এই ৪ প্রবাদ থেকেই বোঝা যায়, ফিনল্যান্ড কেন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ
Published: 20th, March 2025 GMT
মারটেলার মতে, যে দেশের মানুষ সুখ খুঁজতে মরিয়া, তাঁদের মধ্যেই সুখ সবচেয়ে কম। সুখ খোঁজায় খুব বেশি মনোযোগ না দিলেই বরং সুখ এসে ধরা দেয়। এটিই মূলত ফিনিশদের সুখী হওয়ার মূলমন্ত্র। মানুষকে সুখী করার পেছনে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকে, এটা ঠিক। কিন্তু একটা জাতির নিজস্ব সংস্কৃতিতেও থাকতে পারে সুখী হওয়ার উপাদান। যেমন ফিনিশদের মধ্যে চারটি প্রবাদ খুব প্রচলিত। এই চার প্রবাদ থেকেই ধারণা করা যায়, কেন তাঁরা সুখী।
১.সুখ লুকিয়ে রাখো
ফিনল্যান্ডের মানুষ বিশ্বাস করেন, সুখ অন্যকে দেখানোর বিষয় নয়। এই আহ্বান মূলত এসেছিল ফিনল্যান্ডের জাতীয় কবি ইনো লিনোর কাছ থেকে। এ কারণেই ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির রাস্তায় দামি গাড়ি খুব একটা দেখা যায় না। এমনকি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সিইওরাও সাদামাটা ভলভো বা ভক্সওয়াগন চালান। অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এই তুলনা অনেক সময় আমাদের মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে কারণেই সুখ দেখিয়ে বেড়ানোর পক্ষপাতী নয় ফিনিশরা।
আরও পড়ুনমনে সুখ আনে যেসব খাবার১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫২. হতাশাবাদীরা কখনো হতাশ হয় নাএ কথাও ফিনিশদের মধ্যে প্রচলিত। তাঁরা মনে করেন, বাধাবিপত্তি জীবনেরই অংশ। তাই ধাক্কা তো আসবেই। যদি অপ্রাপ্তি, বাধা, ধাক্কার জন্য মনকে প্রস্তুত রাখি, তাহলে ভয় পাওয়ার কিছু থাকে না। ফিনিশরা বিশ্বাস করেন, যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, সব সময়ই এর থেকে আরেকটু ভালো থাকার উপায় আছে। কী নেই, সেদিকে নজর না দিয়ে যদি এখনো আমার হাতে কী আছে, এ নিয়ে ভাবি, তাহলে সামনে এগোনো সহজ হয়।
৩. মানুষ নিজেই নিজের সুখের কারিগরপ্রবাদটা এসেছে মূলত প্রাচীন রোম থেকে। এই প্রবাদের মূল কথা হলো—সুখ কেউ রুপার থালায় সাজিয়ে আপনার সামনে হাজির করবে না। আপনার জীবনের সুখের দায়িত্ব আপনারই। আশপাশের মানুষের কাছ থেকে কতখানি সহায়তা পাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করছে আপনার সাফল্য। প্রবাদটা বোঝাতে ফিনিশরা তাঁদের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা আইস-হকির উদাহরণ দেয়। আইস হকিতে আপনি যতই স্কোর করতে চান না কেন, যদি সতীর্থরা আপনাকে পাস না দেয়, আপনি গোলের দেখা পাবেন না। পারস্পরিক সহায়তাতেই সাফল্য পেতে হবে।
আরও পড়ুনঅন্যের সুখ দেখলে কেন খারাপ লাগে, জানেন? ২৪ জানুয়ারি ২০২৪৪. সুখ কারও কারও, গ্রীষ্ম সবারএ প্রবাদ ফিনল্যান্ডে প্রায় ১০০ বছর ধরে প্রচলিত। অধিকাংশ ফিনিশ বিশ্বাস করেন, জীবনে এমন কিছু কিছু ঘটনা ঘটে, যা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। যা আমার হাতে নেই, তা নিয়ে আমি কেন অস্থির হব! জীবন কখনো দেয়, কখনো কেড়ে নেয়। আজকে আমি ভালো অবস্থানে আছি, অন্য কেউ খারাপ অবস্থানে আছে। কাল হয়তো আমি খারাপ থাকব, অন্য কেউ ভালো থাকবে। তাই প্রবাদের মূল কথা হলো—হোক ধীরে বা শিগগিরই, গ্রীষ্ম সবার জীবনে আসবে।
আরও পড়ুনকিসে সুখ, হার্ভার্ডের ৮৫ বছরের গবেষণায় মিলেছে জবাব০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫