যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে চাপ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
Published: 25th, March 2025 GMT
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ। যানজট না থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ। তবে অভিযোগ রয়েছে, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা থেকে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ভোর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করে। যানবাহনের চাপ বাড়লেও যানজট না থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে মহাসড়কের নগরজলফৈ, রাবনা ও এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঘরমুখো মানুষ বলছে, ৫০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন যাত্রীরা।
ষাটোর্ধ্ব হেনা বেগম বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে সিরাজগঞ্জের ভাড়া ৫০ টাকা। আজকে দুইশ’ টাকা দাবি করছে।” অপর যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, “৩০০ টাকার ভাড়া ৬০০ টাকা চাচ্ছে বাসের সহকারীরা। ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের গলা কাটা হচ্ছে।”
পাবনাগামী রহিম মিয়া নামের এক বাস চালক বলেন, “আগে ৩০ টাকা চাঁদা দিলেও আজকে ৫০ টাকা দিলেও নিচ্ছে না। তারা ৮০ টাকা চাঁদা দাবি করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
অপর চালক রুস্তম আলী বলেন, “ঢাকা থেকে যমুনা পর্যন্ত আসতে সর্বোচ্চ আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছে। মহাসড়কে গাড়ির চাপ আছে।”
যমুনা সেতু নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, স্বাভাবিক সময়ে যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৯৭ টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৫৫০ টাকা।
তিনি আরও জানান, স্বাভাবিক সময়ে সেতুর উভয় পাশে ১২টি বুথে টোল আদায় করা হলেও ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আলাদা মোটরসাইকেলের লেনসহ ১৮টি বুথে টোল আদায় করা হবে।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার এসআই নাজিম উদ্দিন বলেন, “বিকেল থেকে মহাড়কের মির্জাপুরের গোড়াই হতে সেতু পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার এলাকায় সাড়ে ৭০০ পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও মহাসড়কে দুর্ঘটনা কবলিত বা বিকল হওয়া যানবাহ দ্রুত অপসারণ করতে গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছয়টি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
ঢাকা/কাওছার/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক