নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্প, অপেক্ষায় লাখো রোহিঙ্গা
Published: 14th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) গুতেরেস ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছাবেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। পরে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন। বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব ক্যাম্পের বিভিন্ন সুবিধা পরিদর্শন করবেন। তিনি ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টিপারপাস সার্ভিস সেন্টার ও একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা ঘুরে দেখবেন। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন।
আরো পড়ুন:
বন্ধু দেশ গাম্বিয়ার কাছে আরো বিনিয়োগ চান বাণিজ্য উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা
প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর উপলক্ষে উখিয়ার ১৮ ও ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যাপক সংস্কারকাজ করা হয়েছে। ওই এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। পাহাড়বেষ্টিত এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সেবা ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র সংস্কার করা হয়েছে।
এসব স্থানে নতুন ইট বিছিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চেকপোস্ট। পুরো এলাকা কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, জেলা প্রশাসন এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘের মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। ক্যাম্পের প্রবেশ ও বাহিরপথ কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এসএসএফ পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করছে।”
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “এই সফর রোহিঙ্গাদের জন্য ঐতিহাসিক। এতে বিশ্ববাসীর কাছে বার্তা পৌঁছাবে যে রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায় কাজ করছে।”
রোহিঙ্গাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস:
জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার আগমনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তারা সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, কথা বলতে পারবেন, নিজেদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানাতে পারবেন এটাই তাদের জন্য আনন্দের বিষয়।
ক্যাম্প ১৮ এর রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ আলম বলেন, “ড. ইউনূস আমাদের দেখতে আসছেন, জাতিসংঘের প্রধানও আসছেন, এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”
তিনি আরো বলেন, ‘‘রোহিঙ্গারা এই প্রথম সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখতে পাবেন। তারা তার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন, নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা, ক্যাম্পে সুবিধা-অসুবিধার কথা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও জাতিংঘের মহাসচিবকে জানাতে পারবেন তারা।’’
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের মহান মে দিবস আজ
আজ ১ মে বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
বাসস জানায়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করতে হবে। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
আজ সকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।১৮৮৬ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকেরা কাজের সময়সীমা আট ঘণ্টা নির্ধারণ, কাজের উন্নত পরিবেশ, মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট আহ্বান করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেদিন দাবি আদায়ের জন্য পথে নেমে এসেছিলেন।
কিন্তু বিক্ষোভ দমনে সেদিন বর্বর কায়দা অবলম্বন করা হয়েছিল। পুলিশের গুলিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন শ্রমিকেরা। সে ঘটনায় তখন সারা বিশ্ব সোচ্চার হয়ে ওঠে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পায় শিকাগোর শ্রমিকদের আত্মদানের মধ্য দিয়েই।
সরকারের পক্ষ থেকে ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ পালনের নানা আয়োজন রয়েছে আজ। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
১৮৮৬ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকেরা কাজের সময়সীমা আট ঘণ্টা নির্ধারণ, কাজের উন্নত পরিবেশ, মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট আহ্বান করেন।কর্মসূচিমহান মে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শ্রমিক সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা।
আজ সকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ-স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে। এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।
মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে নয়াপল্টনে আজ বেলা দুইটায় শ্রমিক সমাবেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টির শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেলা তিনটায় আলোচনা সভা, জামায়াতে ইসলামীর শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পল্টন মোড়ে সকাল নয়টায় ও ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে সকাল ১০টায় শ্রমিক সমাবেশ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কমরেড মণি সিংহ সড়কে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল সাড়ে আটটায় সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।