রেজিস্ট্রার পদ নিয়ে ইবির ভিসি কার্যালয়ে হট্টগোল
Published: 4th, March 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে হট্টগোল হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, উপ-উপাচার্য ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ বিএনপিপন্থি এক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষকদের মধ্যে থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে। এ নিয়ে হট্টগোলের সময় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে গেলে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বাধা দেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা পরিচালক, প্রধান প্রকৌশলীসহ বেশ কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনায় বসেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এ সময় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক পদ থেকে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের অপসারণ দাবিতে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
তাদের দাবির মুখে এক পর্যায়ে প্রশাসন পরিকল্পনা পরিচালক ড.
এক পর্যায়ে হঠাৎ রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় কক্ষের মধ্যে উচ্চবাচ্য শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বাধা দেন। পরে তাদের উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকলে সমন্বয়ক এস এম সুইট ও ছাত্রদল নেতা সাহেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য এয়াকুব আলী প্রক্টর অধ্যাপক শাহিনুজ্জামানকে ‘জামায়াত’ আখ্যা দিলে দু’জনের মধ্যে সৃষ্টি হয় বাগ্বিতণ্ডা ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুইট বলেন, আগে দেখতাম ছাত্রলীগ পদ ভাগাভাগি নিয়ে হট্টগোল, প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করত। এখন ছাত্রদল একই পথে হাঁটছে। ভিসি কার্যালয়ে হট্টগোলের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা ভিসিকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছি।
শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার ওয়ালিদ হাসান পিকুলকে রেজিস্ট্রার বানানোর জন্য প্রো-ভিসি, ছাত্রদল নেতা সাহেদ, মিথুন উঠে পড়ে লেগেছেন। আমরা চাই জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের যোগ্য একজন ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার বানানো হোক। আর সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজ দলের কর্মীদের চেয়েও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের এমন আচরণের দায় ছাত্রদল নেবে না।
উপ-উপাচার্য এয়াকুব আলী বলেন, ভিসি কার্যালয়ে এক জুনিয়র শিক্ষক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। উপাচার্য এর বিচার না করলে আমি বিষয়টি অন্যভাবে দেখব।
উপাচার্য অধ্যাপক নকীব বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। যেহেতু শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে, সেহেতু আমরা উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ন ত উপ উপ চ র য ছ ত রদল র ন ত কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।