নতুন ছয়তলা দুটি ভবন। পরিপাটি একেকটি কক্ষ। কোনোটিতে চার, কোনোটাতে দুই, কোনোটিতে একক শয্যা। নামমাত্র খরচে ৯১০ জন কর্মজীবী নারীর বসবাস করার কথা। কিন্তু, রহস্যময় কারণে ফাঁকা পড়ে আছে সব ঘর। চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের ৫৮ কোটি টাকার প্রকল্পে মিলছে না সুফল।
নারীদের বসবাসের জন্য এখানে রয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে পৃথক ডাইনিং, শ্রমিক প্রশিক্ষণ, বিনোদন ও পরিবারকল্যাণ সেবা সুবিধা। পাশে আরেক ভবনে ৫ শয্যার হাসপাতাল। চিকিৎসা দিতে নিয়োজিত আছেন চিকিৎসক ও নার্স।
এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের প্রকল্প কর্মকর্তা মো.

আবু আশরীফ মাহমুদ বলেন, ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কাজ ঠিক মতো হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গণপূর্ত এখন পর্যন্ত মতামত দেয়নি। এ কারণে হোস্টেল কক্ষগুলো খালি পড়ে আছে। গণপূর্ত থেকে মতামত পাওয়ার পর ব্যাচেলর শ্রমজীবী নারীদের কক্ষগুলো বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তবে গণপূর্ত চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কিউ এম শাহজালাল মজুমদার বলেন, শ্রম অধিদপ্তর থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমি পাইনি। এ সম্পর্কে জানিও না।
গণপূর্তের প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজমল হক বলেন, শ্রম অধিদপ্তর থেকে এ ধরনের চিঠি এসেছে কিনা, মনে করতে পারছি না। প্রকল্প ও নকশা শ্রম অধিদপ্তরের, আমাদের কেন মান দেখতে হবে তা বুঝতে পারছি না। তাদের নকশা বিভাগ মান যাচাই করতে পারে। আমাদের কাছে আসার বিষয়টি বুঝতে পারছি না।
গত বুধবার নগরের কালুরঘাট বিএফআইডি রোডের শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, গেটে কোনো পাহারাদার নেই। ভেতরে ঢুকতে বাঁ পাশের ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ধুলা ও ময়লা দেখা গেছে। শৌচাগারে ফিটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ফ্লোরে পড়া রং পরিষ্কার করা হয়নি। অন্য ভবনে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় প্রতিটি কক্ষ ধুলোয় একাকার।
শ্রম কল্যাণ সংগঠক মোহাম্মদ এমদাদুর রহমান জানান, হোস্টেল ভবনের নির্মাণকাজ অনেক আগে শেষ হয়েছে। শৌচাগারসহ ফিটিং ও ছোটখাটো কাজ ৬-৭ মাস আগে শেষ হয়েছে। কাজের মান ঠিক নাই এমন সন্দেহে নারীদের হোস্টেলে তুলতে সময় লাগছে।
চট্টগ্রাম শহরে ব্যাচেলর ফ্ল্যাট কিংবা বাসা ভাড়া পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় কর্মজীবী নারীদের। অনেককে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। এ বিষয়ে কালুরঘাট এপ্লিকা গার্মেন্টের কোয়ালিটি অফিসার নাজিয়া আফরোজ বলেন, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র আমাদের জন্য হোস্টেল করেছে এ রকম তথ্য জানা নেই। হোস্টেলে ব্যয় কম ও পরিবেশ ভালো হলে অবশ্যই থাকব।
চট্টগ্রাম শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা জানান, দিনে তারা অফিস করলেও রাতে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নেশাখোরদের নিরাপদ আড্ডার স্থানে পরিণত হয়ে এটি। ইদানীং আশপাশে চুরি বেড়েছে। হোস্টেলগুলো চালু না করলে ভেতরের পরিবেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে না।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) চট্টগ্রামের সভাপতি তপন দত্ত বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় হোস্টেলগুলো চালু করতে না পারাটা এক ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি। এভাবে ভবনগুলো কয়েক বছর পড়ে থাকলে জিনিসপত্র নষ্ট হবে, চুরি হবে, এর পর পরিত্যক্ত হয়ে সরকারের টাকা অপচয় হবে। কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে সুন্দর উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প গণপ র ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টাইন গায়িকাকে ছেড়ে কি ইতালিয়ান মডেলের প্রেমে মজেছেন ইয়ামাল

কয়েক মাস ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা নিয়েই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।

তবে ইয়ামাল নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শুধু একজনের সঙ্গে—আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র‍্যাপার নিকি নিকোল। সম্প্রতি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মাত্র তিন মাসেই নিকোলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে ইয়ামালের। চোট, ছন্দহীনতা, বিতর্ক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন...সবখানেই হোঁচট খাচ্ছেন বার্সেলোনার এই উদীয়মান উইঙ্গার।

কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও খবর এসেছে যে ইয়ামাল বিশ্বাসভঙ্গ করাতেই তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেছেন নিকোল। ইতালির মিলানে এক পার্টিতে দেশটির ২০ বছর বয়সী মডেল আনা গেগনোসের সঙ্গে নাকি বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে ইয়ামালকে। বিষয়টি জানতে পারাতেই নিকোল নাকি ইয়ামালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

তবে এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভি হোয়োসের অনুষ্ঠানে এসে ১৮ বছর বয়সী তারকা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা সব খবর ভিত্তিহীন।

আরও পড়ুনইয়ামাল কি সত্যিই ১৩ বছরের বড় মডেলের প্রেমে মজেছেন১৮ জুন ২০২৫

ইয়ামাল বলেছেন, ‘আমরা (তিনি ও নিকোল) এখন আর একসঙ্গে নেই। কিন্তু সেটা বিশ্বাসভঙ্গের কারণে নয়। আমরা শুধু আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যস, এইটুকুই। যা বলা হচ্ছে, কিছুই সত্যি নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি, অন্য কারও সঙ্গেও ছিলাম না।’

ইয়ামালের দাবি, যেসব সংবাদমাধ্যম গল্প বানিয়ে প্রতারণার খবর ছড়াচ্ছে, সেগুলো স্রেফ গুজব।

নিকি নিকোলও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাকে ঠকাত, আমি প্রথমেই সবাইকে জানাতাম। আগেও আমি তাই করেছি।’

২৫ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন গায়িকা উদাহরণ হিসেবে মেক্সিকান গায়ক পেসো প্লুমার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে এনেছেন। গত বছর প্লুমা প্রতারণা করায় নিকোলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।

আরও পড়ুনইয়ামালের গাড়ি বা বান্ধবী নয়, ওর খেলা দেখুন: স্পেনের কোচ২৬ আগস্ট ২০২৫

তবে ইয়ামালের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে সম্পর্ক ভেঙেছে। এখানে প্রতারণার কোনো ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন নিকোল, ‘আমরা আগেই আলাদা হয়েছি, শুধু ঘোষণা করিনি।’

ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর ইয়ামাল এখন ফুটবলে মনোযোগী হতে চাইছেন।

ইয়ামালের গোল উদ্‌যাপন। কাল রাতে এলচের বিপক্ষে

সম্পর্কিত নিবন্ধ