দক্ষিণ এশিয়ায় ফ্যাসিস্ট ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান
Published: 18th, March 2025 GMT
ফ্যাসিস্ট ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা, শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হানি প্রতিরোধের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী ঐক্যবদ্ধ লড়াই ও জনমৈত্রী গড়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের ১১৭ জন নাগরিক। তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বসবাসরত শান্তিকামী মানুষ চলমান সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের আস্ফালন এবং ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা রুখে দিতে জনমৈত্রী বিস্তৃত করবে।
আজ মঙ্গলবার ১১৭ নাগরিকের পক্ষে গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন অ্যাকটিভিস্ট মারজিয়া প্রভা। সম্প্রতি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনগণের ওপর সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী আক্রমণ বৃদ্ধির নানা খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এই বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা তার একটি। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এবং তাদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে কোনো দেশেই সমস্যার সমাধান করা যায় না। শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত দাবিগুলো তাঁদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করাই কাম্য।’ যাদবপুরের শিক্ষার্থীরা যেভাবে কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কথা বলেছেন, তা অত্যন্ত সাহসী ও প্রশংসনীয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা তাদের এই মানবিক উদ্যোগের সঙ্গে পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দোলযাত্রার দিনে ভারতের বিভিন্ন স্থানে উগ্র দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠীস্বার্থের সুবিধার্থে সুপরিকল্পিত উসকানি দিয়ে ভারতীয় সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর যে হয়রানি ও ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তারও আমরা নিন্দা জানাই।’এতে বলায় হয়, কাশ্মীরসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান নেওয়া সবার দায়িত্ব। এই প্রতিবাদ শুধু নিজেদের অধিকারের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য এবং সব দেশের নিপীড়িত মানুষ, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও শ্রমজীবী মানুষদের পাশে দাঁড়ানো সব মুক্তিকামী মানুষের কর্তব্য। বিবৃতিদাতারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বসবাসরত শান্তিকামী মানুষ চলমান সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের আস্ফালন এবং ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা রুখে দিতে জনমৈত্রী বিস্তৃত করবে।
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, শিল্পী ও গবেষক অরূপ রাহী, লেখক পারভেজ আলম, আইনজীবী মানজুর আল মতিন, কবি তুহিন খান, শিক্ষক অলিউর সান, লেখক ও গবেষক সহুল আহমেদ, গবেষক মীর হুযাইফা আল মামদূহ, কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার তুহিন কান্তি দাশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।