ধর্মীয় ও পারিবারিক উৎসবের আমেজে পবিত্র রমজানে এক মাস রোজা পালন করেছেন বিশ্বের মুসলিমরা। রোজা শেষে উদ্‌যাপন করেছেন পবিত্র ঈদুল ফিতরও। রোজা ও ঈদকে ঘিরে তাঁদের মধ্যে আনন্দ–আয়োজনের কমতি ছিল না। তবে এর মধ্যেই ‘বিচ্ছিন্নতা ও নিঃসঙ্গতা’কে পুঁজি করে পুরোটা সময় হয়তো কাটিয়েছেন কিছু মুসলিম। ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মকে গ্রহণ করেছেন তাঁরা। এমনটাই বলছে একটি দাতব্য সংস্থা।

‘নিউ মুসলিম সার্কেল’ নামের এই দাতব্য সংস্থা যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডের পিটারবরো শহরে অবস্থিত। সংস্থাটি নতুন মুসলিম হওয়া ব্যক্তিদের বিপৎসংকুল পথচলায় নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। তাঁদের নামাজ আদায় করা, রোজা রাখা ও পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত শেখানোর পাশাপাশি নিয়মিত দেখা–সাক্ষাৎ ও খাবারের ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে।

নাটালিয়া জামান ২০০৭ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। দাতব্য সংস্থাটি নওমুসলিমদের জন্য যেভাবে কাজ করছে, সে জন্য এটিকে একটি ‘নিরাপদ জায়গা’ ও ‘লাইফলাইন’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

মুসলিম হওয়ার পর লন্ডন থেকে ইংল্যান্ডের পিটারবরো শহরে চলে আসেন নাসিরাহ। বলেন, বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ ওই সময় অন্যের সমর্থন পেতে যে সংগ্রাম তাঁকে করতে হয়েছে, তাতে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

২০১৩ সালে নিউ মুসলিম সার্কেল প্রতিষ্ঠা করেন নাসিরাহ আলম (৪৭) নামের একজন নারী। তিনি বলেন, প্রতিবছর এ সংস্থা থেকে সহায়তা নেওয়া নতুন মুসলিমের সংখ্যা বাড়ছে। ২০ বছর আগে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে থাকার সময় তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

মুসলিম হওয়ার পর লন্ডন থেকে ইংল্যান্ডের পিটারবরো শহরে চলে আসেন নাসিরাহ। বলেন, বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ ওই সময় অন্যের সমর্থন পেতে যে সংগ্রাম তাঁকে করতে হয়েছে, তাতে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

পরে ২০ জনের মতো নারীকে নিয়ে শুরু করেন ওই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। এখন তাঁদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১০০। নতুন মুসলিম হওয়া পুরুষদেরও তাঁরা প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে থাকেন। পিটারবরো শহরের বাইরে ক্যামব্রিজশায়ারের ফেনল্যান্ডেও কাজ করেন তাঁরা।

নাসিরাহ আলম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ১৮ বছর থেকে শুরু করে প্রায় ৭০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা কাজ করছেন। তাঁদের কেউ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত, কেউ পূর্ব ইউরোপীয়, কেউবা ক্যারিবীয়। এ এক সত্যিকারের বৈচিত্র্যের সমাবেশ।’

ইসলাম চারিত্রিক শুদ্ধতার ওপরে জোর দেয়। তাই (ভিন্ন ধর্ম থেকে আসার পর) নিজেকে আরও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন হয়।নাসিরাহ আলম, দাতব্য সংস্থা ‘নিউ মুসলিম সার্কেল’ এর প্রতিষ্ঠাতা

‘লোকজন যখন ইসলামে দীক্ষিত হন, তখন তাঁরা নিজেদের একরকম হারিয়ে ফেলেন। তাঁরা মনে করেন যে অন্য কারও মতো হওয়ার জন্য তাঁদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, এটি রান্না করার বা পোশাক পরার নতুন উপায় হতে পারে। আমরা বলি, দেখো, তুমি এটি করতে পার; তবে তুমি যা তা–ই হতে পারবে’, বলেন নাসিরাহ।

নাসিরাহ বলেন, ‘ইসলাম চারিত্রিক শুদ্ধতার ওপরে জোর দেয়। তাই (ভিন্ন ধর্ম থেকে আসার পর) নিজেকে আরও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজন হয়।’

নাটালিয়া জামানের জন্মভূমি লাটভিয়ায়। মুসলিম হওয়ার আগে অর্থোডক্স খ্রিষ্টান ছিলেন তিনি। ইসলাম গ্রহণ করার প্রক্রিয়াকে তিনি ‘ধীরগতির ও দীর্ঘযাত্রার’ বলে উল্লেখ করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর দারুণভাবে ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ার অনুভূতির কথা স্মরণ করেন তিনি।

নাটালিয়া জানান, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর বন্ধুদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রথম দিকে নিজের নতুন ধর্মীয় পরিচয় গোপন করেছিলেন তিনি।
নাটালিয়া জামান বলেন, নতুন পরিচয় প্রকাশের কাজটি করতে ধাপে ধাপে এগোনোর প্রয়োজন ছিল। এ ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করেছেন, দিয়েছেন প্রয়োজনীয় সমর্থনও।

মুসলিম হওয়ার পর তাঁকে কিছু কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে উল্লেখ করে এই নারী বলেন, ‘আমার সঙ্গে একটা প্রতিবন্ধী সন্তান ছিল। আমারও ছিল কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এসব সমস্যা আমাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আকৃষ্ট করে এবং আমি খুবই ধর্মপ্রাণ মুসলিম হয়ে উঠি।’

নিউ মুসলিম সার্কেলের সহায়তা না পেলে তাঁকে সত্যিকার অর্থে সংগ্রাম করতে হতো বলে জানান নাটালিয়া। বলেন, ‘আমার কোনো ভাইবোন নেই। আমরা বড় পরিবারও নই। নিউ মুসলিম সার্কেলই আমার পরিবার হয়ে উঠেছে। এটি আমার নিরাপদ স্থান ও প্রাণশক্তি।’

‘নিজের পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন’

পিটারবরোর বাসিন্দা হেলে অলিভার। এই নারী বলেন, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন তিনি। এর আগে মুসলিম বন্ধুদের মাধ্যমে তিনি এ ধর্ম গ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তবে মুসলিম হওয়ার পর সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক কারণে ‘খুবই বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছেন বলে অনুভব করতে শুরু করেন।

হেলে বলেন, ‘নতুন মুসলিম হিসেবে আপনি আপনার ধর্ম পালনে সফল হতে চাইবেন, আত্মপরিচয় খুঁজতে চাইবেন। এসবের জন্য আপনার চারপাশের মানুষের সমর্থন প্রয়োজন।’

নওমুসলিম এ নারী বলেন, তাঁর পরিবার মনে করেছিল, তিনি ‘মগজধোলাই’ এর শিকার হয়েছেন। তাই ৯/১১ হামলা সংঘটিত হওয়ার পর তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাঁর চারপাশের পরিচিতজনেরাও তাঁকে স্বাগত জানাননি।

‘এমন পরিস্থিতিতে আপনি নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করবেন.

..জন্মগত মুসলিমদের কাছ থেকেও আপনি পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা না পেতে পারেন। এমনকি নিজের কাছ থেকেও নয়’, বলেন হেলে। তিনি আরও বলেন, ‘তাই, নিজেকে প্রশ্ন করুন—আমি কে? কারা আমার আপনজন? আমি এখন ধর্মান্তরিত অন্য মুসলিমদের মতোই নিজের গ্রহণযোগ্যতা না খুঁজে নিজেদের কাজ নিয়ে ভাবি।’  

নিজের পরিবার এখন তাঁর ধর্মবিশ্বাসকে মেনে নিয়েছে বলে জানান হেলে। আরও জানান, নিউ মুসলিম সার্কেল একটা ‘সেতুর’ মতো কাজ করার চেষ্টা করছে। শহরের মসজিদ, গির্জা, ফুড ব্যাংক ও কমিউনিটির অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছে তারা।  

হেলে বলেন, ‘ইসলাম ধর্মে নতুন দীক্ষিত হওয়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও যে স্বাভাবিক মানুষ, তা বোঝাতে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের লোকজন ও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।’

ঈদ এলে প্রায়ই নিজেকে ‘নিঃসঙ্গ’ বলে মনে হয়, এমনটাই জানান হেলে অলিভার। বলেন, ‘ঈদের সময় পার্কে গেলে আনন্দ হয় ও নিউ মুসলিম সার্কেল অনেককে একত্র করে। কিন্তু যখন বাড়িতে যাবেন, নিজেকে নিঃসঙ্গ মানুষের ভুবনে খুঁজে পাবেন।’  

যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান দ্য কনভার্ট মুসলিম ফাউন্ডেশন বলেছে, ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হতে নিজের সুচিন্তিত ও আধ্যাত্মিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয়। সঙ্গে আছে বৈষম্যের শিকার হওয়াসহ একগুচ্ছ ব্যতিক্রমী চ্যালেঞ্জও।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলছে, নিউ মুসলিম সার্কেলের মতো উদ্যোগগুলো নওমুসলিমদের নিরাপদ জায়গা করে দিয়ে ওইসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার পথ করে দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা ধর্মচর্চা, হাতে–কলমে ইসলাম সম্পর্কে জানা ও একই রকমের অভিজ্ঞতার শিকার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ট রবর পর ব র র পর ব ক জ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়া সংরক্ষণে কাজে আসেনি ২০ কোটি টাকার ‘গছানো’ লবণ

পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া পায় মূলত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলো। কিন্তু প্রতিবছর চামড়ার দর কমছে। প্রাথমিক সংগ্রহকারীরাও চামড়া সংরক্ষণে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাই এবার সরকার চামড়া সংরক্ষণ করার জন্য এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠানকে লবণ দিয়েছিল; কিন্তু এসব লবণ তেমন কাজে আসেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০ কোটি ব্যয়ে ১১ হাজার ৫৭১ টন লবণ কিনে ৬৪ জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রতিষ্ঠানকে লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়। লবণ নিয়ে বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। আবার তালিকায় নাম থাকলেও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের লবণ না পাওয়ার অভিযোগও আছে।

আমরা আড়াই মণ লবণ পেয়েছি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে চামড়া সংরক্ষণের দরকার পড়েনি। যারা চামড়া নিয়েছে, তাদের চামড়ার সঙ্গে লবণও দিয়ে দিয়েছিচট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আবু বকর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউছুপ

গত ২৭ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে লবণ কেনার জন্য বরাদ্দের নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষককে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তালিকা অনুযায়ী লবণ মিলমালিকদের কাছ থেকে জেলা প্রশাসকেরা লবণ সংগ্রহ করেন।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আবু বকর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউছুপ বলেন, তাঁরা এবার চামড়া সংগ্রহ করেছেন ৪৭৯টি। ঈদের দিন বিকেলে সংগ্রহ শেষে রাতেই আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই মণ লবণ পেয়েছি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে চামড়া সংরক্ষণের দরকার পড়েনি। যারা চামড়া নিয়েছে, তাদের চামড়ার সঙ্গে লবণও দিয়ে দিয়েছি।’

যাদের লবণ দিয়েছি, তার মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি বলে জানিয়েছে। তারা সেসব লবণ পাশের মাদ্রাসায় যেখানে বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, সেখানে হস্তান্তর করে।জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম

সংরক্ষণ না করলেও অনেক প্রতিষ্ঠানে লবণ দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় এতিমখানা কমদমোবারকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজন না থাকলেও লবণ নিতে বলা হয়েছিল। আমাদের যেহেতু দরকার হবে না, তাই আমরা নিইনি।’

চট্টগ্রামে ৯৮ লাখ ৪২ হাজার টাকায় ৬৪০ টন লবণ দেওয়া হয়। জোর করে লবণ বরাদ্দের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের লবণ দিয়েছি, তার মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি বলে জানিয়েছে। তারা সেসব লবণ পাশের মাদ্রাসায় যেখানে বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, সেখানে হস্তান্তর করে।’

খাগড়াছড়িতে বরাদ্দ লবণ দেওয়া হয়েছে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে। জেলার জব্বারিয়া আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় চার টন লবণ দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু আমরা চামড়া সংরক্ষণ করিনি।’

এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘চাহিদার ভিত্তিতে লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ যেহেতু আসছে তাহলে বিষয়টি রিভিউ (পর্যালোচনা) করতে হবে।’

ফেনীতে লবণ পেয়েও অনেক প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি। অনেকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লবণ নেয়নি। লবণ নিয়েছে এমন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ না করেই বিক্রি করেছে। চামড়া সংরক্ষণ করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।চামড়া সংরক্ষণ খুবই কম

ফেনীতে লবণ পেয়েও অনেক প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি। অনেকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লবণ নেয়নি। লবণ নিয়েছে এমন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ না করেই বিক্রি করেছে। চামড়া সংরক্ষণ করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।

ফেনীর দাগনভূঞার তালতলী কওমি মাদ্রাসার মুহতামিম কামরুল আহসান বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য ৬২ বস্তা লবণ তাঁদের জোর করে দেওয়া হয়। কিন্তু চামড়া সংরক্ষণ না করেই তাঁরা বিক্রি করেন। প্রতিটি লবণের বস্তা বিক্রি করেন ৩০০ টাকা দরে।

ফুলগাজীর নুরপুর দারুল উলুম মহিউসুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে তাঁদের লবণ নিতে বলা হলেও চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা নেননি।

তবে প্রয়োজন থাকলেও লবণ পায়নি এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ফেনী সদরের শর্শদি দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল করিম বলেন, তাঁরা এবার এক হাজার চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু তাঁদের লবণ দেওয়া হয়নি। কেউ এ বিষয়ে যোগাযোগও করেনি।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, চামড়া সংরক্ষণ করার উদ্দেশেই লবণ দিয়েছে সরকার। তবে লবণ নিয়েও কারও কারও চামড়া সংরক্ষণ না করার বিষয়ে শুনেছেন। লবণ না পেলেও তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।


[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ও সংবাদদাতা, ফেনী]

সম্পর্কিত নিবন্ধ