পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন। একদল স্কাউট সদস্যের কারও হাতে ট্রেনের বগির ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ লেখা প্ল্যাকার্ড, কেউবা যাত্রীদের টিকিট দেখে তাদের আসন খুঁজে দিচ্ছেন। আবার কেউ ভিড় সামাল দিয়ে যাত্রীদের উঠিয়ে দিচ্ছেন ট্রেনে। কারও কাঁধে বৃদ্ধ যাত্রীদের লাগেজ।
ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষের ট্রেনযাত্রা সহজ করতে এমন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেঞ্চুরী রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপের প্রায় ৩০ জন সদস্য। স্টেশনে যাত্রীর ভিড় সামাল দিতে স্বেচ্ছাশ্রমে এ কাজ করেছেন তারা। তাদের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পেরেছেন যাত্রীরাও।
এতে একদিকে যাত্রীরা স্টেশনে এসে ঝামেলা ছাড়াই ট্রেনে উঠে সহজে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে পেরেছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও তাদের উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ঈদের পরদিন থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে রোভার স্কাউট লিডার ও সদস্যরা এভাবে যাত্রীদের সেবা দিয়েছেন।
জানা গেছে, স্কাউট সদস্যরা নারী ও বয়স্ক যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে সহায়তা করেছেন। পাশাপাশি ফুট ওভারব্রিজ অতিক্রম করতে গিয়ে যেসব যাত্রী ব্যাগ-লাগেজ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েন, এসব নিজেরাই কাঁধে নিয়ে তাদের ট্রেনে উঠতে সহায়তা করেন। যাত্রীদের নির্দিষ্ট বগি ও সিট খুঁজে দেওয়ার পাশাপাশি বিনা টিকিটে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা, টিটিই ও টিসিদের কার্যক্রমে সহায়তা ও অনলাইনে টিকিট কাটাসহ নানান ঝক্কি তারা সামাল দিয়েছেন নিজ উদ্যোগে।
এ সময় রেলওয়ে সেঞ্চুরি স্কাউট গ্রুপের সভাপতি আবদুল্লাহ আল চিশতী, সহসভাপতি ফাতেমা রোকেয়া বাসার, ইছামতী মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন গ্রুপ সম্পাদক এস এম আল-আমিন। স্কাউট ও রোভার স্কাউটদের নেতৃত্ব দেন মুসাভীর আল আরাফ, মো.

মাহির শাহরিয়ার, রাতুল হাসান জিয়াদ বিন জিহাদ প্রমুখ।
ইছামতী মুক্ত স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক সোহেল আহমেদ বলেন, প্রতিবছর ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতি পথে রেলস্টেশনে মানুষের ভোগান্তি দেখে মনে হয়েছে, তাদের কীভাবে রক্ষা করা যায়। সে চিন্তা থেকেই ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদী দেশের অন্যতম বড় জংশন। প্রতিদিন প্রায় ৪০টি ট্রেন বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এসব রুটের হাজারো যাত্রীর দুর্ভোগ লাঘবে ভূমিকা রাখতে পেরে তারা খুশি।
স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মনিরুজ্জামান স্কাউট সদস্যদের এমন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা নিজেদের উদ্যোগে রেলকর্মী ও যাত্রীদের পাশে থেকে সহায়তা করেছেন।
সিনিয়র টিটিই আবদুল আলিম বিশ্বাস মিঠু বলেন, ঈদের পর কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের সামাল দিতে রেল কর্মচারীদের হিমশিম খেতে হয়। এমন সময় স্কাউট সদস্যরা সহায়তা করায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হয়েছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ ত র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ