প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে আজ সোমবার নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট গবেষক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টাকে সহায়তা করবেন তিনি। তবে কাজ করবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। বিশেষ সহকারী পদে থাকাকালে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অর্থ মন্ত্রণালয়ে কীভাবে যুক্ত থাকবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আনিসুজ্জামান চৌধুরী যোগ্য ব্যক্তি। পুঁজিবাজার, আর্থিক খাতের সংস্কার, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর ইত্যাদি বিষয় তিনি গুরুত্ব নিয়ে দেখবেন। কাল (মঙ্গলবার) তাঁর কার্যপরিধি (টিওআর) ঠিক করা হতে পারে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তিনি অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র। পরে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা থেকে পিএইচডি ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় আজ সোমবার অনুষ্ঠিত ‘বিদেশে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার: গৃহীত পদক্ষেপ, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ বিষয়ক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন এত দিন।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড সাইকোলজি এবং অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স একাডেমি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স্কুল অব বিজনেসে একযোগে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ও থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাতিসংঘের শীর্ষ পদে ২০০৮-১৬ সময়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১-১২ সময়ে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন অর্থনীতির শিক্ষক। সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইংল্যান্ড (অস্ট্রেলিয়া) এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় শিক্ষকতা করেন তিনি।
‘জার্নাল অব দ্য এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমি’র প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি ১৯৯৫-০৮ সময়ে এ দায়িত্বে ছিলেন। এর সম্পাদকীয় পরিষদের সহসম্পাদক হিসেবে এখনো যুক্ত তিনি। ইকোনমিক অ্যান্ড লেবার রিলেশনস রিভিউর সম্পাদকীয় পরিষদেও তিনি আছেন।
পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি এবং ম্যাক্রো-ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা আছে আনিসুজ্জামান চৌধুরীর। তাঁর ৩০টির মতো বই রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মানের পত্রিকায় ১০০-এর বেশি জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে।
জানতে চাইলে আনিসুজ্জামান চৌধুরী আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের জন্য অনেক কাজ করার আছে। কাল অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি এবং তাঁর পরামর্শ নিয়েই কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ ষ সহক র ইউন ভ র স ট মন ত র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?
আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।
২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।
নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।