৫৩ বছরের রক্তস্নাত এই বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সরকারের শাসনামলে যেসব কদাচার-অনাচার-দুরাচারের ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত-অনভিপ্রেত। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম কিংবা জনপরিসরে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হলেও রাষ্ট্র পরিচালক, শাসক কিংবা দায়িত্বশীলরা তাতে বিচলিত হয়েছেন– এমন নজির খুব একটা নেই। কিন্তু এর ধারাবাহিকতা দেশের ইতিহাস কাঁপানো পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও দৃশ্যমান হবে, তা অনেকেরই কাছে অচিন্তনীয়।  

বিগত সময়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন পদে স্তাবকরা বসেছিলেন, যারা সরকারকে খুশি করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন, এমন নজিরও অনেক। এই স্তাবকদের যেন বিনাশ নেই। তারই নজির যেন সর্বসাম্প্রতিক দুটি ঘটনা। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো শামসুন নাহার হলের জায়গায় ছাত্রদের জন্য একটি হল নির্মাণ করা হবে এবং সেই হলের নামকরণ হবে পাকিস্তানের সাবেক স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পর সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বিতর্ক চলছে।  

প্রশ্ন উঠেছে, সিন্ডিকেটের মান্যবররা কি দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞাত?  ফজলুল কাদের চৌধুরী ওরফে ফকা চৌধুরীর মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্বের ভূমিকা কেউ কেউ বিস্মৃত হলেও ইতিহাসের পাতা থেকে তা মুছে যাবে না। জাতি হিসেবে আমরা বিস্মৃতিপ্রবণ বলে অপবাদ আছে। 

দ্বিতীয় প্রসঙ্গ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা থেকে জীববিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু, রসায়নবিদ ও শিক্ষাবিদ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, পদার্থবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসু, কবি জীবনানন্দ দাশ, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.

আলীম চৌধুরীর মতো মনীষীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নিয়ে সমালোচনার পর এখন সংশ্লিষ্ট কেউই তার দায় নিচ্ছেন না। নামকরণ প্রস্তাবনা কমিটি, সিন্ডিকেটসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। উপাচার্য মো. রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর ওপর দায় চাপানো ঠিক হবে না। তাহলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কি অভিভাবকহীন? সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কাছে এরও কি উত্তর নেই? এত অরুচিকর কর্মকাণ্ডের চারণভূমি যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কোনো ক্ষেত্র, তাহলে জাতির বাতিঘর বলে গর্ব করার কিছু থাকে কি? 

ব্যবস্থা ও অবস্থার প্রসঙ্গ উঠলেই যেন আমাদের বিধিলিপির প্রসঙ্গও সামনে চলে আসে। কিন্তু না; অনাচার-দুরাচার কিংবা কদাচার মেনে নিয়ে বিধিলিপি বলে আক্ষেপ করার অবকাশ নেই। জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জীবনানন্দ দাশ, ডা. আলীম চৌধুরীর মতো মনীষীদের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্য কি প্রজন্মকে ইতিহাস ভুলিয়ে উল্টোপথে নিয়ে যাওয়া? কিন্তু মনে রাখা বাঞ্ছনীয়, ইতিহাস যার যে অবস্থান নির্দিষ্ট করে দেয়। যে কোনো স্তর বা পর্যায়ের কেউই তা বাতিল করে দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। জোরজবরদস্তি করে তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারেন, কিন্তু ইতিহাসের পাতা ছিঁড়ে ফেললেই  ইতিহাস মুছে যায় না। নদী শুকায় প্রাকৃতিক ও মানবিক কারণে। নদীমাতৃক এ দেশে আমাদের নদীগুলোর ওপর এই দুইয়েরই আগ্রাসী থাবা পড়েছে। মানুষ নদীতে ঝাঁপায়; নদী পরিবেশ ও জীবন-জীবিকার অবলম্বন জেনেও নদীখেকোরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে নদীর ওপর। নদীর ওপর যখন ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন তো তারা আর মানুষ থাকে না, পরিণত হয় দৈত্যে। যারা ইতিহাসকেও মুছে দিতে চায়, প্রকারান্তরে তারা ওই কাতারেই পড়ে।  

চট্টগ্রাম ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের শুভবোধের উদয় হোক।  কর্তৃত্ববাদ শুভ ফল বয়ে আনে না– এরও নজির কম নেই। কর্তৃত্ববাদীরা যেন ভুলে না যান– মানুষের বুকের ভেতর ও চোখের সামনে আমাদের ইতিহাসের যে নদী রয়েছে, তা যতই উৎপীড়িত হোক, কিছুতেই তা নিঃশেষ হয়ে যাবে না। দার্শনিক ফ্রান্সিস বেকন বলেছেন, সত্যের তুলনায় মানুষের একাংশের পক্ষপাত মিথ্যার প্রতি বরং বেশি। বেকনের ওই  উপলব্ধি বর্তমান বিশ্বে আরও যেন বেশি প্রাসঙ্গিক। জুলাই-আগস্ট ২০২৪ আমাদের ইতিহাসের অধ্যায়ে অক্ষয় হয়ে থাকবে নিশ্চয়। ওই অধ্যায়ের সবচেয়ে বড় শিক্ষা মনে করি কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে সজাগ হওয়া; মেরুদণ্ড সোজা করে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো। স্তাবকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোও ওই অধ্যায়ের শিক্ষা বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতির উর্বর ক্ষেত্র কখনোই স্বেচ্ছাচারীদের চারণভূমি হতে পারে না; হতে দেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রজন্মকে বড় করবে; মেধার বিকাশ ও মুক্তির স্বপ্নকে সর্বক্ষণ সামনে রাখবে– এটাই তো স্বাভাবিক। কান্না নয়, হাসিটাই প্রধান হয়ে দাঁড়াক। বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট কেউই যেন আমাদের প্রত্যাশার অপমৃত্যু না ঘটান।

দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু: সাংবাদিক ও কবি  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত আম দ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম

সন্তানের নাম দেওয়া একটি পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ দায়িত্ব। ইসলামে নামকরণ শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়, বরং এটি সন্তানের পরিচয়, যা চরিত্র ও ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

আধুনিক যুগে মুসলিম পরিবারগুলো সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রে এমন নাম খুঁজছে, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অথচ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, সংক্ষিপ্ত ও শ্রুতিমধুর।

ফলে ইসলামের আলোকে মুসলিম সন্তানের নামকরণের গুরুত্ব, আধুনিক নামের প্রবণতা এবং কীভাবে ইসলামি ও আধুনিকতার সমন্বয় ঘটানো যায়, তা নিয়ে আলোচনার দাবি রাখে।

ইসলামে নামকরণের গুরুত্ব

ইসলামে সন্তানের নামকরণ একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের বেলায় পিতার দায়িত্ব হলো তাকে একটি সুন্দর নাম দেওয়া এবং তাকে ভালো শিক্ষা দেওয়া।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৯৪৯)

নাম শুধু একটি পরিচয় নয়, বরং এটি সন্তানের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ইসলামে নামের অর্থের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,১৯০)

এটি প্রমাণ করে যে নামের অর্থ সুন্দর, ইতিবাচক ও ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

আরও পড়ুনদস্তরখানের নামে সুরার নাম০৪ মার্চ ২০২৫রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন।আধুনিক নামকরণের প্রবণতা

আধুনিক যুগে মুসলিম সমাজে নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নতুন প্রবণতা লক্ষ করা যায়। মা–বাবা এখন এমন নাম পছন্দ করেন, যা সংক্ষিপ্ত, উচ্চারণে সহজ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্য। যেমন ‘আয়ান’, ‘ইয়াসির’, ‘জায়ান’, ‘নুয়াইরা’, ‘আদিয়া’ ইত্যাদি নাম বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই নামগুলোর অর্থও ভালো, যেমন ‘আয়ান’ অর্থ ‘ঐশী উপহার’ এবং ‘নুয়াইরা’ অর্থ ‘আলো’ বা ‘দীপ্তি’।

আধুনিক নামের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো প্রায়ই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ। ‘রায়ান’, ‘ইমান’ বা ‘নূর’–এর মতো নাম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলা, আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষার শব্দের পাশাপাশি কিছু নাম স্থানীয় সংস্কৃতি থেকেও গৃহীত হচ্ছে, যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।

ইসলামি ও আধুনিক নামের সমন্বয়

ইসলামি নাম বলতে শুধু আরবি নাম বোঝায় না। ইসলাম যেকোনো ভাষার নাম গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে, যতক্ষণ তা অর্থপূর্ণ ও ইতিবাচক। শায়েখ উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।’ (ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব, পৃষ্ঠা: ১২৫, দারুল ইফতা প্রকাশনী: ১৯৯৮)

আধুনিক নামকরণে এই নীতি মেনে চলা যায়। যেমন ‘তাহা’ (কোরআনের সুরার নাম), ‘ইলিয়াস’ (একজন নবীর নাম), ‘আমিনা’ (রাসুলের মায়ের নাম) ইত্যাদি নাম ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আধুনিক পরিবেশেও গ্রহণযোগ্য।

নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।শায়েখ সালেহ উসাইমিন (রহ.), ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব

এ ছাড়া ‘জায়নাব’, ‘ফাতিমা’, ‘আলি’, ‘ওমর’ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী নাম আজও জনপ্রিয় এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে।

আরও পড়ুনপাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করার নাম তওবা২৮ জানুয়ারি ২০২৫নামকরণে সতর্কতা

নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

প্রথমত, নামের অর্থ যেন ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। কোনো দেব-দেবীর নাম বা শিরকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাম ব্যবহার করা উচিত নয়।

দ্বিতীয়ত, জটিল বা উচ্চারণে কঠিন নাম এড়িয়ে চলা ভালো।

তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য গর্বের এবং সমাজে তার পরিচয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে।

অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘ডায়ানা’র মতো নাম অর্থের দিক থেকে সুন্দর হলেও ইসলামি পরিচয়ের সঙ্গে সব সময় মানানসই না–ও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মা–বাবাকে নামের অর্থ ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

মা–বাবার করণীয় অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ইসলামে নামকরণের জন্য কিছু নির্দেশনা রয়েছে।

প্রথমত, সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে নামকরণ করা সুন্নাহ। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৩২)

এই সময়ে আকিকা দেওয়ার রীতিও রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, নাম রাখার আগে পরিবারের সদস্য, আলেম বা বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য আত্মবিশ্বাসের উৎস হয়।

আধুনিক যুগে নামকরণের ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, বই ও অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ, অনেক সময় ভুল অর্থ বা অপ্রমাণিত তথ্য দেওয়া হতে পারে।

নাম শুধু একটি শব্দ নয়, এটি সন্তানের পরিচয়, চরিত্র ও সমাজে তার অবস্থানের প্রতিফলন। তাই মা–বাবার উচিত এমন নাম নির্বাচন করা, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও শ্রুতিমধুর।

আরও পড়ুন‘আল-ওয়াহিদ’ আল্লাহর অনন্য নাম২৩ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম