গাজীপুরের শ্রীপুরের সাতখামাইর এলাকায় ময়মনসিংহগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনের পাওয়ার কারে আগুন লাগার ঘটনায় আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় এই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে সোয়া ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে  আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দুপুর ১টার দিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন সরিয়ে নেওয়া হলে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। 

মহুয়া ট্রেনের পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছার আগেই ট্রেনের জেনারেটর বগিতে আগুন দেখতে পেয়ে ডাক-চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। এরপর ট্রেন থামিয়ে যাত্রীদের নামতে সুযোগ করে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। ততক্ষণে জেনারেটর বগি পুড়ে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে পুড়ে যাওয়া বগি সরিয়ে নিলে ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন যোগাযোগ চালু হয়।

আরো পড়ুন:

মহুয়া কমিউটার
আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল

গাজীপুরে মহুয়া কমিউটারে আগুন

মহুয়া ট্রেনের সহকারী লোকো মাস্টার চালক আজিজুর রহমান জানান, ট্রেনটি যখন সাতখামাইর রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছে তখন ট্রেনের ছাদে থাকা যাত্রীরা আগুন আগুন বলে ডাক-চিৎকার শুরু করলে তিনি ট্রেনের গতিরোধ করে থামিয়ে দেন। 

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো.

মামুন বলেন, বেলা ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সোযা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। 

তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জেনারেটরের অতিরিক্ত হিটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

ঢাকা/রফিক/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক

জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সালিসে আসা এক যুবককে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের মা আনারা বেগম এ কথা জানান।

গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (৩২)। তাঁর বাড়ি নগরের বলাশপুর এলাকায়। মায়ের দাবি, আল-আমিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সালিসে জমিজমার কাগজ ঠিক থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবক যুবলীগের সমর্থক। তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়েকবার বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁকে পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁকে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-আমিনের মা আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে বলাশপুর এলাকায় স্বামীর পেনশনের ১৭ লাখ টাকায় ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জমি কেনেন তাঁরা। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে নিজের কেনা জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ব্যক্তি ও তাঁর পক্ষের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। গত শনিবার রাত আটটায় থানায় সালিস শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সালিসে শেষ পর্যায়ে যখন জমির কাগজপত্র তাঁদের ঠিক পান সালিসকারীরা, তখন ওসি আল-আমিনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পেছনে পেছনে তিনি গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এরপর আল-আমিনকে গারদে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আমার ছেলে ব্যবসা করে। তাকে রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।’

২৭ জুলাই আল-আমিনকে আদালতে পাঠানোর প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশের টহল দল নগরের আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড় সেলফি নামের স্থানে পাকা রাস্তার ওপর একদল সন্ত্রাসী জনতাবদ্ধ হয়ে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরা, ২৫টি কাচের টুকরা জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ২৬ জুলাই রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ আল-আমিনকে যুবলীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে।

থানার ওই সালিসে থাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. বাবু বলেন, থানা চত্বরের একটি ঘরে এসআই সজীব কোচের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র বোঝেন, এমন লোকজন নিয়ে সালিস শুরু হয়। একপর্যায়ে আল-আমিনকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে থানা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিন আগে থেকে দারোগারা তাঁকে (আল-আমিন) ধরার জন্য খুঁজতেছে। ডেভিল হান্টের আসামি সে। আমাদের দুই দারোগা ছয় থেকে সাতবার তাঁর বাড়িতে রেড দিছে। সে যুবলীগের ফ্যাসিস্ট। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।’ ওসি বলেন, কোনো কাগজপত্র দিয়ে নোটিশ করে তাঁকে থানায় ডাকা হয়নি। বিচারক যদি মনে করে আমরা তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যারেস্ট করেছি, তাহলে আদালত ফাইন্ডিংস দেবেন। আসামিকে থানা থেকে গ্রেপ্তার করা কী নিষেধ আছে?’ আদালতের প্রতিবেদনে ভিন্ন স্থান দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জজ এটার বিচার করবে। যদি এমন কইরা থাকে, সমস্যা কী?’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
  • ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • ময়মনসিংহে ময়লা ছিটিয়ে টাকা ছিনতাই, দুই বছর পর ঢাকা থেকে আসামি গ্রেপ্তার
  • সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • ময়মনসিংহের সেই মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল, অপসারণের উদ্যোগ
  • ময়মনসিংহে বন্ধুর বাড়িতে যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ
  • টাঙ্গাইলে কুকুরের কামড়ে ২৫ জন আহত
  • জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক
  • ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, আজও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস