ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে ইসরায়েল
Published: 10th, April 2025 GMT
ইসরায়েল ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইনের এমন কোনো বিধান নেই, যা লঙ্ঘন করছে না। ফলে ‘মানবাধিকার’ বলে যে একটি শব্দ বিশ্বে আছে, তার প্রতি মানুষ আর বিশ্বাস করছে না।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যা বন্ধে বৈশ্বিক কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিএনপিপন্থি সাদা দলের মানববন্ধনে ঢাবি শিক্ষকরা এসব কথা বলেন। সমাবেশে তারা ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানান এবং দ্রুত এ নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানান।
সাদা দলের আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, গাজায় ইসরায়েল বোমা মারছে। শত শত নাগরিককে হত্যা করছে। সারাবিশ্বের সভ্য দেশগুলোকে এক হয়ে এর প্রতিবাদ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যেভাবে শিশু-নারীদের হত্যা করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদ জানানোর ভাষা নেই। জাতিগত নিধনের যে পরিকল্পনা করছে, তার প্রতিবাদ জানাই। ইসরায়েল যতকিছুই করুক, তারা ফিলিস্তিনকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। তারা জেগে থাকবে।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর শক্তিশালী দেশগুলো এক হয়ে তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কারণ, তাদের পলিসি মেকিংয়ে ইসরায়েলের শক্তিশালী লবি রয়েছে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুস সালাম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাসরীন সুলতানা, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইকরামুল হক প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার ঢাকায় জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কমিটি
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের দুই সদস্য বাংলাদেশে এসেছেন। রোববার চার দিনের সফরে গ্রুপের ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা ও আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ ঢাকা পৌঁছান।
প্রায় এক যুগ ধরে গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানিয়ে আসছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স অর ইনভলেন্টারি ডিসাপিয়ারেন্স– ডব্লিউজিইআইডি। ২০১৩ সালের ১২ মার্চ সফরের জন্য প্রথম চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এর পর একাধিকবার অনুরোধ করলেও রাখা হয়নি। ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল শেষবার সফরের অনুমতি চেয়েছিল ডব্লিউজিইআইডি। কিন্তু দেয়নি তৎকালীন সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনার সরকারের। এর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানালে সাড়া দেয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এলো গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ। ১৮ জুন প্রতিনিধি দলের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, সফরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র সচিব, গুম কমিশনের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধি দল। এ ছাড়া নীতিবিষয়ক আলোচনায় অংশ নেবেন দুই সদস্য।
ঢাকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, প্রতিনিধি দল এবার গুমের ঘটনা তদন্ত করবে না। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তার ভিত্তিতে সুপারিশ করবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গুমের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আন্তর্জাতিক ‘গুম প্রতিরোধ দিবস’-এর এক দিন আগে ৭৬তম দেশ হিসেবে চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গুমবিরোধী সনদ গৃহীত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে সনদে যুক্ত হওয়া নিয়ে বরাবর অনাগ্রহ দেখিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এ সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে। অর্থাৎ তারা অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। আর ভারত শুধু সই করেছে।
ডব্লিউজিইআইডির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও ৭০টি গুমের ঘটনা অনিষ্পত্তি রয়েছে। জাতিসংঘ মোট ৮৮ ব্যক্তির গুমের বিষয়ে প্রকৃত অবস্থা জানতে চেয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন আটক ও ১০ ব্যক্তি মুক্ত অবস্থায় আছেন।