ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে মতামত জানাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে ‘একমত’, ‘আংশিক একমত’ এবং ‘ভিন্নমত’– এই তিনটি প্রশ্ন রয়েছে। সংস্কার বাস্তবায়নে পাঁচ বিকল্প দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। বিকল্পগুলো হলো– নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে, নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে, নির্বাচনের সময়ে গণভোটের মাধ্যমে, গণপরিষদের মাধ্যমে এবং নির্বাচনের পর সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে। ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র সমকালকে এসব তথ্য জানিয়েছে। 

রাজনৈতিক দলগুলোকে গত কয়েক দিনে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদন একীভূত করে দেওয়া হয়েছে। 

রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে একমত হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে হবে জুলাই চার্টার বা সনদ। দলগুলো একমত হলে পুলিশ, দুদক, জনপ্রশাসনসহ যেসব বিষয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন নেই, সেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংস্কার করবে সরকার। সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ যেসব বিষয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলো গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার করা যায় কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের সঙ্গেই গণভোট করা যায় কিনা, এ বিকল্পও রাখা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে। দলগুলো একমত হলে নির্বাচনের পর আগামী সংসদেও সংস্কার হতে পারে। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতারা গণভোট ও গণপরিষদের কথা বললেও বিএনপি এর ঘোর বিরোধী। একে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। তারা দ্রুত সংসদ নির্বাচন চায়। তবে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের নেতারা তাড়াহুড়া নয়, টেকসই সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছেন।  

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সমকালকে বলেন, বুধবার মতামত চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি বিকল্প দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কোন প্রক্রিয়ায় সংস্কার চায় তারা। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। 

যদিও কয়েকটি দলের অভিযোগ, তারা ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পুরোটা পায়নি। কোনো কোনো দল আংশিক পেয়েছে। একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, ২৫৪টি প্রস্তাব রয়েছে প্রতিবেদনগুলোতে। প্রতি প্রস্তাবের সঙ্গে তিনটি করে প্রশ্ন করেছে। একমত এবং আংশিক একমত হলে ‘টিক’ দিতে বলা হয়েছে। ভিন্নমত থাকলে তা বিস্তারিত লিখে সরকারকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ছয় মাসমেয়াদি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের সহসভাপতি।  নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধানরা ঐকমত্য  কমিশনের সদস্য।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কমিশন ২৭টি রাজনৈতিক দল এবং জোটের ১০০ প্রতিনিধির সঙ্গে প্রথম বৈঠক করে। 

এতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত চাওয়া হবে। এরপর  দলগুলোর সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসবে কমিশন। পরে আবার সব দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে সরকারপ্রধান বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কোনো দল যদি একটি সংস্কার প্রস্তাবেও একমত না হয়, তাতেও অসুবিধা নেই। কোন দল কতটি প্রস্তাবে একমত হয়েছে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ভিন্নমত থাকলে তা জানাতে পারবে কমিশনকে। কমিশন তা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করবে। 

১৫ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) এবং  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া দুই সংগঠনের নেতারা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে দল গঠন করেছেন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। 

এ দলও সংস্কারের সুপারিশমালায় মতামত জানাতে চিঠি পেয়েছে। দলটি সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। গণপরিষদে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলছে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শামরিন সমকালকে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের প্রস্তাব করা হবে। 

কোন দল কী মতামত জানাবে– এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, নির্বাচন ব্যাহত বা  বিলম্বিত হতে পারে– এমন সংস্কার প্রস্তাবকে সমর্থন করা হবে না। আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের জন্য অত্যাবশকীয় সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। যেসব সুপারিশ নির্বাচনের পরে বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো আলাদা করা হবে। রাজনৈতিক নেতারা জানিয়েছেন, সংস্কারের সুপারিশ পর্যালোচনা করে মতামত তৈরি করা হবে। দলীয় নেতার বাইরে বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বিএনপি নেতারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারে ছয় সংস্কার কমিশন গঠনের আদলে দলীয়ভাবে ছয়টি কমিটি গঠন করে। এই কমিটিগুলো অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার পর কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে মতামত তৈরি করা হচ্ছে। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিচ্ছে। 

দলটির নেতারা জানান, বিএনপি আগেই সংস্কার কমিশনগুলোতে দলীয় মতামত এবং প্রস্তাব লিখিত আকারে দিয়েছে। ঐকমত্য  সুপারিশমালা যে সংকলন তৈরি করেছে, তা পর্যালোচনা চলছে। সেখানে বিএনপির প্রস্তাব কমিশনগুলো কতটা আমলে নিয়েছে, কোন কোন সুপারিশ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তা জানার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে যেসব সুপারিশ বাস্তবায়নযোগ্য, তা আমলে নেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানান। 

বিএনপির দলীয় সংস্কার কমিটির এক নেতা সমকালকে জানান, ভিন্ন ভিন্ন সংস্কার কমিশন একই বিষয়ে আলাদা সুপারিশ করেছে। কমিশনগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে তা হয়েছে। আবার কিছু সুপারিশে অস্পষ্টতা, অসংগতি ও বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন রয়েছে, যা বাস্তবায়নে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। রাজনৈতিক দল বা শক্তিগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য সৃষ্টিতে বাধার সৃষ্টি পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রশাসন সংস্কার কমিটির প্রধান সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। খুব বেশি সময় লাগবে না। হয়তো দু-একদিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। পরে তা লিখিত আকারে জানানো হবে।

৩১ দফার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি বিএনপির নিজস্ব সংস্কার প্রস্তাব, যা দলীয় প্রতিশ্রুতি। এর সঙ্গে হয়তো সরকারের সংস্কার কমিশনের বেশি মিল থাকতে পারে, আবার বাইরে থেকেও কিছু অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। যেসব অমিল থাকবে, তা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব বলে আশাবাদী সালাহউদ্দিন আহমেদ।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ সমকালকে জানিয়েছেন, তারা কমিশনের সুপারিশ পেয়েছেন। মতামত দিতে কাজ চলছে।

১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানানোর অনুরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এত তাড়াহুড়োর তো প্রয়োজন নেই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সংস্কারের অভূতপূর্ব সুযোগ এসেছে জাতির সামনে। তা কাজে লাগাতে হবে। সংস্কার হতে হবে টেকসই। আবার অন্ততকাল সময়ও নেওয়া হবে না। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে বিচার-বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করে মতামত চূড়ান্ত করা উচিত। দেশের জন্য দলীয় স্বার্থে ঊর্ধ্বে উঠে সংস্কারে রাজি হতে হবে।’

চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনূস আহমাদ সমকালকে বলেন, ছয়টি কমিশনের সুপারিশের প্রশ্ন আকারে পেয়েছি। দলীয়ভাবে এগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়েছে ছয়টি বিশেষজ্ঞ দলকে।

সংস্কারের সুপারিশমালা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি সমকালকে বলেন, প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক দল একমত, নাকি আংশিক একমত– তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ভিন্নমত থাকলে তা জানাতে বলা হয়েছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সমকালকে বলেন, সংবিধান সংস্কারের সুপারিশমালার পাঁচ খণ্ডের মাত্র একটি পেয়েছি। প্রতিটি সংস্কারে প্রস্তাব যদি ২৫০ পৃষ্ঠারও হয়, তাহলে পড়তে ও বুঝতেও সময় দিতে হবে। একই অভিযোগ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, মাত্র একটি সংস্কারের সুপারিশমালার হার্ডকপি পেয়েছি। 

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল আলম বাবলু বলেন, সব সুপারিশ পেয়েছি। দলীয় নেতা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে কমিশনকে জানানো হবে।

বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম জানান, সব সুপারিশ পেয়েছেন। মতামত জানাতে প্রস্তুতি শুরু করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম মত মত জ ন ত সব স প র শ মত মত চ ব এনপ র ব কল প গণভ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়ে ১৫ অক্টোবর করেছে অন্তর্বর্তী সরকার ।

সোমবার  (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরো গভীর বাণিজ্য সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ

সংস্কার বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ঐকমত্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ: আলী রীয়াজ

ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছিল ১২ ফেব্রুয়ারি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শুরুতে ছয় মাস মেয়াদে গঠিত সাত সদস্যের এই কমিশনের মেয়াদ ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। তখন প্রথম ধাপে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এবার দ্বিতীয় ধাপে বাড়ানো হলো ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

কমিশনের কাজ হলো ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা।

নির্বাচন পদ্ধতি, সংবিধান, সরকার ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জুলাই সনদ, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হলেও তা চূড়ান্ত করে সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি। 

তবে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, জরুরি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন আয়োজন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। 

পূর্বাপর

রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগ এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনের ছাপানো কপি সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়।

এরপর ৫ মার্চ পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে পাঁচটি কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে মতামতের জন্য পাঠানো হয়।

এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক ৭০টি, নির্বাচন সংস্কার বিষয়ক ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ক ২৭টি সুপারিশ ছিল।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো সরাসরি প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়নযোগ্য হওয়ায় সেগুলো স্প্রেডশিটে রাখা হয়নি।

সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া অন্য পাঁচটি কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর তালিকা সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মোট ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোট তাদের মতামত কমিশনের কাছে পাঠায়, অনেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণও দেয়।

মতামত গ্রহণের পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মোট ৪৪টি বৈঠক হয়। কিছু দলের সঙ্গে হয় একাধিক বৈঠক।

প্রথম পর্বের আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়।

কোরবানির ঈদের আগে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা সংসদ ভবনের এলডি হলে শেষ হয়। এরপর ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা উদ্বোধন করে কমিশন।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করে কমিশন অগ্রাধিকার ও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মোট ২০টি বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা হয়।

আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে। ৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৩ দিন চলে এ আলোচনা।

সবশেষ জুলাই সনদের চূড়ান্ত সমন্বিত খসড়া মতামতের জন্য ২২ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়।

পরে দল গুলোর সাথে আরেক দফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত সনদের কপি রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হয়।

কিছুক্ষেত্রে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্টসহ) মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে এই চূড়ান্ত খসড়ায়। কিন্তু সেসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা সেখানে দেওয়া হয়নি।

এখন বাস্তবায়নের পথ খুঁজতেই দলগুলোর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করছে ঐকমত্য কমিশন।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল
  • সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি