এক কর্মকর্তার বদলি ঠেকাতে খামারবাড়িতে সড়ক অবরোধ, যানজটে চরম ভোগান্তি
Published: 16th, March 2025 GMT
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের উপপরিচালক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদের বদলি ঠেকাতে রাস্তা অবরোধ করেছে একদল মানুষ।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে খামারবাড়ি গোলচত্বর এলাকা অবরোধ করলে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়; এতে সেখান থেকে আশেপাশের এলাকাতেও যানজট ছড়িয়ে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।
এদিকে একই সময়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের কিছু কর্মকর্তা খামারবাড়ির ভেতরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তবে রোববার দুপুরে অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কর্মসূচির সঙ্গে তাদের সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। অনৈতিক ও শৃঙ্খলা বিরোধী এই কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানানো হয় বিবৃতিতে।
ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে কিছু মানুষ দুপুর ১২টার দিকে খামারবাড়ির খেজুর বাগান ক্রসিং সড়কটি অবরোধ করেন। এর ফলে মানিক মিয়া এভিনিউ দিয়ে মিরপুর কিংবা বিজয় সরণিগামী যানবাহনগুলো আটকা পড়ে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামার মুখও আটকে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ফার্মগেট থেকে আসাদগেট ক্রসিংয়ের রাস্তাটিও। দুপুর দেড়টার দিকে অবরোধকারীরা মূল সড়ক থেকে সরে এসে খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তেজগাঁও অফিসে যাচ্ছিলেন আরিফ হাসান। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি সমকালকে বলেন, ‘বাইক চালিয়েও একটু একটু করে রাস্তা আগাতে পারছি না। তীব্র রোদ আর গরম পড়েছে আজ, তারপর রোজা। এর মধ্যে সড়কের এমন বেহাল দশায় ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।’
ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ডিসি রফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দুপুর বারোটার দিকে কিছু মানুষ রাস্তা অবরোধ করার পরে ডিএমপির তেজগাঁও ক্রাইম ডিভিশনের কর্মকর্তারা এবং সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে। আন্দোলনকারীরা ১০ মিনিট সময় নিলেও পরের এক ঘণ্টা তারা রাস্তা ধরে রাখেন। আমরা তাদের বলেছি, রমজান মাস, মানুষ রোজা আছে। আপনাদের কারণে রোজাদারদের অহেতুক ভোগান্তি হচ্ছে। তবুও তারা সরেনি।’
বৃহস্পতিবার ডিএইর প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের উপপরিচালক মাহবুবুর রশীদকে মেহেরপুরের বারাদি হর্টিকালচার সেন্টারে উপপরিচালক পদে বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই মাহবুবুর রশীদের অনুসারীরা খামারবাড়িতে উত্তেজনা তৈরি করেন। মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হতে বাধা দেওয়া হয়। বিকেলে ১৫-২০ কর্মকর্তা ও বহিরাগত কিছু ব্যক্তি নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএইর প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের উপপরিচালক মুরাদুল হাসানের কক্ষে ঢুকে তাকে হুমকি দেন।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে তারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছাইফুল আলমের অপসারণ দাবি করেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য সচিব ছাড়া শীর্ষ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: খ ম রব ড় কর মকর ত খ ম রব ড
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।
তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’
ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।
দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।