রাজনৈতিক দল হিসেবে জাগপার নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ
Published: 19th, March 2025 GMT
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন।
নথিপত্রে দেখা যায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই জাগপাকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে নিবন্ধনে আইনি বিধিবিধানের শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি দলটির নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দলটির সভাপতি আইনজীবী তাসমিয়া প্রধান ওই বছরই রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে জাগপার নিবন্ধন বাতিল করে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারির ইসির সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী তাসমিয়া প্রধান (বর্তমানে জাগপার সভাপতি) নিজেই শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তুরিন সিফাত ও আরিফুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ইয়াছিন খান।
রায়ের পর আইনজীবী তাসমিয়া প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, জাগপার নিবন্ধন বাতিলের ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারির ইসির সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে জাগপাকে ইতিপূর্বে ইসির দেওয়া নিবন্ধন বহাল থাকছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২১ স ল র আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
অনেক হয়রানিমূলক, বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, অনেক হয়রানিমূলক, বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে। অন্যের জায়গা-জমি ও ব্যবসা দখল করার জন্যও মামলা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার পুলিশ-আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা। সেখানে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের আইনে কোথাও তো মামলা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া নেই। যে যার মতো মামলা করছে। এখানে অনেক হয়রানিমূলক মামলা হচ্ছে, বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে, অন্যের জায়গা-জমি দখল, ব্যবসা দখল করার জন্য মামলা হচ্ছে। এগুলো অত্যন্ত আনফরচুনেট (দুর্ভাগ্যজনক), অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। মামলা করে ফেলার পর পুলিশ-আদালত প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিকার দেওয়ার চেষ্টা করছি। যখন এত বেশি লোককে আসামি করা হয়, এত মামলা করা হয়, আমাদের জন্যও কঠিন হয়ে যায়।’
অধ্যাপক আসিফ বলেন, মামলা হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে অভিযোগের কোনো বস্তুনিষ্ঠতা পাওয়া না গেলে কাউকে যেন গ্রেপ্তার না করা হয়। আবার আদালতের পক্ষ থেকেও যেখানে বস্তুনিষ্ঠতা নেই, সেখানে যতভাবে আইনগত প্রতিকার দেওয়া সম্ভব, সেটি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে, আপনি ইরেশ যাকেরের নাম বলেছেন, এ রকম ছাড়াও আরও কিছু ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে, আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করব, মামলাগুলো যারা করে, তাদের একটু খুঁজে বের করেন। খুঁজে বের করে মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, তাঁদের উন্মোচন করেন। তাঁরা যদি কোনো হীন উদ্দেশ্যে, শত্রুতামূলক উদ্দেশ্যে, অন্যের ব্যবসা, জায়গা-জমি দখলের উদ্দেশ্যে কিংবা চাঁদার উদ্দেশ্যে এ ধরনের মামলাগুলো করে থাকেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ তাঁদের ভূমিকা প্রকাশ করেন, জনগণের কাছে দেখিয়ে দেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আরও কী ব্যবস্থা নেব, সারাক্ষণ এটা চিন্তাভাবনা করছি।’
এদিকে আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর চার কাজে বিড়ম্বনা কমানো, সময় বাঁচানো ও অর্থ ব্যয় কমানো তাঁর প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য ইতিমধ্যেই তাঁরা বেশ কিছু সংস্কারকাজ করেছেন বলেও জানান।
সংশোধনের কিছু উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, দেওয়ানি কার্যবিধির যুগান্তকারী বেশ কিছু সংশোধন করা হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের আগামী সভায় এটি চূড়ান্ত অনুমোদন হতে পারে।
ফৌজদারি কার্যবিধিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, দেশে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ৫ লাখ মামলা হয়। আর জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় ৩৫ হাজার মামলা। সংস্থাটিতে বছরে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হলে আদালতে মামলার চাপ কমপক্ষে ৪০ শতাংশ কমে যাবে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সেরা প্যানেল আইনজীবীর হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন আইন উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।