খরচ কমাতে চান, কিন্তু সঙ্গী মানছেন না?
Published: 4th, March 2025 GMT
সাংসারিক সমস্যার সমাধানে আলোচনার বিকল্প নেই। আপনি নিজের ভাবনা আপনার সঙ্গীর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন, এমনটা যেন মনে না হয়। অর্থ নিয়ে যেন অনর্থ না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। তা ছাড়া এক দিনেই আপনি সাংসারিক সব খাতের ব্যয় সংকোচন করতে পারবেন, এমনটাও ধরে নেবেন না।
আলোচনার জন্য সময় রাখুনজীবনসঙ্গীর সঙ্গে আর্থিক বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট করুন। সাংসারিক প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহ কিংবা মাসের একটি দিন নির্ধারণ করুন। কেন আপনি খরচ কমাতে চান এবং তা পরিবারের জন্য কেন ভালো, তা এই সময় বুঝিয়ে বলুন সঙ্গীকে। কোন খাতে কতটা খরচ কমাবেন, কীভাবে কমাবেন, এসব নিয়ে নিজের পরিকল্পনার বিস্তারিত জানান। সঙ্গীর বক্তব্যও মন দিয়ে শুনুন। আলোচনার সময় উত্তেজিত হবেন না। সঙ্গী আপনার পরিকল্পনামাফিক কিছুটা খরচ কমাতে সমর্থ হলে তাঁর উদ্যোগের প্রশংসা করুন পরবর্তী সময়ে আলোচনার সময়।
দোষারোপ নয়, বুঝুন এবং বোঝানসঙ্গী বেশ খরুচে হলেও এ নিয়ে তাঁকে দোষারোপ করবেন না। প্রত্যেকের বেড়ে ওঠার একটা আলাদা গল্প থাকে। খরুচে জীবনযাপনে অভ্যস্ত ব্যক্তি হুট করে খরচ কমাতে পারবেন না, এটি আপনাকে মেনে নিতে হবে। আবার অতীতে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য না পাওয়া মানুষও জীবনের কোনো পর্যায়ে সুযোগ পেলে একটু খরুচে হতে চাইতেই পারেন। এই বাস্তবতাও আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে। তাই সঙ্গীর মানসিকতাটা বুঝতে চেষ্টা করুন। তাঁর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে দেখুন। সেই জায়গা থেকে পরিবারের কল্যাণ–ভাবনাটা কেমন হতে পারে, তা ধারণা করতে চেষ্টা করুন। আলোচনার সময় সেই আঙ্গিকেই আপনার ভবিষ্যৎ-ভাবনাটি ব্যাখ্যা করুন তাঁর সামনে।
আরও পড়ুনবছরের শুরু থেকেই খরচ বাঁচানোর এই ৭ পরামর্শ মেনে চলুন০৪ জানুয়ারি ২০২৫‘টাকা’ শব্দটির ওপর জোর দেবেন নাখরচ কমানো মানে অবশ্যই ‘টাকা’র খরচ কমানো। কিন্তু আলোচনার সময় টাকা শব্দটিতে জোর দেবেন না। বরং পরিবারের কল্যাণের ওপর জোর দিন। এই ইতিবাচক ভাবনার সঙ্গে নিশ্চয়ই আপনার আবেগ জড়িয়ে আছে। আলোচনার সময় সেই আবেগ প্রকাশ করুন সঙ্গীর কাছে। সংসারে কিছু টাকা কম খরচ করলেও সঙ্গীর প্রতি আপনার ভালোবাসা প্রকাশে যেন কোনো কমতি না থাকে।
দুজনে মিলেই মাসিক আয় ব্যয়ের পরিকল্পনা করুন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা
সময় বোধহয় আর ধোনির সঙ্গী নয়। একদিন যিনি ছিলেন আইপিএলের গর্ব, তার চেন্নাই সুপার কিংস আজ দাঁড়িয়ে কাঁপা কাঁপা পায়ে বিদায়ের মুখে। ঘরের মাঠে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে হারের পর ২০২৫ আইপিএলে প্লে-অফের সব আশা শেষ হয়ে গেল সিএসকের। ১০ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট—এ এক এমন ফলাফল, যা কেবল পরিসংখ্যান নয়, বরং একটা অধ্যায়ের মলিন পরিসমাপ্তি।
চেন্নাইয়ের এই হার ছিল কেবল একটি ম্যাচের পরাজয় নয়, ছিল হৃদয়ের গভীরে ঢুকে যাওয়া একটা কান্নার মতো। সেই কান্নায় ঝরে পড়লো মাহি নামের এক নীরব সৈনিকের অনেক না বলা কথা।
চাপা হতাশা নিয়েই মাঠে নামা চেন্নাই ব্যাটিংয়ে ভরসা রাখতে পারেনি। স্যাম কারানের ৮৮ রানের দাপটে চাহালের দুরন্ত হ্যাটট্রিকের কবলে পড়ে তারা গুটিয়ে যায় ১৯০ রানে। সেই লক্ষ্যে ব্যাট হাতে নামে পাঞ্জাব। যেখানে শ্রেয়াস আয়ার আর প্রবসিমরান সিংয়ের ব্যাটে খেলে গেল বিদায়ের রাগিণী।
আরো পড়ুন:
ধোনি ম্যাজিকে পাঁচ ম্যাচ পর চেন্নাইয়ের জয়
ধোনির কাছেই ফিরল চেন্নাই
ম্যাচ শেষে নম্র মুখে ধোনিকে দেখা গেল সিএসকের সিইও কাশী বিশ্বনাথনের পাশে। দুজনের মুখে না ছিল কোন উত্তেজনা, না হতাশার প্রকাশ। যেন বুঝে গেছেন— সময়ের নিয়ম মেনে সবকিছুরই শেষ আছে।
আইপিএলের ইতিহাসে এই প্রথমবার টানা দুই মৌসুম প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ চেন্নাই। এমনটা কখনও ঘটেনি। এমনটা কখনও কল্পনাও করেনি মাহির ভক্তরা। একসময় যেখানে চেন্নাইয়ের নাম মানেই ছিল ফাইনালের ঘ্রাণ, আজ সেখানে শূন্যতার সুর।
সবচেয়ে বিস্ময়কর ও বেদনাদায়ক চিত্র উঠে আসে তাদের ঘরের মাঠের পারফরম্যান্সে। ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে হেরেছে চেন্নাই, যা তাদের ১৭ বছরের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অধঃপতন। যে মাঠে একসময় ধোনির নেতৃত্বে জয় ছিল অভ্যাস, আজ সেখানে ভর করেছে দীর্ঘশ্বাসের সুর।
ধোনির বয়স বাড়ছে, গতি হয়তো আগের মতো নেই। চোটের কারণে অধিনায়ক ঋতুরাজ ছিটকে যাওয়ায় আবার কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে দলের ভার। কিন্তু সেই কাঁধে আর আগের মতো শক্তি নেই— আছে কেবল দায়িত্ববোধ আর বিদায়বেলার ঘন ধূসর আভাস।
ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। এই আইপিএলের শেষ চার ম্যাচ কি হবে তার অন্তিম অধ্যায়? না কি আরেকবার ফিরে আসবেন চুপচাপ, তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায়? হয়তো মৌসুম শেষে মৃদু হেসে কিছু বলবেন। অথবা বলবেনই না কিছু— যেমনটা ধোনি করে থাকেন।
এই আইপিএল, এই হার, এই নীরবতা— সব মিলিয়ে চেন্নাইয়ের হৃদয়ে লেখা হলো এক বিষণ্ন কবিতা। একটি গৌরবময় অধ্যায়ের শেষ লাইন যেন নিজেই লিখে ফেলেছেন ধোনি, শব্দ ছাড়াই।
ঢাকা/আমিনুল