চলমান সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছসাধনের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ-১ থেকে গত ৮ জুলাই জারি করা ওই নির্দেশনায় অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় ছাড়া অন্যান্য সব ধরনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে। উপসচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটিতে যানবাহন ক্রয়, নতুন ভবন নির্মাণ ও বিদেশ সফরের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে নির্দিষ্ট খাতের বরাদ্দ থাকলেও তা ব্যয় করা যাবে না। সকল ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে যানবাহন ক্রয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও ব্যয় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।
নতুন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যতীত অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয় করা যাবে না। তবে যেসব নির্মাণকাজ ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রসর হয়েছে, সেগুলো অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে শেষ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
সরকারি অর্থায়নে কোনো ধরনের বিদেশ সফর, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশনায়। তবে কিছু ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে। মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে বিদেশে অধ্যয়ন, বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ অর্থায়নে প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদেশ সফরের অনুমতি থাকবে। তাছাড়া, মৌলিক ও আবশ্যিক প্রশিক্ষণের বৈদেশিক অংশ গ্রহণের সুযোগও রাখা হয়েছে।
এছাড়া, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) ও ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট টেস্ট (এফএটি)-এর আওতায় বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা পরিপত্র অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সরকারি অর্থ ব্যয়ে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনতে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ শ সফর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল