চার লেন উন্মুক্ত হওয়ায় ঈদযাত্রায় কমবে সময়
Published: 23rd, March 2025 GMT
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মূল চার লেন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় উত্তরের জেলাগুলোতে ঈদযাত্রায় সময় দুই ঘণ্টা কমবে। সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কোঅপারেশন (সাসেক)-২ প্রকল্পের আওতায় এই চার লেন বাস্তবায়ন হচ্ছে। গত শুক্রবার টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেন খুলে দেওয়া হয়। এতে স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে।
সাসেক-২ প্রকল্পের উপপ্রকল্প-৮-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড.
জানা যায়, প্রতি বছর ঈদের সময় যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে যানজটে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগে। স্বাভাবিকভাবে লাগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। রংপুর, বগুড়া ও গাইবান্ধা অংশে প্রকল্পের কাজ ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। সেতু-কালভার্ট, আন্ডারপাস ও উড়াল সড়কের কাজসহ অন্যান্য কাজ সামান্য কিছু বাকি রয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও রংপুরের শঠিবাড়ী এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কাজ সম্পন্ন করতে দেরি হয়েছে। এ অংশ ছাড়া বাকি সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি যেসব কাজ রয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায় ফ্লাইওভারের সঙ্গে অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্প কর্মকর্তা নাশিদ হাসান সিরাজী জানান, রংপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ৩২২ কিলোমিটার। অথচ সড়কপথে যেতে সময় লাগে প্রায় গড়ে ১০ ঘণ্টা। ঈদের সময় তা ২০ ঘণ্টায় ঠেকে। চার লেন খুলে দেওয়ায় ভোগান্তির অবসান হয়েছে।
এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়কের কাজ ২০১৯ সালের জুন মাসে শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারি ও বন্যার কারণে প্রকল্পের কাজে গতি কমে যায়।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখী যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে মহাসড়কে যানজট নিরসনে গাইবান্ধা জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের থানা মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের বিশেষ ক্যাম্প। মহাসড়কে সারাক্ষণ টহল দিচ্ছে পুলিশের টিম।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে টহলের পাশাপাশি চুরি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে যাত্রী ও পথচারীদের রক্ষা করতে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র গ ব ন দগঞ জ প রকল প র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।