চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভূমিকা অনস্বীকার্য
Published: 23rd, March 2025 GMT
আমাদের শৈশবের একটা বিশাল অংশ বিটিভির নাটক ও চলচ্চিত্র দেখে কেটেছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ও নাটক আমাদের বেড়ে ওঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। মার্চ ও ডিসেম্বরজুড়ে প্রতি সপ্তাহে টেলিভিশনে নিয়মিত প্রচারিত হতো হাঙর নদী গ্রেনেড, আগুনের পরশমণি, ওরা ১১ জন। এসব চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে একরকম মুখস্থই হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু সময় বদলেছে। সংক্ষিপ্ত রিলস দেখে আর স্ক্রল করতে করতে বড় হচ্ছে এখনকার প্রজন্ম। তাদের অনেকেরই ইতিহাস জানার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সচেতন হয়েও দিন দিন নতুন করে আরও বিস্তৃতভাবে জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। অবশ্য তার কারণও রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর দেখা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে উদাসীনতা বাড়ছে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেইরূপ প্রপাগান্ডাও তারা ছড়াচ্ছে। ফলে, আমাদের অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন জাগা অস্বাভাবিক নয় যে আমাদের ইতিহাস কি বিকৃত হয়েছে? নাকি এখনো হয়ে চলেছে? রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে কি ইতিহাসও সুবিধাবাদীদের হাতে রূপ পাল্টায়?
আরও পড়ুনগণেশ্বরী পারের সাত শহীদ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশভাগের পর থেকে একাত্তর পর্যন্ত এ দেশের জনগণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে বারবার। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার ফলস্বরূপ আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি। ঠিক যেমন নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের পর আমরা একাত্তরের চেতনাকে ভুলিনি, তেমনই চব্বিশের স্বৈরাচার পতনের পরও আমাদের সেই চেতনাকে ভুলে যাওয়া চলবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধচর্চার প্রসার ঘটাতে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে ‘আমার ভাষা আমার চলচ্চিত্র’ অনুষ্ঠানে বিকল্পধারা ও মূলধারার রুচিসম্মত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র অন্যতম। ক্যাম্পাসে এমন চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আরও বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি, সচেতন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আলোচনা সভা, পাঠচক্র, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন জরুরি। শুধু অফলাইনে নয়, বরং অনলাইনেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে। যেন নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হয়।
আরও পড়ুনকে ছিলেন মধুদা১২ ডিসেম্বর ২০২২যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার ও লাইব্রেরিগুলোতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনেক বই ও গবেষণাপত্র রয়েছে, তবে সেগুলোর চর্চা সীমিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা বিসিএস কিংবা অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার এমসিকিউ ও লিখিত প্রস্তুতির প্রয়োজনে সাল, তারিখ, স্থান মুখস্থ করেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গভীর গবেষণার আগ্রহ তাঁদের মধ্যে সীমিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিভাগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণায় উৎসাহিত করা ও এ বিষয়ে প্রেজেন্টেশন, অ্যাসাইনমেন্টের পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন।
লামিয়া ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র ন র পর আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট