কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) গুতেরেস ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছাবেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। পরে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন। বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস হেলিকপ্টারে করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছাবেন।

সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্পের বিভিন্ন সুবিধা পরিদর্শন করবেন। তিনি ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টিপারপাস সার্ভিস সেন্টার ও একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা ঘুরে দেখবেন। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন।

আরো পড়ুন:

বন্ধু দেশ গাম্বিয়ার কাছে আরো বিনিয়োগ চান বাণিজ্য উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর উপলক্ষে উখিয়ার ১৮ ও ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যাপক সংস্কারকাজ করা হয়েছে। ওই এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। পাহাড়বেষ্টিত এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সেবা ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র সংস্কার করা হয়েছে। 

এসব স্থানে নতুন ইট বিছিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চেকপোস্ট। পুরো এলাকা কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, জেলা প্রশাসন এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘের মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। ক্যাম্পের প্রবেশ ও বাহিরপথ কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এসএসএফ পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করছে।”

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “এই সফর রোহিঙ্গাদের জন্য ঐতিহাসিক। এতে বিশ্ববাসীর কাছে বার্তা পৌঁছাবে যে রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায় কাজ করছে।”

রোহিঙ্গাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস:
জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার আগমনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তারা সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, কথা বলতে পারবেন, নিজেদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানাতে পারবেন এটাই তাদের জন্য আনন্দের বিষয়।

ক্যাম্প ১৮ এর রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ আলম বলেন, “ড. ইউনূস আমাদের দেখতে আসছেন, জাতিসংঘের প্রধানও আসছেন, এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”

তিনি আরো বলেন, ‘‘রোহিঙ্গারা এই প্রথম সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখতে পাবেন। তারা তার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা, ক্যাম্পে সুবিধা-অসুবিধার কথা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও জাতিংঘের মহাসচিবকে জানাতে পারবেন তারা।’’

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
  • দুবলারচরে পুণ্যার্থীদের যাত্রা শুরু
  • বর্ণিল আয়োজনে ১৯তম সিকৃবি দিবস উদযাপন
  • জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 
  • মিথ্যা প্রচার দিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে: মির্জা ফখরুল
  • বাংলাদেশের শত্রুতারা আবার মাথা মাথাচারা দিয়ে উঠতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল
  • বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাইজিংবিডির রুমন চক্রবর্তী
  • ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
  • ইসমাইল হোসেন (মুরুব্বী) এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া