন্ন রকম ফল এবং ফলের শরবত। আরও থাকে নানা রকম মিষ্টি জাতীয় খাবার। বুবুর চ্যান্ডিল নামক এক ধরনের মিষ্টান্ন রাখা হয় ইফতারে। যা মিষ্টি আলু দিয়ে তৈরি বিজি সালাক; কলা, মিষ্টি আলু অথবা কুমড়া দিয়ে তৈরি কোলাক; কলা দিয়ে তৈরি এস পিসাং ইজোসহ আরও নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার খায় ইন্দোনেশিয়ানরা।
আরো পড়ুন:
রোজাদারের জন্য আল্লাহর রয়েছে বিশেষ পুরস্কার
হিলিতে লেবুর দাম হালিতে বেড়েছে ৩০ টাকা
ভারত: ২০ কোটি মুসলিমের দেশ ভারত। দেশটিতে একেক রাজ্যের ইফতার আয়োজনে একেক খাবার জনপ্রিয়। যেমন, ভারতের হায়দ্রাবাদের মুসলিমরা ইফতারে হালিম খেতে পছন্দ করেন। আবার, কেরালা ও তামিলনাড়ুর মুসলমানরা ইফতার করেন 'নমবু কাঞ্জি' নামে এক ধরনের খাবার দিয়ে।যা মাংস, সবজি এবং পরিজের সমন্বয়ে তৈরি হয়। সামগ্রিকভাবে ইফতারে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়ার চল আছে। নানা ধরনের পাকোড়া, সমুচা, চপ ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়। দিল্লিসহ দেশটির উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ইফতারের শুরুতে পানির সাথে থাকে খেজুর, ছোলা-বুট, নানরকম ফল ও ফলের শরবত। আরও থাকে দুধ, ডিম, দইয়ের মতো খাবার। বিভিন্ন ধরনের কাবাব, হালিম, কাটলেট, শর্মা, স্যুপ, বিরিয়ানিও থাকে ভারতীয় মুসলিমদের ইফতারে।
বাংলাদেশ: ১৫ কোটি মুসলিমের দেশ বাংলাদেশ। এদেশের মানুষ ইফতারে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজির পাকোড়া খেয়ে থাকে। আরও থাকে মুড়ি, ছোলা বুট, জিলাপি, হালিমসহ নানা রকমের শরবত ও ফল। এসব হালকা খাবারের পাশাপাশি অনেক পরিবারে ইফতারের সময় হাতে তৈরি নানা রকমের পিঠা-পুলি, তেহারি, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, তন্দুরি চিকেনের মতো ভারী খাবার খাওয়ারও চল রয়েছে। তবে ফলের মধ্যে খেজুর প্রায় অপরিহার্যই বলা যেতে পারে। এটি ছাড়া বাংলাদেশি মুসলিমদের ইফতার টেবিল একরকম অসম্পূর্ণই বলা যায়।
মিশর: দেশটির প্রায় ৭৯ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী। এদেশে ইফতার মানেই একধরনের আনন্দ-উৎসব।মিশরের মুসলিমরা ইফতারের সময় মৃদু আলো দেয় এমন রঙ্গিন লণ্ঠন জ্বালিয়ে থাকেন। শুধু বাড়িতে নয়, পুরো রমজান জুড়ে সেখানকার পথেঘাটেও বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন আলো জ্বলতে দেখা যায়।
মিশরীয়দের ইফতারে আতায়েফ যা এক ধরনের প্যানকেক ও কুনাফা যা এক ধরনের সিরাপ থাকে। দেশটির অনেক পরিবার ইফতারে বাদামি রুটি এবং মটরশুঁটি, টমেটো, বাদাম ও অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি ‘ফুল মেদেমাস’ খেতেও পছন্দ করেন। আরও থাকে বিভিন্ন ধরনের ফল, ফলের রস, সবজি ইত্যাদিও থাকে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন ব ভ ন ন ধরন র এক ধরন র র ইফত র ইফত র র আরও থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
অতিরিক্ত গরমে পেট ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে
শরীরকে পানিশূন্য হতে দেবেন না
গরমে পেটের পীড়া তৈরির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে পানিশূন্যতা। গ্রীষ্মকালে প্রয়োজনের তুলনায় যেমন বেশি পানি খাওয়া হয়, তেমনি তা দ্রুত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়েও যায়। যে কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি খাওয়া প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানির অভাবে খাবারও ঠিকঠাক হজম হয় না। তৈরি হতে পারে কোষ্টকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি।
অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার ও পানীয় খাবেন নাগরমে ঠান্ডা পানি ও খাবারের লোভ সামলানো দায়। বাইরে থেকে এসে আইসক্রিম, ঠান্ডা পানি কিংবা জুস দেখলেই অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু এমন সময় ঠান্ডা খাবার ও পানীয় হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুনঠান্ডা-কাশি হলে কি টুথব্রাশ বদলানো জরুরি১০ এপ্রিল ২০২৫বাইরের খাবার বাদ দিনগরমকালে রাস্তার পাশে দেখা যায় শরবত, জুস কিংবা কুলফি মালাইয়ের দোকান। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো এ ধরনের পানীয় বা খাবার থেকে তৈরি হতে পারে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা রকম পেটের পীড়া।
খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম করবেন নাগ্রীষ্মকালে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম পেট একেবারেই নিতে পারে না। বিশেষ করে কিছুক্ষণ পরপর পানি খাওয়ার ফলে পেট সারা দিন ভরা ভরা লাগে। ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় খাবারের অনিয়মে। এই অনিয়ম থেকে হতে পারে পেটের পীড়া।
সূর্যের তীব্রতা থেকে নিজেকে আড়াল রাখুনসারা বছর যাঁরা ছোটখাটো পেটের পীড়ায় ভোগেন, গ্রীষ্মকালে তাঁদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে। কারণ, গ্রীষ্মকালে সূর্যের তীব্র আলো শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে। সেই প্রদাহ থেকে পেটে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনগরমে যেসব রঙের পোশাক পরলে আরাম পাবেন২২ এপ্রিল ২০২৫গরমেও সুস্থ থাকার উপায়পর্যাপ্ত পানি খান: গ্রীষ্মকালে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়। এই পানির অভাব পূরণ করতে প্রতিদিন তেষ্টা বুঝে পানি খান। পানির পরিবর্তে ডাবের পানি, ঘরে তৈরি জুস, লেবুর শরবত খেতে পারেন। তবে কৃত্রিম মিষ্টি থেকে দূরে থাকাই ভালো।
মৌসুমি ফল খান: আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু থেকে শুরু করে তরমুজ, বেল, বাঙি—বাহারি ফলের মৌসুম গ্রীষ্মকাল। এসব ফল পেট শান্ত রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ফলের রস পানিশূন্যতা দূর করতেও সহায়ক।
বাসার খাবার খান: গরমে বাইরের খাবার শরীরে বেশ বাজে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ঝাল, তেল, মসলা শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গ্রীষ্মকালে চেষ্টা করুন ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার। এতে পেটের ওপর চাপ কম পড়বে।
ঠান্ডা খেতে চাইলে: ঘরের বাইরে থেকে এসেই ঠান্ডা কিছু খাওয়া কখনোই ভালো নয়। খাইতে চাইলে কিছুটা সময় নিন। তবে ঠান্ডা খাবার বলতে কেবল আইসক্রিম কিংবা ঠান্ডা পানীয়ই নয়, বেছে নিতে পারেন দই, ঘরে তৈরি লাচ্ছি অথবা মালাই।
খাবারে অনিয়ম করবেন না: গ্রীষ্মকালে যতই পেট ভরা লাগুক না কেন, সময়মতো তিন বেলা খাবার খেতে ভুলবেন না। সময়মতো খাবার খেলে পেটের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায় সহজে।
সূত্র: জেম হসপিটাল ও কাইজেন গ্যাস্ট্রো কেয়ার
আরও পড়ুনগরমে ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস খাওয়া কি ঠিক০৬ এপ্রিল ২০২৫