Samakal:
2025-08-01@13:07:23 GMT

কাজলা নদীর বুকে ফসলের ঢেউ

Published: 28th, March 2025 GMT

কাজলা নদীর বুকে ফসলের ঢেউ

মেহেরপুরের কাজলা নদীটি নাব্য হারিয়েছে। 
পানিপ্রবাহের বদলে নদীর বুকে ঢেউ খেলছে ফসলের। নদী দখল করে ধান চাষ করেছে ভূমিদস্যুরা। এতে ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।
মেহেরপুরবাসীর দাবি, নাব্য হারানোয় দখলদাররা নদীতে ধান চাষ করার সুযোগ পেয়েছে। নদীটি পুনর্খনন করে মৎস্যজীবীদের ইজারা দিলে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব পেতে পারে। সেই সঙ্গে রক্ষা হবে পরিবেশের ভারসাম্য। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড মেহেরপুরের তথ্যমতে, জেলায় কাজলা নদীর দৈর্ঘ্য ৫৪ কিলোমিটার। ছোট নদী-খাল পুনর্খনন প্রকল্পের অধীনে ২০১১ সালে কাজলার ১০ কিলোমিটার খনন করা হয়। এই ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নদীর তিনটি জায়গায় খনন করা হলেও তা ভূমিদস্যুরা ভরাট করে ধান চাষ করছে। বাকি ৪৪ কিলোমিটার প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদে খনন করার কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এলাকাবাসীর দাবি, নদীর পুরো অংশ খনন না করলে খননের সুফল পাওয়া যাবে না। 
সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের ব্যবসায়ী আকতারুজ্জামান বলেন, দখলদাররা নদী দখল করে ধান চাষ করছে। ফলে হারিয়ে গেছে দেশীয় মাছ। এই নদী থেকে যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত, তারা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। 
মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জাহির হোসেন চঞ্চল বলেন, গবাদি পশুর গা ধোয়ানো থেকে ফসলের মাঠে সেচ দেওয়া– সবই কাজলার পানি দিয়েই হতো। নদীকে ঘিরে যেসব পাখির আনাগোনা ছিল, তারাও আর আসে না। ফলে নষ্ট হয়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। 
গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক একরামুল হক কাজলা নদীতে ধান চাষ করেছেন। তিনি বলেন, নদীর ধারে তাদের জমি আছে। তাদের জমির স্থান বরাবর তারা ধান চাষ করেন। তাদের জমি তারা দখলে না রাখলে অন্য কেউ দখলে নিয়ে চাষ করবে। সরকার নদী খনন করলে আর তারা চাষ করবেন না বলে জানান তিনি। 
আমঝুপি গ্রামের কৃষক ফকির মহাম্মদের ভাষ্য– কাজলা শুকিয়ে গেছে, ফাঁকা জমি পড়ে আছে। তাই তারা ধান চাষ করে খাদ্য উৎপাদন করছেন। কাজলা খনন করলে মাছ পাবেন, গবাদি পশুর গা ধোয়াতে পারবেন, ফসলের জমিতে সেচ দিতে পারবেন। তারাও চান কাজলায় খনন করা হোক। 
ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা বলেন, কাজলার মতো একটি প্রবহমান নদী এখন দখলদারদের দখলে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নদীটি দ্রুত খনন করার দাবি জানান তিনি। 
মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, প্রমত্তা কাজলা ক্রমেই পরিণত হয়েছে মরা খালে। নদীর বুকজুড়ে চলছে চাষাবাদ। যে নদীর পানি দিয়ে ফসলের জমিতে সেচ দেওয়া হতো, সেই কাজলার বুকেই শ্যালো মেশিন বসিয়ে ধানে পানি দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচাতে শিগগির কাজলা নদী খনন করে এর নাব্য ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে মত দেন তিনি। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড মেহেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান প্রধান বলেন, কাজলার খনন করা ১০ কিলোমিটার বাদে বাকি ৪৪ কিলোমিটার খননের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো 
হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সভা হলে নদীটির পুরো খনন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হবে। নির্দেশনা পেলে পুরোটাই খনন করার প্রস্তাব পাঠানো হবে। নদীটি খনন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ ন চ ষ কর ভ রস ম য পর ব শ র খনন সরক র ফসল র

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার