বাংলাদেশ অর্থনীতির সম্মুখ–অগ্রযাত্রাপথে অন্তরায় কী কী
Published: 10th, July 2025 GMT
একটি অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের হাল ধরার পর প্রায় এক বছর কেটে গেছে এবং একটি নতুন অর্থবছরের সূচনাও হয়েছে। গত বছরের পটপরিবর্তনের সময় বিভিন্ন অঙ্গনে বাংলাদেশের অর্থনীতি অত্যন্ত নাজিক অবস্থায় ছিল।
প্রাপ্ত সব তথ্য-উপাত্তই অর্থনীতির নানা দুর্বলতার দিকেই অঙ্গুলিনির্দেশ করছিল। এটা খুব পরিষ্কার ছিল যে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি সংকটের মধ্যে ছিল। গত ১২ মাসে কিছু কিছু উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের কিছু কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে, বিদেশ থেকে শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ বেড়েছে।
এসব সত্ত্বেও নানা অর্থনৈতিক অন্তরায় এখনো বিদ্যমান। যেমন যদিও মূল্য পরিস্থিতিতে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে, কিন্তু দেশের মূল্যস্ফীতি এখনো খুব বেশি। বাজারে চালের দাম এখনো কমেনি। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ এখনো বিরাজমান এবং তাঁরা এখনো স্বস্তির মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। লাখ লাখ মানুষ, প্রায় ৩০ লাখের মতো মানুষ কর্মহীন।
অর্থনীতিতে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি এবং ৩ দশমিক ৫ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এখনো খুব শ্লথ। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে আরও ৩০ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়তে পারেন। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থবছরের বাজেটকে ‘প্রথাগত’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং এ বাজেট জনগণকে উদ্দীপ্ত বা উজ্জীবিত—কোনোটাই করতে পারেনি।
এ পটভূমিতে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হচ্ছে যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় কী কী অন্তরায় আমাদের মোকাবিলা করতে হতে পারে। তিন রকমের অন্তরায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ যাত্রাপথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে—রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক। বাংলাদেশ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অন্তরায়গুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে চলবে না, বরং এগুলো দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক চালচিত্রের সঙ্গে জড়িত।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা একটি বড় সমস্যা, যা দেশের অর্থনীতির ওপর বিরাট একটা প্রভাব ফেলবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে—সংবিধান সংস্কার, জনপ্রশাসন কাঠামোর সংস্কার, রাজনৈতিক মতৈক্য এবং সর্বোপরি নির্বাচন ও নির্বাচনের সময়কাল। তিনটি বিশেষ পথ ধরে এসব রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাগুলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে।
প্রথমত: এসব রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে দেশি–বিদেশি কোনোরকমের বিনিয়োগই প্রত্যাশিত হারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আসছে না। বিনিয়োগের শ্লথগতি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। এর ফলে দেশে কর্মহীনতা বাড়ছে এবং দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ব্যাহত হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে আমাদের বাণিজ্য অংশীজনেরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত নয় এবং সে কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য চুক্তি করতে ইতস্তত করছে। যেমন তৈরি পোশাক খাতে বৈদেশিক চাহিদা প্রত্যাশিত হারে ত্বরান্বিত হয়নি।
তৃতীয়ত: রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নানা মহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দক্ষতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নানা প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। এ জাতীয় জনদৃষ্টিভঙ্গি একটি নাজুক অর্থনীতির উত্তরণের পক্ষে শুভ নয়।
সামাজিক অঙ্গনে, বাংলাদেশ অর্থনীতি নানা অন্তরায়ের সম্মুখীন। সমাজে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, সার্বিক একটি নিরাপত্তাহীনতার উপলব্ধি, দুর্নীতির বিস্তার ব্যবসা-বাণিজ্যকে শঙ্কিত করছে, যেখানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো কিংবা ব্যবসায়ীরা নিরাপদ বোধ করছেন না। এ অবস্থায় উৎপাদন, বাণিজ্য কিংবা সেবা প্রদান উন্নতি করতে পারে না। সেই সঙ্গে আমাদের সমাজে ‘মব সংস্কৃতি’ ব্যতিক্রম নয়, নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অঙ্গনেও সংঘাত এবং সহিংসতার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। দেশের ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নানা গ্যাং, রাজনৈতিক গোষ্ঠীর বেপরোয়া চাঁদাবাজি, অর্থ এবং নানা নিয়মবহির্ভূত সুবিধার বেআইনি দাবির শিকার হচ্ছে।
এসব ব্যবসার বিস্তারকে অবরুদ্ধ করে। যেকোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ, যত্রতত্র সমাবেশ, আন্দোলন এবং সেই সঙ্গে সংঘাত, সহিংসতা ও সংঘর্ষ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ জাতীয় কর্মকাণ্ড পরিবহন ও যাতায়াতব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে এবং দেশের প্রতি দিনকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করে। দেশের বর্তমান সামাজিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় বিরাট একটি অন্তরায়।
আগামী দিনগুলোতে নানা অর্থনৈতিক অন্তরায়ের সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ—এর কিছু কিছু দেশজ, কিছু কিছু বৈশ্বিক। দেশজ অঙ্গনে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে অব্যাহত থাকবে। শ্লথ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও বিস্তৃত কর্মহীনতা দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করতে থাকবে। দেশের কৃষি ও শিল্প উৎপাদন এখনো প্রার্থিত স্তরে পৌঁছায়নি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট এবং সেই সঙ্গে সামাজিক অস্থিরতা এই উৎপাদন স্তরকে আরও বিপর্যস্ত করতে পারে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব অব্যাহত থাকবে বলে মনে হয়।
সেখানে জনগণ এখনো কোনো স্বস্তির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছেন না, যদিও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন যে বর্তমান মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তাঁরা আরও আশা করছেন যে আগামী মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে।
দারিদ্র্যের বিস্তার এবং সেই সঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নাজুকতার সম্ভাবনার বৃদ্ধি আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে। নানা তথ্য-উপাত্ত থেকে দেশে দারিদ্র্যের বিস্তার এবং নাজুকতার গভীরতা সম্পর্কে একটি ধারণা করা যায়। যেমন নিম্ন আয়ের মানুষদের ৮৮ শতাংশ মানুষ দুই বেলা ভাত খেতে পান না। তাঁরা এক বেলা পাউরুটি কিংবা বিস্কুট খেয়ে কাটিয়ে দেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশ অর্থনীতির একটি সমস্যা হিসেবে বিরাজ করবে। একদিকে উচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় একটি সমস্যা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেয় ভর্তুকিও একটি ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি সম্পাদন এবং সেই সঙ্গে জ্বালানি উৎপাদনে আমদানি করা উপকরণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়।এসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাঁদের মাসিক আয় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে, তাঁদের তিন-পঞ্চমাংশ মানুষ আজকাল সকালের নাশতা খান না, কারণ, সেটা খাবার মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই। এ প্রবণতা চলতে থাকলে পুষ্টিহীনতা একটি মানব উন্নয়ন সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে, বিশেষত: শিশুদের মধ্যে। দেশে অসমতা ঊর্ধ্বমুখী এবং বৈষম্য শুধুমাত্র আয় ও সম্পদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বৈষম্য আজ সুযোগের মধ্যে বিস্তৃত।
এসব সুযোগের মধ্যে আছে শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিগমনের সুযোগ। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশি সমাজে সার্বিক অসমতার অন্যতম চালিকা শক্তি হবে সুযোগের বৈষম্য।
যদিও দেশের ব্যাংকিং খাতে কিছু কিছু উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেমন বিধিনিষেধের যথাযথ প্রয়োগ, অর্থ পাচার বন্ধ ইত্যাদি; কিন্তু ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যাংকিং শৃঙ্খলা প্রয়োগ এখনো অর্জিত হয়নি। কু-ঋণ, ঋণের অপর্যাপ্ততা, অদক্ষতা ও অ-কার্যকারিতা, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এ খাতের সমস্যা হিসেবে এখনো বিরাজ করছে।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুত একটি সু-অবস্থানে আছে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে এটা কি অধিক পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে, না কি বৈদেশিক খাতে কাঠামোগত উন্নতির ফলে?
আগামী দিনগুলোতে সরকারি ঋণ একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হবে। বর্তমান অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারি ঋণ ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত ৩ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে—৫ লাখ কোটি টাকা থেকে ৯ লাখ কোটি টাকায়। বর্তমান বছরের প্রথম তিন মাসে বেসরকারি খাতের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪৫ কোটি ডলার বেড়ে গেছে।
বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের অতিরিক্ত সময় শিগগিরই উতরে যাবে। তখন ঋণ পরিশোধের চাপ অর্থব্যবস্থায় টের পাওয়া যাবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০২৮ সালের অর্থবছর নাগাদ সরকারের ঋণভার ২৮ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যা বাংলাদেশ অর্থনীতির একটি সমস্যা হিসেবে বিরাজ করবে। একদিকে উচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় একটি সমস্যা, অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেয় ভর্তুকিও একটি ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি সম্পাদন এবং সেই সঙ্গে জ্বালানি উৎপাদনে আমদানি করা উপকরণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়।
জ্বালানি খাতে যথাযথ সমন্বয়ের অনুপস্থিতি এবং সেই সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় আরও বাড়িয়ে দেয়। জ্বালানি খাতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া দেয়, তার বেশির ভাগটাই ভোগ করেন সমাজের ধনাঢ্য ও সম্পদশালী অংশ। আমাদের জ্বালানি খাতে দেয় ভর্তুকির ৫৪ শতাংশই যায় আমাদের দেশের ৪০ শতাংশ সবচেয়ে সম্পদশালী গোষ্ঠীর কাছে।
আগামী দিনগুলোতে রাজস্ব আদায়ের শ্লথতা বাংলাদেশের জন্য একটি উন্নয়ন সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে। ২০২৪-২৫ সালের অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল এক লাখ কোটি টাকা। এই ঘাটতির নানা কারণ রয়েছে। যেমন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের শ্লথতা, বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ছাঁটাই, বেশ কিছুদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধর্মঘট ও কর্মবিরতি। অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য মনে করেন যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাই বাস্তবসম্মত ছিল না।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে এসব প্রবণতার কিছু কিছু আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। সুতরাং রাজস্ব আদায়ের সমস্যাগুলোও আগামী সময়েও দেখা যাবে। অধিকন্তু এখনো বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ আয়করের মতো প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে মূল্য সংযোজন করের মতো অপ্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি নির্ভর করে। প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে অধিকতর রাজস্ব আহরণ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের শর্তও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
বৈদেশিক খাতে বাংলাদেশের অর্থনীতি তিনটি বিষয়ে চাপের সম্মুখীন হবে। প্রথমত: এ বছর এবং আগামী বছরও বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি প্রবৃদ্ধি-শ্লথতায় ভুগবে। এর নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতি এড়াতে পারবে না। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক-লড়াইয়ের কারণে উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশের রপ্তানি ব্যাহত হবে। এসব শুল্কের মোকাবিলা বাংলাদেশকে করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হবে। এই উত্তরণে ফলে বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কিছু কিছু সুযোগ হারাবে, যেমন স্বল্প বা শূন্য শুল্কে রপ্তানি সুবিধা, অনুদান সুবিধা ইত্যাদি। উন্নয়নশীল দেশ পর্যায়ে উন্নীত হলে বাংলাদেশ এসব সুবিধা পাবে না। সুতরাং উত্তরণ-পরবর্তীকালে উত্থিত বিষয়গুলোকে বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হবে। তৃতীয়ত: বিশ্বের নানা জায়গার যুদ্ধ এবং সংঘাতের প্রভাবও বাংলাদেশ অর্থনীতিতে পড়বে।
আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জটিলতাগুলো অব্যাহত থাকবে। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক জটিলতা এসব অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলবে। সেই সঙ্গে থাকবে নানা বৈশ্বিক সংকট। বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় লক্ষ্য হবে সেসব জটিলতা ও সংকট কাটিয়ে একটি বৈষম্যবিহীন মানব উন্নয়নমুখী অর্থনৈতিক পথযাত্রা।
সেলিম জাহান ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ শ ক ঋণ প রব দ ধ ন অর থ ভর ত ক আম দ র পর ম ণ ব যবস সরক র বছর র র ওপর ত করছ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানি অভিনেত্রীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
পাকিস্তানি মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর আলীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে করাচির একটি বাসায় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি হয়তো কয়েক মাস আগে মারা গেছেন। খবর ডন নিউজের
বুধবার পুলিশের ডিআইজি (দক্ষিণ) সৈয়দ আসাদ রেজা জানান, ৩২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর মরদেহ করাচির ইত্তেহাদ কমার্শিয়াল এলাকার এক বহুতল ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়। আদালতের আদেশ অনুযায়ী ফ্ল্যাটটি খালি করার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সেখানে যায়। দরজায় কড়া নাড়ার পর সাড়া না পেয়ে পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অভিনেত্রীর মরদেহ দেখতে পায়।
তিনি আরও জানান, হুমাইরার পরিবার লাহোরে থাকে। যোগাযোগ করা হলে তার বাবা লাশ নিতে রাজি হননি। বিষয়টি জানতে পেরে শোবিজ সংশ্লিষ্টরা লাশ দাফনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরিবার যদি হুমাইরার লাশ গ্রহণ না করে, তাহলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আসাদ রেজা জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জিন্নাহ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
লাহোরে জন্ম নেওয়া হুমায়রা ২০১৩ সালে মডেলিং শুরু করেন। ২০২২ সালে জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘তামাশা’-তে অংশ নিয়ে দর্শকদের নজর কাড়েন। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি নিজেকে জনজীবন থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে করাচির সেই ফ্ল্যাটে একাই বসবাস করতেন এবং ২০২৪ সালের শুরু থেকেই ভাড়া পরিশোধ বন্ধ করে দেন।