Risingbd:
2025-07-10@14:18:22 GMT

ব্যয় সংকোচনে আরো কঠোর সরকার

Published: 10th, July 2025 GMT

ব্যয় সংকোচনে আরো কঠোর সরকার

চলমান সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছসাধনের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ-১ থেকে গত ৮ জুলাই জারি করা ওই নির্দেশনায় অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় ছাড়া অন্যান্য সব ধরনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে। উপসচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটিতে যানবাহন ক্রয়, নতুন ভবন নির্মাণ ও বিদেশ সফরের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে নির্দিষ্ট খাতের বরাদ্দ থাকলেও তা ব্যয় করা যাবে না। সকল ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে যানবাহন ক্রয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও ব্যয় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।

নতুন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যতীত অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয় করা যাবে না। তবে যেসব নির্মাণকাজ ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রসর হয়েছে, সেগুলো অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে শেষ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

সরকারি অর্থায়নে কোনো ধরনের বিদেশ সফর, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশনায়। তবে কিছু ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে। মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে বিদেশে অধ্যয়ন, বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ অর্থায়নে প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদেশ সফরের অনুমতি থাকবে। তাছাড়া, মৌলিক ও আবশ্যিক প্রশিক্ষণের বৈদেশিক অংশ গ্রহণের সুযোগও রাখা হয়েছে।

এছাড়া, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) ও ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট টেস্ট (এফএটি)-এর আওতায় বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা পরিপত্র অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সরকারি অর্থ ব্যয়ে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনতে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ শ সফর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি আরও বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয় কম। তবে দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বেশি। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে পিছিয়ে বা ঘাটতিতে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ঘাটতি আরও বেড়েছে।

এই বাণিজ্যঘাটতি বিবেচনায় এনে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর গত ২ এপ্রিল ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিল দেশটি। তবে আলোচনার সুযোগ রেখে তিন মাস শুল্ক কার্যকর পিছিয়ে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। সে জন্য গত তিন মাসে আমদানি বাড়িয়ে ঘাটতি কমানোর নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিল সরকার। তবে অর্থবছর শেষে সরকারের এসব উদ্যোগ বাণিজ্যঘাটতি কমায়নি, উল্টো দেশটি থেকে আমদানি কমে ঘাটতি আরও বেড়েছে।

শুল্কছাড়ের চেয়ে নীতিসহায়তা দেওয়া হলে বরং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ত। যেমন নীতিসহায়তা না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন বীজ আমদানি কমে গেছে।আমিরুল হক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডেল্টা এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের হিসাবে, সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য। দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল প্রায় ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ দুই দেশের বাণিজ্যে বাংলাদেশের হাতে বাড়তি রয়েছে ৬২৬ কোটি ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৭৬৭ কোটি ডলার। দেশটি থেকে আমদানি হয়েছিল প্রায় ২৬২ কোটি ডলার। তাতে ওই অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি ছিল ৫০৫ কোটি ডলার।

দুই অর্থবছরের তুলনা করে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে এ সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। তার বিপরীতে দেশটি থেকে আমদানি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হলেও ট্রাম্পের সূত্র উল্টো বিপাকে ফেলেছে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের। কারণ, নতুন শুল্ক কার্যকর হলে এই বাজারে রপ্তানি কমে যাবে।

ঘাটতি কমাতে সরকারের যা পদক্ষেপ 

গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশে পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চিঠি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। সেখানে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়।

আলোচনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গত ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ১১০টি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়, যা ওই দিনই কার্যকর হয়। সব দেশ থেকে আমদানিতে এই শুল্কহার প্রযোজ্য হলেও যুক্তরাষ্ট্র সুবিধা পাবে এমন বিষয় বিবেচনা রেখে এই পদক্ষেপ নেয় সরকার। বেসরকারিভাবে আমদানি বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি কেনাকাটা বাড়ানোর কথাও বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। 

সরকারি পদক্ষেপের প্রভাব কী 

সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধার কথা মাথায় রেখে যেকোনো দেশ থেকে ১১০টি পণ্য আমদানিতে কাস্টমস শুল্কছাড় দেওয়া হয়। শুল্কছাড় দেওয়ার পর মাত্র এক মাস সময় পেরিয়েছে। ফলে এই এক মাসে খুব বেশি প্রভাব পড়ার কথা নয়। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া প্রধান কয়েকটি পণ্যের আমদানির হিসাবে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। 

যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় রড তৈরির কাঁচামাল পুরোনো লোহার টুকরা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই পণ্যটি আমদানি হয় প্রায় ৬৭ কোটি ডলারের। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে আমদানি হয় ৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। একইভাবে সয়াবিন বীজ আমদানি হয় ৩৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ডলারে। আবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তুলা আমদানি হয় ৩৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৫১ লাখ ডলারে।

আমদানি বৃদ্ধি বা কমার বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্পাত ও সয়াবিন বীজ খাতের দুজন উদ্যোক্তা প্রথম আলোকে বলেন, শুল্কহার সব দেশের জন্যই সমান। বাজেটে শুল্কছাড়ও সব দেশের জন্য একই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষির জন্য শুল্কছাড় দেওয়া হলেও তাতে আমদানিতে মোটাদাগে প্রভাব পড়বে না। যে দেশ থেকে কম খরচে ভালো মানের পণ্য আমদানি করা যায় সেখান থেকেই ব্যবসায়ীরা আমদানি করেন। 

তবে সয়াবিন বীজ মাড়াই করে প্রাণিখাদ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান ডেল্টা এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, শুল্কছাড়ের চেয়ে নীতিসহায়তা দেওয়া হলে বরং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ত। যেমন সয়াবিন বীজ থেকে দেশে সয়াবিন তেল ও সয়া কেক উৎপাদন হচ্ছে। সয়াবিন বীজ থেকে প্রস্তুত পণ্য সয়া কেক আমদানিতে শুল্ক নেই। এখন সরকার যদি সয়া কেক আমদানিতে ন্যূনতম শুল্ক কর আরোপ করত তাহলে সয়াবিন বীজ আমদানিও বাড়ত। মানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই সয়াবিন বীজ আমদানি বেশি হতো। নীতিসহায়তা না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই পণ্যটির আমদানি কমে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিনিয়োগের সন্ধানে চীন যাচ্ছে বিডার প্রতিনিধি দল
  • যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি আরও বেড়েছে
  • চলতি অর্থবছরে ব্যয় সাশ্রয়ী নীতি অব্যাহত থাকবে
  • সরকারি দপ্তরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ
  • ট্রাম্পের নতুন শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আয় ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে
  • ট্রাম্পের শুল্ক: বড় ঝুঁকিতে ৮০১ রপ্তানি প্রতিষ্ঠান
  • জুলাইয়ের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি
  • ৩ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়
  • জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮৬%